পূর্ব বর্ধমান – এক বিরল ও হৃদয়বিদারক ঘটনার সাক্ষী রইল কাটোয়া মহকুমা হাসপাতাল। মঙ্গলবার রাতে করজগ্রামের বাসিন্দা এক প্রসূতি মহিলার গর্ভে জন্ম নিল ‘মারমেড বেবি’—একটি অতি দুর্লভ শিশুকন্যা, যার শরীরের নিম্নাংশ দেখতে ছিল একেবারে মাছের লেজের মতো। কিন্তু চিকিৎসকদের আপ্রাণ চেষ্টার পরও নবজাতিকাকে বাঁচানো গেল না। ভোরবেলায় মৃত্যু হয় এই বিরল শিশুটির।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় প্রসব যন্ত্রণা নিয়ে কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি হন বছর ত্রিশের ওই মহিলা। রাত একটা নাগাদ অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে কন্যাসন্তানের জন্ম দেন তিনি। অস্ত্রোপচার করেন হাসপাতালের স্ত্রী ও প্রসূতি রোগ বিশেষজ্ঞ ডাঃ রবীন্দ্রনাথ মণ্ডল।
জন্মের পরই দেখা যায়, নবজাতিকার শরীরের উপরের অংশ স্বাভাবিক হলেও কোমরের নিচ থেকে দুই পা জোড়া লেগে আছে—একটি মাছের লেজের মতো আকৃতি ধারণ করেছে। এই বিরল শারীরিক গঠনের শিশুকে চিকিৎসা বিজ্ঞানে বলা হয় সিরেনোমেলিয়া, সাধারণভাবে পরিচিত ‘মারমেড বেবি’ নামে।
চিকিৎসক ডাঃ মণ্ডল জানান, “আমার ৩৩ বছরের চিকিৎসক জীবনে প্রথমবার এরকম একটি শিশুর জন্ম দেখলাম। এই ধরনের শিশুরা সাধারণত বাঁচে না। তবুও আমরা চেষ্টা করেছিলাম। তবে খুব দুঃখের সঙ্গে জানাচ্ছি, শিশুটি ভোরের দিকে মারা যায়।” তিনি আরও বলেন, “এই ধরনের জন্ম খুবই বিরল এবং বর্তমানে কাটোয়া তো বটেই, সমগ্র জেলার মধ্যেও এ ধরনের ঘটনা আগে কখনও শোনা যায়নি।”
চিকিৎসকদের মতে, ‘মারমেড বেবি’ সাধারণত কন্যা শিশু হয় এবং বেশিক্ষণ জীবিত থাকে না। তবে এই ঘটনায় সদ্যপ্রসূতা মা সুস্থ রয়েছেন এবং তিনি চিকিৎসাধীন রয়েছেন বলে হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে।
