মালদহের ২৫০বছরের রায় বাড়ির কার্তিক পুজোয় মাতে গোটা জেলা। মালদা জেলার ইংরেজবাজারের রায় বাড়ির প্রায় ২৫০ বছরের পুরোনো কার্তিক পুজোয় মাতে গোটা জেলা। মালদা শহরের ফুলবাড়ির এই কার্তিক অবশ্য বাঁকে বিহারি নামেও পরিচিত।
এখানে কার্তিক পুজোকে ঘিরে জেলা বাসীর আবেগ-উত্তেজনা অনেক রয়েছে।এবারে শনিবার সন্ধ্যা থেকেই শুরু হচ্ছে এই পুজো। বিগত দুই বছরে করোনার কারণে পুজোয় তেমন জনসমাগম লক্ষ্য করা যায়নি। তবে এবারে করোনার প্রকোপ না থাকার কারণে মানুষের ঢল নামবে বলে আশা সাহাবাড়ির বর্তমান প্রজন্মের।বর্তমানে পার্থপ্রতিম রায়ের হাতে পুজোর দায়িত্ব।
জানা গিয়েছে, বাংলায় ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির সময়ে তুঁত-রেশম শিল্পের কেন্দ্র হিসেবে মালদার খ্যাতি ছিল।সেই সময়ই বেনারস থেকে মালদহে ব্যবসার উদ্দেশ্যে আসেন মনমোহন সাহার পূর্বপুরুষরা । মনমোহন সাহা, যাঁর বাড়ির কার্তিক পুজোই ‘সাহা বাড়ির কার্তিক পুজো’ নামে পরিচিত। তবে এই পুজোয় কার্তিক ঠাকুরের সাথে হাজির থাকেন আরো ২৩ জন দেবদেবী। মূল কার্তিক ঠাকুরের বাঁদিকে থাকেন ভগবতী, অন্নপূর্ণা এবং সরস্বতী।
আর ডানদিকে মহালক্ষ্মী, লক্ষ্মী ও সাবিত্রীর অবস্থান লক্ষ্য করা যায়। তাঁদের মাঝে বিরাজ করেন আরো ৭ দেবদেবী। ডানদিকে থেকে তাঁরা হলেন বশিষ্ঠ, গণেশ, জয়া, মা গঙ্গা, বিজয়া, শ্রীকৃষ্ণ এবং বাল্মিকী। তবে এক্ষেত্রে দেব-দেবীর মূর্তির পাশাপাশি লক্ষ্য করা যায় পরীর অবস্থানও। এঁরা বাদেও আরো নয় জন দেবদেবীও উপস্থিত থাকেন কার্তিক ঠাকুরের সঙ্গে। ওপরে বাঁদিক থেকে দেখা যায় লব, লক্ষ্মণ, রাম, ব্রহ্মা, বিষ্ণু, মহেশ্বর, ভরত, শত্রুঘ্ন ও কুশের মূর্তি।
এই সারির শুরু এবং শেষে একটি সিংহ ও একটি সিংহীর উপস্থিতি চোখে পড়ে। তবে এতো দেবদেবীর উপস্থিতির কারণটিও বেশ উল্লেখযোগ্য। সাহা পরিবারের সর্বজেষ্ঠ্য পুত্রের যখনই একজন পুত্র সন্তান জন্ম লাভ করত তখনই একজন করে দেবতা যুক্ত করা হত মূল কার্তিক ঠাকুরের সাথে। তবে পরবর্তীকালে এই প্রথা বন্ধ করে দেওয়া হয়।
আরও পড়ুন – বাংলার নতুন রাজ্যপাল হল প্রাক্তন আইএএস সিভি আনন্দ বোস
এত দেবদেবীর মাঝে কার্তিক ঠাকুরের প্রতিমাটিই সবচেয়ে বড়ো। ২০ ফুট উচ্চতার ডাকের সাজে এখানে সুসজ্জিত থাকেন কার্তিক। এই পুজোকে কেন্দ্র করে মেলাও বসে। সাত দিন ধরে এই মেলা চলে। এর বিস্তৃতি ইংরেজবাজারের পাকুড়তলা থেকে ৪২০ মোড় পর্যন্ত। মেলায় দর্শনার্থীদের সমাগম দেখলেই বোঝা যায় এই পুজোকে ঘিরে এলাকাবাসীর উত্তেজনা। এই মেলায় বিক্রি হওয়া কাঠের আসবাবপত্রের কদর খদ্দেরের কাছে অনেক। সঙ্গে এখানকার বিশেষত্ব ভ্যাটের খই। কার্তিক পুজোকে কেন্দ্র করে মানুষের এমন এমন উৎসাহ আর কোথাও চোখে পড়ে না বললেই চলে! মালদহের ২৫০