পূর্ব বর্ধমান – কালীপুজোর আনন্দে ভরা রাতেই বিষাদের ছায়া নেমে এলো পূর্ব বর্ধমানের আউশগ্রামের তকিপুর গ্রামে। শুক্রবার রাতে কালীপুজোর মেলায় খাবার খাওয়ার পর হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন তিন পুলিশকর্মীসহ মোট সাতজন। তাঁদের মধ্যে এক দোকানির মৃত্যু হয়েছে শনিবার সকালে। মৃতের নাম নরেশ পণ্ডিত (বয়স প্রায় ৪৫), বাড়ি হাওড়ার বেলুড়ে। জানা গিয়েছে, নরেশবাবু তকিপুর কালীপুজো মেলায় ট্যাটুর দোকান দিয়েছিলেন।
শনিবার সন্ধ্যায় স্থানীয়রা তকিপুর গ্রামের একটি লাইব্রেরির পাশে অচৈতন্য অবস্থায় তাঁকে পড়ে থাকতে দেখেন। খবর পেয়ে পুলিশ এসে দেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায়। হঠাৎ এই মৃত্যুর ঘটনায় গ্রামজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে চাঞ্চল্য ও নানা গুঞ্জন।
প্রতি বছর যমদ্বিতীয়ার পরদিন তকিপুর বড়কালী মায়ের বিসর্জন উপলক্ষে অনুষ্ঠিত হয় বিশাল মেলা। ভিড় সামলাতে সেই সময় মোতায়েন থাকে পুলিশ বাহিনী, আর পুজো কমিটির পক্ষ থেকে ডিউটিতে থাকা পুলিশকর্মীদের খাবারের ব্যবস্থাও করা হয়।
অভিযোগ উঠেছে, স্থানীয় প্রবীর মিত্র নামে এক ব্যক্তির বাড়িতে রান্না করা খাবার খাওয়ার পরই অসুস্থ হয়ে পড়েন দোকানদার ও পুলিশকর্মীরা। একে একে সবার মধ্যে দেখা দেয় বমি, মাথা ঘোরা, পেটব্যথা ও জ্বরের উপসর্গ। তবে গৃহকর্ত্রী রেখা মিত্রের দাবি, “আমাদের বাড়ির খাবার খেয়ে কেউ অসুস্থ হয়নি। আর যে মারা গিয়েছে, সে তো আমাদের বাড়িতে খায়নি।”
অন্যদিকে মেলায় অংশগ্রহণকারী অন্যান্য দোকানদারদের দাবি, “সবাই ওই মিত্র বাড়ির রান্না খেয়েছিল, আর তার পর থেকেই অসুস্থ হয়ে পড়েছেন অনেকে।”
বর্তমানে আউশগ্রাম থানার পুলিশ গোটা ঘটনার তদন্তে নেমেছে। প্রাথমিকভাবে খাদ্যে বিষক্রিয়ার আশঙ্কা থাকলেও, ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে এলেই প্রকৃত কারণ স্পষ্ট হবে বলে মনে করছে তদন্তকারী সংস্থা। উৎসবের আবহে এমন মর্মান্তিক ঘটনায় শোক ও আতঙ্কে ভুগছে গোটা তকিপুর গ্রাম।




















