দক্ষিন 24 পরগণা – ঝড়ঝাপটা কিংবা বন কেটে সাফ করা, সবকিছুরই বিরূপো প্রভাব পড়ে সুন্দরবনের বাদাবনে। এখানকার পরিবেশ রক্ষায় বিশেষজ্ঞরা নানা পরামর্শ দেন। বাস্তবে সেগুলি সব সময়ে মানা হয় না। বর্তমানে দূষণ সুন্দরবনের একটি জ্বলন্ত সমস্যা। যথেচ্ছ প্লাস্টিক ব্যবহারের সমস্যা তো আছেই।তারপরে এখন ইঞ্জিনচালিত নৌকার ধোঁয়া সুন্দরবনের আনাচে-কানাচে বিষ ছড়াচ্ছে। মাছ ও কাঁকড়া ধরার জন্য মৎস্যজীবীরা যেসব ছোট নৌকা ব্যবহার করেন, তাতে কাটা তেল ব্যবহার করে নদীর এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে ঘোরেন। নৌকা চলাচলের সময় কালো ধোঁয়ায় ঢেকে যায় চারপাশ। এই ধোঁয়ার তেজ এতটাই যে, চোখ-মুখ জ্বালা করতে থাকে, নিঃশ্বাস নিতে সমস্যা হয়।বিশেষজ্ঞদের মতে, এই প্রবণতা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। কারণ এতে শুধু সুন্দরবনের জীবকুলেরই ক্ষতি হচ্ছে না, বিপন্ন হচ্ছে পরিবেশও। তাঁরা মনে করেন, প্রশাসনের উচিত অবিলম্বে কাটা তেল ব্যবহার নিষিদ্ধ করা।
মৎস্যজীবীরা জানাচ্ছেন, জ্বালানির দাম অতিরিক্ত হয়ে যাওয়ায় তা আর কিনতে পারছেন না তাঁরা। পরিবর্তে কেরোসিনের সঙ্গে অন্য জ্বালানি মিশিয়ে নৌকো চালাচ্ছেন। এই তেল ব্যবহার করেই মৎস্যজীবীরা দিনের পর দিন নদী ও খাঁড়িতে ঘুরছেন। এতে চারপাশ যেমন ধোঁয়ায় ভরে যাচ্ছে, অপরদিকে ইঞ্জিন থেকে তেলের কিছু অংশ নদীতে গিয়েও মিশছে। এতে মাছ ও অন্যান্য জলজ প্রাণীর মারাত্মক ক্ষতি হচ্ছে বলেই দাবি গবেষকদের। প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের জীববিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সুমিত মণ্ডল বলেন, এই কাটা তেল ব্যবহারের ফলে নদীর জল আরও অম্লযুক্ত (অ্যাসিডিক) হয়ে যাওয়ার প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে। তা হলে শামুকের মত যেসব খোলসযুক্ত প্রাণী রয়েছে, তাদের মধ্যে বড় প্রভাব পড়তে পারে। ভবিষ্যতে এদের খোলস তৈরিতে সমস্যা দেখা দিতে পারে।
