২০২৩ সালে রেলযোগাযোগের আওতায় আসবে জম্মু ও কাশ্মীর। জম্মু ও কাশ্মীরের সঙ্গে দেশের বাকি অংশের রেলযোগাযোগ স্থাপনের লক্ষ্যে উচ্চাভিলাষী ‘কাশ্মীর রেলওয়ে প্রকল্প’ বাস্তবায়ন করতে যাচ্ছে কেন্দ্রিয় সরকার। চলমান প্রকল্পটির কাজ ২০২৩ সাল নাগাদ শেষ হবে বলে সূত্রের খবর। খবরে বলা হচ্ছে, এ রেলপথ বাস্তবায়িত হলে পাল্টে যাবে ভূস্বর্গের যোগাযোগ ব্যবস্থা, দ্রুত বাড়বে শিল্পায়ন ও কর্মসংস্থান। জম্মু ও কাশ্মীরের চেনাব নদের ওপরে ধনুকের মতো বাঁকানো একটি রেলসেতুর কাজ প্রায় শেষ।
যা হতে যাচ্ছে পৃথিবীর উচ্চতম রেলসেতু। উচ্চতায় যা হার মানাবে আইফেল টাওয়ারকেও। এ সেতু কাশ্মীরকে দেশের বাকি অংশের সঙ্গে যুক্ত করবে। এক হাজার ২৫০ কোটি টাকা খরচে তৈরি হওয়া চেনাব নদ থেকে এ সেতুর উচ্চতা ৩৫৯ মিটার। ২০১৭ সালের নভেম্বর থেকে শুরু হয়েছিল সেতুর মূল ধনুকাকৃতি কাঠামোটির নির্মাণকাজ। কিন্তু, করোনা মহামারির ধাক্কায় সে নির্মাণকাজ খানিকটা ব্যাহত হয়। কর্তৃপক্ষের দাবি, রিখটার স্কেলে ৮ পর্যন্ত ভূমিকম্পের তীব্রতা সহ্য করতে পারবে এ সেতু।
আর ও পড়ুন ভারত-পাক ম্যাচে কাকে সার্পোট করেন? কী উত্তর দিলেন সানিয়া?
অত্যন্ত শক্তিশালী বিস্ফোরকের আঘাতও অনায়াসে সয়ে নিতে পারবে এটি। যা কাশ্মীরের মতো স্পর্শকাতর এলাকার মানুষদের অনেকটাই স্বস্তি দেবে। ভারতীয় রেলের এ প্রকল্প শুরু হয় ২০০৪ সালে। তবে, বছর পাঁচেকের মধ্যেই কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। যাত্রীদের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হতে পারে—এমন আশঙ্কায় এগোতে চায়নি তৎকালীন কংগ্রেস সরকার। কিন্তু, বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আমলে নতুন করে শুরু হয় সেতুর নির্মাণ। এর আগে, কাশ্মীরকে সরাসরি রেলযোগাযোগের আওতায় আনতে প্রথম ১৮৮৯ সালে পরিকল্পনা করে ব্রিটিশরা। কিন্তু, তাদের সে পরিকল্পনা থাকে কাগজে-কলমেই। এর শতবছর পর সে প্রকল্পে হাত দেয় ভারত সরকার। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে রেল মন্ত্রণালয়। আগামী ২০২৩ সালের মধ্যে কাশ্মীর রেলওয়ে প্রকল্পের কাজ শেষ হবে বলে জানিয়েছে তারা।
পাহাড় ও গিরিখাতের মধ্য দিয়ে নির্মিত এ প্রকল্পটিই দেশের সর্বোচ্চ উচ্চতায় নির্মিত রেলওয়ে প্রকল্প, যার ব্যাপ্তি ৩৪৫ কিলোমিটার। শুধু তাই নয়, ওই অঞ্চলটি অতিরিক্ত ভূমিকম্পপ্রবণও। এত চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। এ প্রকল্পে সংশ্লিষ্ট উধমাপুর-কাটরা (২৫ কিলোমিটার), বানিহাল-কাজিগুন্দ (১৮ কিলোমিটার) এবং কাজিগুন্দ-বারামুল্লা (১১৮ কিলোমিটার) সেকশনকে সেতুর সঙ্গে সংযুক্ত করার কাজ এরই মধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। অবশিষ্ট ১১১ কিলোমিটারের কাটরা-বানিহাল সেকশনের কাজ চলমান রয়েছে।