স্বাস্থ্য – শহর হোক কিংবা গ্রাম— রাস্তায় কিংবা বাড়ির আশেপাশে পোষ্য ও বেওয়ারিশ কুকুর-বিড়ালের কামড়ের ঘটনা আজকাল নিত্যদিনের ব্যাপার। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্যি, অনেকেই এমন কামড়কে তেমন গুরুত্ব দেন না। একটু জল দিয়ে ধুয়ে ফেলা বা ঘরোয়া ওষুধ লাগিয়ে ফেলে রাখেন। কিন্তু জানেন কি, এই অবহেলাই একসময় প্রাণঘাতী রোগ রেবিজে পরিণত হতে পারে?
বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, কুকুর বা বিড়ালের কামড়ে রেবিজ ভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকি থাকে। একবার রেবিজের লক্ষণ দেখা দিলে সেই রোগের কোনও চিকিৎসা নেই। মৃত্যু অবধারিত। অথচ সময়মতো প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নিলে এই বিপদ এড়ানো একেবারে সম্ভব।
কুকুর বা বিড়াল কামড়ালে কী করবেন?
প্রথমেই কামড়ের জায়গা প্রচুর জল ও সাবান দিয়ে ১০–১৫ মিনিট ভালোভাবে ধুয়ে ফেলতে হবে।,তারপর দ্রুত নিকটবর্তী সরকারি বা বেসরকারি হাসপাতালে গিয়ে অ্যান্টি-রেবিজ ভ্যাকসিন নিতে হবে,কামড়ের ধরন অনুযায়ী প্রয়োজনে ইমিউনোগ্লোবুলিন ইনজেকশন নিতে হতে পারে।, চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া কখনও নিজের মতো করে ওষুধ ব্যবহার করা উচিত নয়।
সাধারণত তিন ধরনের কামড়কে গুরুত্ব দেওয়া হয়:
1. Type I: কুকুর ঘেঁষে যাওয়া, চাটলে — সাধারণত বিপদের আশঙ্কা কম
2. Type II: হালকা আঁচড় বা কামড় (রক্ত না পড়লে) — সতর্কতা প্রয়োজন
3. Type III: গভীর কামড়, রক্তপাত — এটি বিপজ্জনক, অবিলম্বে চিকিৎসা জরুরি
কী হতে পারে অবহেলার ফলে?
অনেকেই ভাবেন, “ছোট কামড়, কিছু হবে না।” কিন্তু ঠিক এই মনোভাবই বিপদ ডেকে আনে। একবার রেবিজে আক্রান্ত হলে প্রথমে মাথাব্যথা, জ্বর, শরীরে অস্বস্তি শুরু হয়। তারপর আসে ভয়াবহ স্নায়বিক লক্ষণ— জল দেখলেই গা গুলিয়ে ওঠা, খিঁচুনি, অবসাদ, অবশেষে মৃত্যু।
পশুপ্রেম ভালো, কিন্তু সতর্কতা আরও ভালো। কামড়ানোর পর অবহেলা নয়, বরং সচেতনতা ও দ্রুত চিকিৎসাই পারে জীবন বাঁচাতে।
