হারিয়ে যেতে বসেছে বাংলার এক সময়ের জনপ্রিয় কুটীর শিল্প – হর্ণ শিল্প বা ধিষান শিল্প! সমগ্র বাংলা জুড়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে একসময়কার বিখ্যাত সব কুটির শিল্প।যদিও বর্তমানে সে গুলির অনেক টাই লুপ্ত হয়ে গেছে বাকি গুলিও বিলুপ্ত প্রায়। বাংলার পূর্ব মেদিনীপুর জেলার কোলাঘাট ব্লক ও বিখ্যাত এরকম কিছু অদ্ভুত কুটীর শিল্পের জন্য। কিন্তু,এই ব্লকের বেশ কিছু মানুষ হর্ন শিল্প বা ধিষান শিল্পের সঙ্গে যুক্ত। কিন্তু কি এই শিল্প? গরু বা মোষের শিং থেকেই ব্যবহার্য জিনিসপত্র-সহ কারুকার্যে জিনিসপত্র তৈরি করার নামই হল হর্ন শিল্প বা ধিষান শিল্প।
এই শিল্প কোলাঘাট ব্লকের কুলহান্ডা, কলাগাছিয়া, দূর্বাচটি, বৈষ্ণবচক সহ পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন গ্রামে, প্রায় প্রতিটি ঘরে ঘরে মানুষজন এই হর্ন শিল্প বা ধিষান শিল্পের সঙ্গে একসময় যুক্ত ছিল।যদিও বর্তমানে এই শিল্প প্রায় হারিয়ে যেতে বসেছে। প্রসঙ্গত,গরু বা মোষের শিং থেকে ঘর সাজানোর জন্য ফুলদানি, ছোট ছোট পাখি, বাঘ, হাতি, ঘোড়া, ময়ূর সহ বিভিন্ন কারুকার্যের জিনিসপত্র ব্যবহার করা হত।
আরও পড়ুন – করোনা পরিস্থিতিতে কি ভাবে হবে পুরীর রথযাত্রা?
এছাড়াও, নিত্য প্রয়োজনীয় ব্যবহার্য লবণদানি, কলমদানি, চিরুনি সহ নানান জিনিস পত্রও তৈরী হত। জানা গিয়েছে,একসময় কোলাঘাটের এই গরু বা মোষের শিং থেকে তৈরি জিনিসপত্রের সারা ভারতবর্ষ তথা বিদেশেও কদর ছিল বলে জানা গিয়েছে। তবে,এই শিল্প থেকে বর্তমানে রোজগার কমে গেছে অনেকটাই। ফলে নতুন প্রজন্ম এই শিল্প থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে।ধিষান শিল্পের সঙ্গে ৫০ বছরের বেশি সময় ধরে যুক্ত সন্তোষ সাউ।
তিনি জানান, এই কাজের সঙ্গে তিনি যুক্ত থেকে বহুবার রাজ্যস্তরে পুরস্কার লাভ পেয়েছেন। জানা গিয়েছে,এক সময় গরু বা মোষের শিং এর তৈরি জিনিস বিদেশে যেত। কিন্তু এখন সরকারি দু চারটে মেলা ছাড়া বিক্রির আর উপায় নেই। বর্তমানে কাঁচামালের দামও অনেক বেশি।অবশ্য এতকিছুর পরেও কোলাঘাট পঞ্চায়েত সমিতির উদ্যোগে হর্ন শিল্প বা ধিষান শিল্পকে বাঁচানোর কিছু ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে জানা গিয়েছে।