নদিয়া – কৃষ্ণনগরের ছাত্রী খুনের ঘটনায় অবশেষে পুলিশের জালে ধরা পড়ল মূল অভিযুক্ত দেশরাজ সিং। রবিবার রাতে উত্তরপ্রদেশ থেকে তাকে গ্রেফতার করেছে রাজ্য পুলিশের বিশেষ দল। জানা গিয়েছে, সোমবার ট্রানজিট রিমান্ডে তাকে কৃষ্ণনগরে নিয়ে আসা হবে। পুলিশের সূত্রে খবর, গত সোমবার কৃষ্ণনগরে বাড়িতে ঢুকে নিজের প্রেমিকাকে গুলি করে খুন করার পর উত্তরপ্রদেশে পালিয়ে গিয়েছিল দেশরাজ। প্রায় এক সপ্তাহ ধরে সে সেখানে আত্মগোপন করে ছিল। দেশরাজের খোঁজে উত্তরপ্রদেশে পাড়ি দিয়েছিল রাজ্য পুলিশের তিনটি দল। শেষ পর্যন্ত রবিবার রাতেই তার গ্রেফতারি সম্ভব হয়।
ঘটনার পর দেশরাজ সরাসরি পালিয়ে গিয়েছিল উত্তরপ্রদেশের দেউড়িয়ায় অবস্থিত নিজের পৈত্রিক বাড়িতে। সেখানে টানা সাত দিন লুকিয়ে ছিল সে। অন্যদিকে, শনিবার দেশরাজের মামা কুলদীপ সিংকে গুজরাতের জামনগর থেকে গ্রেফতার করা হয়। রবিবার তাকে কৃষ্ণনগরে নিয়ে আসা হয়েছে। পুলিশের দাবি, ঘটনার সঙ্গে দেশরাজের পরিবারেরও যোগাযোগ রয়েছে। অভিযুক্ত দেশরাজের বাবার বিরুদ্ধেও গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়েছে এবং তাঁকে ধরতে রাজস্থানের জয়সালমেরে গিয়েছেন পুলিশ আধিকারিকরা।
পুলিশের তদন্তে উঠে এসেছে, প্রেমিকাকে খুনের পর থেকে দেশরাজ তার মামা কুলদীপ সিংয়ের সঙ্গেই নিয়মিত যোগাযোগ রাখছিল। সেই সূত্র ধরেই কুলদীপকে প্রথমে হেফাজতে নিয়ে জেরা শুরু করে পুলিশ। মামাকে জিজ্ঞাসাবাদের পর দেশরাজের অবস্থান সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য হাতে আসে তদন্তকারীদের। রবিবার রাতে উত্তরপ্রদেশের দেউড়িয়া থেকেই দেশরাজকে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়। সোমবার তাকে ট্রানজিট রিমান্ডে কৃষ্ণনগরে আনা হবে এবং পরে আদালতে তোলা হবে বলে জানা গিয়েছে।
পুলিশ ইতিমধ্যেই তদন্ত শুরু করেছে, দেশরাজের হাতে আগ্নেয়াস্ত্র এল কোথা থেকে এবং এই ঘটনার সঙ্গে আর কেউ জড়িত রয়েছে কিনা। উল্লেখ্য, গত ২৫ অগস্ট কৃষ্ণনগরের বাড়িতে ঢুকে গুলি করে খুন করা হয়েছিল ইশিতা মল্লিক নামে এক তরুণীকে। এই ঘটনায় প্রাথমিকভাবে অভিযোগের আঙুল ওঠে ইশিতারই পরিচিত দেশরাজ সিংয়ের দিকে। ঘটনার পরপরই দেশরাজ গা ঢাকা দেয়। তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে, দেশরাজকে বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করেছিলেন তার মামা কুলদীপ। এই তথ্যের ভিত্তিতেই কুলদীপ সিংকে গ্রেফতার করে পুলিশ এবং পরের দিনই পুলিশের জালে ধরা পড়ে মূল অভিযুক্ত দেশরাজ।
