১০ জানুয়ারি, NRC ও CAA -এর প্রতিবাদে দেশের দিকে দিকে চলছে আন্দোলন।আর তার জেরে রাস্তায় নেমে দিনের পর দিন মিছিল করে চলেছে আন্দোলকারীরা।তবে সেই আন্দোলনেই বারেবারে উঠে আসে মানবিকতার মুখ। মনে করিয়ে দেয় সেই হংকং-এর কথা যেখানে বিক্ষোভকারীরা বিক্ষোভ ছেড়ে রাস্তা ফাঁকা করে দেয় অ্যাম্বুল্যান্স-এর জন্য।আর তার নজির ফের মেলে দিল্লির জামিয়া মিলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের আন্দোলন চলার সময় ও ব্যাঙ্গালোরে বিক্ষোভ চলাকালীন।NRC ও CAA -এর প্রতিবাদে যখন সকলে বিক্ষোভে মত্ত তখনই রাস্তায় আটকে পরে অ্যাম্বুল্যান্স, তা দেখে বিক্ষোভকারীরা রাস্তা ছেড়ে দেয়।প্রতিবাদ ও মানবিকতার সেই ছবি আমরা আগেই দেখেছি।
যেখানে ছোট থেকে বড় সকলেই আন্দোলনের মধ্যেও মনুষত্বকে বাঁচিয়ে রেখেছে এতদিন সেখানে বিজেপি সাংসদকে দেখা গেল আরেক রূপে। নদীয়ার কৃষ্ণনগরে প্রশাসনিক ভবনের সামনে একটি মঞ্চে বক্তব্য রাখছিলেন রাজ্য BJP সভাপতি দিলীপ ঘোষ। মঞ্চের সামনে হাজার লোকের ভিড়। এদিকে রাস্তা ছেড়ে দিতে, ক্রমাগত হর্ন বাজিয়ে যাচ্ছে একটি অ্যাম্বুল্যান্স। তবু কোনওভাবেই ছাড়া হল না রাস্তা। উল্টে দিলীপ ঘোষ বললেন, ‘এখান দিয়ে যেতে দেওয়া হবে না। লোকে রাস্তায় বসে আছে। ডিসটার্ব হবে। ঘুরিয়ে অন্য দিক দিয়ে যান।’ অবশেষে জানা গেল, সেই অ্যাম্বুল্যান্সে করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল এক গর্ভবতী মহিলাকে। সেই কারণে এবার বিজেপির রাজ্য সভাপতির বিরুদ্ধে কৃষ্ণনগর কোতয়ালি থানায় দায়ের হল অভিযোগ।জানা গিয়েছে, অ্যাম্বুল্যান্স যখন ঘুরে চলে যাচ্ছে, তখনও দিলীপ মঞ্চ থেকে দাবি করতে থাকেন, তাঁর সভায় উৎপাত করার জন্যই পরিকল্পনা করে অ্যাম্বুল্যান্সটি পাঠানো হয়েছিল। বিষয়টি ধামাচাপা দিতে প্রথমে বিজেপি নেতারা দাবি করছিলেন, অ্যাম্বুল্যান্সে কোনও রোগী ছিল না বলে ঘুরিয়ে দেওয়া হয়েছিল।
এরপরই প্রকাশ্যে এল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়-এর গতকালের ছবি।যেখানে দেখা গেল, CAA ও NRC-র প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার মধ্যমগ্রাম থেকে বারাসতে পদযাত্রা করছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। হঠাৎ পদযাত্রার সামনে একটি অ্যাম্বুল্যান্স এসে আটকে পড়লে তৎপরতার সঙ্গে মমতা নিজে রাস্তা করে দেয় অ্যাম্বুল্যান্সটিকে যাওয়ার জন্য।তারপরই দিলীপ ও মমতা প্রসঙ্গে চর্চা শুরু করে সকলে।অনেকেই বলেন, “কেবল নীতি-আদর্শেই নয়, মানুষ হিসেবেও দু’জনের মধ্যে আকাশ-পাতাল ফারাক”৷
একে তো এই অবাঞ্ছিত ঘটনা ঘটেছে, তার উপরে সংবাদমাধ্যমের জেরার মুখে পড়ে দিলীপ যে ভাবে প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন তাতে জেলার নেতাদের অস্বস্তি আরও বেড়েছে।অ্যাম্বুল্যান্সের পথ আটকে চরম বিতর্কে এখন দিলীপ ঘোষ।অ্যাম্বুল্যান্সের মতো জরুরি পরিষেবাকে একজন রাজনৈতিক দলের নেতা তথা সাংসদ কীভাবে উপেক্ষা করলেন, সে নিয়ে সরব হয়েছে বিভিন্ন মহল। যদিও এখনও এ প্রসঙ্গে দিলীপের কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি।