দেশে করোনা সংক্রমণ দৈনিক ১ লক্ষ পার করলো, বাড়লো অ্যাক্টিভ কেসের সংখ্যা । দেশ জুড়ে বেড়ে চলেছে করোনা সংক্রমণ। দিন দশেক আগেও যেখানে দৈনিক সংক্রমণ ৭ হাজারের আশেপাশে ছিল, সেখানে শুক্রবার ৭ মাস পর প্রথমবার সংক্রমণ ১ লক্ষ পেরোল। শুধু তাই নয়, একদিনে দেশে অ্যাকটিভ কেস বেড়েছে প্রায় ৮৫ হাজার। হু হু করে বাড়ছে পজিটিভিটি রেট। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রকের পরিসংখ্যান বলছে, গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে করোনা আক্রান্ত ১ লক্ষ ১৭ হাজার ১০০ জন। যা আগের দিনের থেকে প্রায় ২৯ শতাংশ বেশি। পজিটিভিটি রেট বেড়ে হয়েছে ৭.৭৪ শতাংশ।
শুধু মুম্বইয়ে আক্রান্ত ২০ হাজারের বেশি। গোটা মহারাষ্ট্রে আক্রান্তের সংখ্যা ৩৬ হাজার। এখনও পর্যন্ত দেশে মোট ওমিক্রন আক্রান্তের হদিশ মিলেছে ৩ হাজার ৭ জন। এদের মধ্যে সুস্থ হয়েছেন ১ হাজার ৯৯৯ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় মারা গেছেন ৩০২ জন। গতকালের থেকে এই সংখ্যাটা একটু কম। এখনও পর্যন্ত করোনায় দেশে মোট মৃতের সংখ্যা ৪ লক্ষ ৮৩ হাজার ১৭৮ জন।
বর্তমানে দেশে করোনায় চিকিৎসাধীন রোগী ৩ লক্ষ ৭১ হাজার ৩৬৩ জন। যা আগের দিনের থেকে প্রায় ৮৫ হাজার বেশি। এখনও পর্যন্ত দেশে ৩ কোটি ৪৩ লক্ষ ৭১ হাজার ৮৪৫ জন করোনা মুক্ত হয়েছেন। যার মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনামুক্ত হয়েছেন ৩০ হাজার ৮৩৬ জন। গত ২৪ ঘন্টায় টিকা পেয়েছেন প্রায় ৯৪ লক্ষ মানুষ।
এদিকে রাজ্যে ক্রমেই বাড়ছে সংক্রমণ। শীর্ষে রয়েছে কলকাতা। পাহাড়েও ধীরে ধীরে বাড়ছিল আক্রান্তের সংখ্যা। এর মধ্যেই উদ্বেগ বাড়াল পর্যটকরা। রাজ্যের স্বাস্থ্য দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, সাত পর্যটক সেখানে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। এঁদের মধ্যে দু’জন ব্রিটেন থেকে এসেছেন। বহু বছর ধরে ব্রিটেনে রয়েছেন তাঁরা। বাকিদের মধ্যে এক জন কলকাতার, বাকি চার জন বনগাঁর আশপাশে থাকেন। বছরের শেষে হাজার হাজার পর্যটক দার্জিলিংয়ে ভিড় করেছেন। বড়দিনের সময় থেকেই চলছে উৎসব, অনুষ্ঠান। গত সোম এবং মঙ্গলবার ১২০ জনের মধ্যে অসুস্থতা ধরা পড়ে। সন্দেহ হওয়ায় তাঁদের কোভিড পরীক্ষা করানো হয়। ১৬ জনের রিপোর্ট পজিটিভ এসেছে। এঁদের মধ্যে সাত জনই পর্যটক। এক জন আবার এক জন জেলা প্রশাসনের অতিরিক্ত জেলাশাসক পদমর্যাদার আধিকারিকও।
আর ও পড়ুন বিদেশ থেকে অনুদান সংগ্রহ করতে পারবে না রামকৃষ্ণ মিশন, তিরুপতি এবং শিরটি মন্দির কর্তৃপক্ষ
সকলের ওপরই নজর রাখা হয়েছে। আক্রান্তদের সংস্পর্শে কারা এসেছেন, সেই খোঁজ চলছে। ওমিক্রনের প্রভাবেই এই সংক্রমণ নাকি, জানতে নমুনার জিনোম পরীক্ষা করা হচ্ছে। বৃহস্পতিবার দার্জিলিং সদরে আক্রান্ত হয়েছেন ২১ জন। করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের সময় এই দার্জিলিংয়েই দারুণভাবে সংক্রমণ বেড়েছিল। মৃত্যুর সংখ্যাও বাকি অনেক জেলার থেকে বেশি ছিল। অন্য জেলার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এলেও দার্জিলিংয়ে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে আসে অনেক পরে। বিশেষজ্ঞরা মনে করেছিলেন, পর্যটকদের কারণেই পাহাড়ে সংক্রমণ বেড়েছিল। আর সেখানে চিকিৎসা পরিকাঠামো ততটা উন্নত না হওয়ায় মৃত্যুর হারও বেশি ছিল। এবার তাই আগেভাগে সতর্ক থাকতে চায় প্রশাসন।