শিলিগুড়ির মা ক্যান্টিনে ব্যাপক সাড়া। টার্গেট ছাপিয়ে প্রতি মাসে চাহিদা বৃদ্ধি শিলিগুড়ি শহরে। কয়েক মাসে শহরের দুটি মা ক্যান্টিন থেকে এক লক্ষ মানুষকে ৫টাকায় ভরপেট সুষম খাবার প্রদান। শিলিগুড়ি পুরনিগম তৃনমূল প্রশাসনিক বোর্ড পরিচালনার দায়িত্ব নিয়েই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জনমুখী প্রকল্প মা ক্যান্টিনের আওতায় শিলিগুড়ি শহরে কয়েক হাজার মানুষের জনআহারের পরিকল্পনা নিয়ে এগোন।
এতে চাল সরকারের তরফে প্রদান করা হয়। এছাড়া রাজ্য খাতে থেকে পাঁচ টাকা ও পুরনিগম নিজস্ব খাতের থেকে প্লেট প্রতি পাঁচ টাকা ধ্যার্য্য রয়েছে। বাকি ৫টাকা দেবে উপভোক্তা। শিলিগুড়ি শহরের নিত্যদিন কর্মসূত্র কয়েক হাজার মানুষের আনাগোনা। তাই শহরের ব্যস্ততম এলাকাগুলিতে রাজ্য সরকারের মা প্রকল্পের আওতায় ৫টাকায় ভরপেট ভাত ডাল ডিম সহযোগে সুষম আহার চালুর পর থেকেই ব্যাপক সাড়া ফেলেছে তা শহরে।
এরমধ্যে প্রতিমাসে তৃনমূল প্রশাসক বোর্ডের হাতে চালু শহরের নিউ জলপাইগুড়ি মা ক্যান্টিন থেকে সর্বাধিক মানুষকে ভরপেট খাবার প্রদান করা হচ্ছে। শ্রমজীবী মেহনতি মানুষের কথা মাথায় রেখেই এই দুটি ক্যান্টিন এনজেপি স্টেশন চত্ত্বর ও শিলিগুড়ি জংশন ও বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন এলাকায় চালু করা হয়। নিত্যদিন এই দুই এলাকায় ট্রেন যাত্রী থেকে শুরু করে মালবহনকারী, কুলি, টোটো, অটো ট্রাক চালক সমেত একটা বিশাল সংখ্যক মানুষ রয়েছেন।
দুটি ক্যান্টিনে মাসিক ১০হাজারেরও বেশি মানুষ পাঁচ টাকার বিনিময়ে খাবার খাচ্ছেন। দুপুর সময়ে চালু থাকছে এই ক্যান্টিন।শিলিগুড়ি পুর এলাকার ২০০জন স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলারা প্রকল্পের আওতায় ক্যান্টিনের রান্না থেকে কোটাবাটা, পরিবেশনের কাজের দায়িত্বে থাকায় তাদের অর্থসংস্থান মিলছে। পূর্ব বাম বোর্ডের ষড়যন্ত্র ও চূড়ান্ত ব্যর্থতার জেরে ক্যান্টিনের স্থান নির্ধারনেই গলদ রাখা হয়। যার জেরে বর্তমানে প্রায় বন্ধ হয়ে গিয়েছে ক্যান্টিনটি।
ক্যান্টিন পরিচালনায় চূড়ান্ত অবহেলার কারনে বছরের শুরুতেই এই প্রকল্প এর আওতায় একটি ক্যান্টিন চালু হলেও তা প্রসার পায়নি। ২০২১এর ফেব্রুয়ারিতে রাজ্যের এই প্রকল্প এর আওতায় একটি মা ক্যান্টিন চালু হয়। তবে প্রাক্তন মেয়র অশোক বাবু রাজ্যের প্রকল্পকে খাটো করতে জনবহুল এলাকা ছেড়ে মানুষের আনাগোনা নেই এমন স্থানে ক্যান্টিন চালু করে বসেন।
প্রায় ১০মাসে ক্যান্টিনের গড় গিয়ে ঠেকে ৬০০-৮০০তে। সেখানে শিলিগুড়ি পুর নিগমের তৃনমূলের প্রশাসনিক বোর্ড কয়েক মাস আগে চালু করা দুটি ক্যানটিন থেকে ইতিমধ্যেই প্রায় ৮৫হাজার প্লেট ভরপেট খাবার প্রদান করা হয়েছে। শিলিগুড়ি পুরনিগমের প্রশাসনিক বোর্ডের সদস্য রঞ্জন সরকার জানান এনজেপি স্টেশনের ট্রাক চালক থেকে কুলি, ট্যাক্সী চালক, আইওসিতে তেল ট্যাংকারের চালক-খালাসী এসব মেহনতি মানুষদের ভরপেট সুষম আহার তুলে দেওয়ার প্রত্যয় নিয়েই কাজ শুরু হয়। রাজ্য সরকারের উদ্দেশ্য প্রতিটি ব্যক্তির যাতে সুষম আহার মেলে।জংশন এলাকার কাঁকরভিটা বাসস্ট্যান্ডের অপর মা ক্যান্টিনটি থেকেও মাসে ১০হাজার মানুষকে খাবার প্রদান করা হচ্ছে। দিনদিন চাহিদা আরও বাড়ছে।
আর ও পড়ুন গোয়া থেকে গেরুয়া শিবিরের কড়া বিরোধিতায় সরব হলেন মমতা
কয়েক মাসের মধ্যেই ব্যাপক হারে মানুষের ভিড় জমেছে। এমনকি ট্রেনযাত্রিরাও পাঁচ টাকার সুষম আহার নিয়ে ছুটছেন গন্তব্যে। এনজেপি স্টেশন চত্বরের মা ক্যান্টিনের বয়স সাত মাস। এই সময়সীমায় ক্যান্টিন থেকে ৫৪৮৬২ জন মানুষকে খাবার গ্রহণ করেছে। শিলিগুড়ি জংশনে সংলগ্ন কাঁকরভিটা বাসস্ট্যান্ডের তিনমাসে ২৪৩০১প্লেট খাবার সরবরাহ করেছেন স্বনির্ভর গোষ্টির মহিলারা। আর সেই হিসেবের উল্টো অবস্থানে বামেদের অকর্মণ্যতার চিত্র জলের মতো সাফ হয়ে উঠছে।
বিগত এক বছর ধরে প্রায় শূন্য ফলাফল তাদের পরিকল্পনামাফিক করা পুরনিগমের রানা বস্তির ক্যান্টিনটির। মোট একবছরে পুরনিগমের ১৮নম্বর ওয়ার্ডের এই ক্যান্টিন থেকে মাত্র ৬৭৬২জন খাবার গ্রহন করেছে। প্রশাসনিক বোর্ডের সদস্য রঞ্জন বাবু বলেন শহরের অন্য দুই ক্যান্টিনগুলিতে চাহিদা সমাল দিতে হিমশিম হয়ে উঠছে এসএইচজির মহিলারা।