এই পঞ্চায়েতে তৃণমূল এর প্রধানের বিরুদ্ধে বিজেপির অনাস্থা খারিজ হয়ে গেলো। পঞ্চায়েতে তৃণমূল এর প্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা এনে হাস্যকার অবস্থায় পড়লে বিজেপি নেতারা। বুধবার ছিল শান্তিপুর ব্লকের বেলঘড়িয়া দুইনম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতে বিজেপির আনা প্রস্তাবের দিন ছিল। বিজেপির আনা অনাস্থা প্রস্তাবে তৃণমূল কংগ্রেসের কোন সদস্য উপস্থিত থাকেন নি।
ফলে বিজেপির আনা অনাস্থা প্রস্তাব সম্পূর্ণভাবে খারিজ হয়ে যায় এবং সময় পেরিয়ে গেলেও বিজেপি নেতারা ঘটনাস্থলে থেকে গন্ডগোল তৈরি করে বলে অভিযোগ। অভিযোগ যে বিজেপি সাংসদ জগন্নাথ সরকার ঘটনাস্থলে থেকে বিজেপির হয়ে এলাকায় উত্তেজনা এবং বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেছে। শেষমেষ এলাকার মানুষের প্রতিবাদে বিজেপি সাংসদ জগন্নাথ সরকার এলাকা ছেড়ে চলে যায়।
তৃণমূল কংগ্রেসের নেত্রী তথা নদীয়া জেলা পরিষদের সভাধিপতি রিক্তা কুন্ডু জানিয়েছেন যে বিজেপি সাংসদ জগন্নাথ সরকার জানেন না তার অধিকার কতটা। বিজেপির অনাস্থা প্রস্তাবের ঘটনাস্থল থেকে বিশৃংখলা এবং অশান্তি তৈরি করেছে ওই সাংসদ জগন্নাথ সরকার। জগন্নাথ সরকার যে সমস্ত অভিযোগ নিয়ে এসেছেন সম্পূর্ণভাবে বেআইনি এবং মিথ্যা এবং কুৎসা।
আর ও পড়ুন দ্বিতীয়বার মা হওয়ার সুখবর দিলেন এই আন্তর্জাতিক তারকা
এলাকার মানুষ প্রতিবাদ করেছেন সরব হয়েছেন উনি ভয় পেয়ে চলে গেছেন। জগন্নাথ সরকার জানেন না এই গ্রাম পঞ্চায়েতে কাদের সংখ্যাগরিষ্ঠতা রয়েছে। বিজেপি কৌশল নিয়েছিল তৃণমূল কংগ্রেসকে ভাঙ্গিয়ে তারা প্রধান তৈরি করবে। সেই ধরনের অকল্পনীয় ভাবনা ধুলিস্যাৎ হয়ে গেল বিজেপির।
অনাস্থা প্রস্তাবের হেরে গেলেন বিজেপি সদস্যরা। জয়ী হলেন তৃণমূল কংগ্রেসের পঞ্চায়েত সদস্যরা। পঞ্চায়েত সদস্য তথা তৃণমূল নেতা দীপক মন্ডল বহাল তবিয়তে প্রধান থেকে গেলেন গ্রাম পঞ্চায়েতে। জানা গিয়েছে যে ওই গ্রাম পঞ্চায়েতে আসন সংখ্যা ১৫ টি। এরমধ্যে তৃণমূল কংগ্রেসের রয়েছে দুটি আসন এবং নির্দল সদস্য রয়েছেন ৬জন। অর্থাৎ তৃণমূলের দলে ৮জন।
অন্যদিকে বিজেপির দলে রয়েছেন ৭ জন সদস্য। যেখানে সদস্যসংখ্যা তৃণমূলের ভারী সেখানে বিজেপিও অনাস্তা আনে কি করে প্রশ্ন উঠেছে এলাকার মানুষের কাছে এবং রাজনৈতিক মহলে। বিজেপির কয়েকজন নেতাদের কাছ থেকে জানা গিয়েছে যে বিষয়টি অনেকেই মেনে নিতে পারছেন না মনেপ্রাণ । যেহেতু তৃণমূলের সদস্য সংখ্যা বেশি তাই বিজেপির অনাস্থা আনা ঠিক হয়নি বলেও বিজেপির একটা অংশ মনে করছেন। এদিন অনাস্থা প্রস্তাব এনে বিজেপি পঞ্চায়েত সদস্য ভয়ে আতঙ্কিত।
সময় পেরিয়ে গেলেও অন্য কোনো সদস্য তাদের অনাস্থা প্রস্তাবের পক্ষে সমর্থন না করায় অনাস্থা প্রস্তাব খারিজ হয়ে যায়। প্রধান পদে থাকলেন তৃণমূলের দীপক মন্ডল। তিনি জানিয়েছেন যে আমার বিরুদ্ধে অনাস্থা আনা বিজেপির হাস্যকার কৌশল। বিজেপি অকল্পনীয় ভাবনা থেকে অনাস্থা প্রস্তাব এনেছিল যা আদৌ কোনদিন সম্ভব নয়।
জানা গিয়েছে যে অনাস্থা প্রস্তাব কে ঘিরে বিজেপি এলাকায় অশান্তি সৃষ্টি করেছে বিশৃংখলা সৃষ্টি করেছে। যদিও পরিস্থিতি শান্ত রাখতে পুলিশ যথেষ্ট কড়া ব্যবস্থা গ্রহণ করেছিল। পুলিশের তৎপরতায় কোনরকম বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়নি। জানা গিয়েছে যে অনাস্থা ভোট কে কেন্দ্র করে ব্যাপক চাঞ্চল্য, ঘটনাস্থলে এসে এলাকাবাসীর হয়ে পড়লেন বিজেপি সাংসদ। নিরাপত্তা রক্ষীরা কোনরকমে তাকে উদ্ধার করে নিয়ে যায়।
নদীয়ার শান্তিপুর থানার বেলঘড়িয়া ২ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের ঘটনা। সূত্রের খবর, শান্তিপুর থানার বেলঘড়িয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের অনাস্থা ভোটের আবেদন করে বিজেপি। সেইমতো প্রশাসনের তরফ থেকে আজ বেলঘড়িয়া ২ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের অনাস্থা ভোট শুরু হয়। সকাল থেকে ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিল বিশাল পুলিশবাহিনী। তৃণমূল কর্মীরা একে একে ঘটনাস্থলে জড়ো হয়। ঘটনাস্থলে এসে উপস্থিত হয় বিজেপি সাংসদ জগন্নাথ সরকার। এরপর এই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে পরিস্থিতি।
জগন্নাথ সরকার কে দেখেই পুলিশের সামনেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন এলাকার মানুষ। অনাস্থা প্রস্তাব খারিজ হয়ে যাওয়া অর্থাৎ হেরে যাওয়ায় জগন্নাথ সরকার এলাকা থেকে পালিয়ে যায়। অবশেষে নিরাপত্তারক্ষীরা কোনরকমে সাংসদদের নিয়ে ঘটনাস্থল ছেড়ে পালিয়ে যায়। অভিযোগের তীর তৃনমূলের আশ্রিত দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে ঘটনায় তীব্র নিন্দা করেছেন সাংসদ জগন্নাথ সরকার।
তিনি বলেন পুলিশ প্রশাসন কার্যত শাসক দলের দল দাসে পরিণত হয়েছে। যদিও ঘটনার কথা অস্বীকার করেছে তৃণমূল। তাদের দাবি সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন চলছিল কিন্তু উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবেই বিজেপি সাংসদ এসে পরিস্থিতি উত্ত্যক্ত করার চেষ্টা করেছে। পুলিশের সামনেই তাদেরকে আক্রান্ত হতে হয়েছে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসে রানাঘাট এসডিপিও প্রবীর মন্ডল। ঘটনার জেরে উত্তপ্ত এলাকা ধীরে ধীরে শান্ত হয়ে ওঠে।
জানা গিয়েছে যে বিজেপির সদস্য উজ্জ্বলা বিশ্বাস জানিয়েছেন যে আমরা ভেবেছিলাম তৃণমূলের দু’জন সদস্য সমর্থন জানাবে এবং আমরা পঞ্চায়েত ভোট গঠন করবো কিন্তু তৃণমূল নেতৃত্ব আটকে দেওয়ায় আমাদের অনাস্থা খারিজ হয়ে যায়। বিজেপির আনা অনাস্থা প্রস্তাব খারিজ হয়ে যাওয়ায় মূল্য বিজেপি সাংসদ জগন্নাথ সরকারের এবং বিজেপি নেতৃত্ব এলাকা থেকে সরে পড়ে।
তৃণমূল প্রধান দীপক মন্ডল জানিয়েছেন যে বিজেপি অনাস্থা প্রস্তাব কে কেন্দ্র করে বিশৃঙ্খলা তৈরি করেছে এবং একটা হাস্যকর পরিস্থিতি তৈরি করেছিল।