পূর্ব বর্ধমান – কোহলি ওকে ক্ষমা করে দিক ছেলের গ্রেপ্তারিতে কাতর আর্জি মায়ের পূর্ব বর্ধমান জেলার জামালপুর থানার বিরাট ভক্ত ঋতুপর্ণের গ্রেপ্তারিতে হতবাক প্রতিবেশীরাও। কী বলছেন তাঁরা? ঘরে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে দেশের অন্যতম সেরা ব্যাটারের ছবি। শয়নে-স্বপনে-জাগরণে একটাই নাম থাকে ছেলের মুখে। কোহলির ‘বিরাট’ ফ্যান সে।
শনিবার কলকাতায় ম্যাচ দেখতে আসার আগেও ছেলে বলেছিল, ‘সুযোগ পেলে গুরুদেবের পা জড়িয়ে ধরব।’ সেই ছেলে যে এই কাণ্ড ঘটাবে ভাবতে পারেননি পূর্ব বর্ধমানের কাকলি পাখিরা। টিভিতে ছেলের গ্রেপ্তারির খবর দেখে চোখের জল ধরে রাখতে পারেননি। এখন একটাই প্রার্থনা, ‘কোহলি ছেলেকে ক্ষমা করে দিক। শনিবারের স্বর্ণালি সন্ধ্যায় কলকাতায় আইপিএলের জাঁকজমকপূর্ণ উদ্বোধন। KKR এবং RCB-র টানটান ম্যাচ। বিরাট কোহলির অর্ধশতক পূর্ণ হওয়ার পরই জি ব্লকের দিক থেকে ফেন্সিং টপকে মাঠের মধ্যে ঢুকে পড়ে ঋতুপর্ণ। ক্রিজ়-এর উপর শুয়ে পড়ে প্রণাম করে বিরাট কোহলিকে। প্রিয় খেলোয়াড়কে জড়িয়েও ধরে বিরাটের ‘ফ্যান বয়’। বিরাট-সহ খেলোয়াড়দের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হওয়ার কারণে রবিবার সকালেই ঋতুপর্ণকে গ্রেপ্তার করেছে কলকাতা পুলিশ।
খবর পেয়েই কলকাতায় ছুটে গিয়েছেন ঋতুপর্ণর বাবা মহাদেব পাখিরা। কিছু জমি ও একটি ফলের দোকান আছে তাঁর। পূর্ব বর্ধমানের জামালপুর ব্লকের পারাতল গ্রামে তাঁদের বাড়ি। মা কাকলি পাখিরা জানান, ছোট থেকেই ক্রিকেট খেলে ঋতুপর্ণ। প্রথমে জামালপুর এবং পরে কলকাতার বেলেঘাটায় ক্রিকেট কোচিং নিতে যায় সে। কাল বাড়িতে বলেই আইপিএল দেখতে যায় ঋতুপর্ণ। কাকলি দেবী বলেন, ‘বিরাট ওর কাছে ভগবানের মতো। তাই আবেগে সে একটা ভুল করে ফেলেছে। কলকাতা পুলিশের কাছেও আবেদন জানাচ্ছি ওকে ক্ষমা করে দেওয়া হোক।’ বিরাট ভক্ত ঋতুপর্ণের গ্রেপ্তারিতে হতবাক প্রতিবেশীরাও। এই ঘটনার পিছনে কোনও নাশকতা বা অসৎ উদ্দেশ্য নেই, খেলার প্রতি ভালবাসা আর কৈশোরের চাঞ্চল্য থেকেই এই কাণ্ড ঘটিয়েছে সে বলে দাবি গ্রামবাসীদের। গ্রামের বাসিন্দা শ্যামাপদ মালিক বলেন, ‘ছেলেটা ছোট থেকেই খেলাকে ভালবাসে। ওর এই আচরণ খেলাকে ভালোবেসেই। পুলিশ ও খেলোয়াড়েরা ওকে ক্ষমা করে দিক, সেটাই চাইব।’ সকলেই চাইছেন ঘরের ছেলে ঘরে ফিরুক।
