মুর্শিদাবাদ – উত্তরবঙ্গে প্রবল বৃষ্টির জেরে একের পর এক মৃত্যুর খবর মিলছে নাগরাকাটা, মিরিকসহ পাহাড়ি অঞ্চলে। শুধু পাহাড় নয়, দক্ষিণবঙ্গেরও একাধিক জেলায় দেখা দিয়েছে বন্যার প্রকোপ। নদীর পাড় ভাঙতে শুরু করেছে ধীরে ধীরে, আর সেই ভাঙনের বলি হল মুর্শিদাবাদের সামশেরগঞ্জের এক প্রাচীন কালীমন্দির। সোমবার গভীর রাতে গঙ্গার ভাঙনে তলিয়ে গেল চাচন্ড এলাকার ঐতিহ্যবাহী কালীমন্দিরটি।
গত কয়েকদিন ধরেই মন্দিরটি প্রায় ঝুলন্ত অবস্থায় ছিল নদীর ধারে। স্থানীয় বাসিন্দারা আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছিলেন—যেকোনও মুহূর্তে মন্দিরটি নদীগর্ভে তলিয়ে যেতে পারে। তাঁদের আশঙ্কাই শেষ পর্যন্ত সত্যি হলো। কালীপুজোর আর কিছুদিন বাকি, তার আগেই মন্দির তলিয়ে যাওয়ায় শোক ও হতাশায় ভরে উঠেছে গোটা এলাকা।
শুধু মন্দির নয়, আশেপাশের একাধিক বাড়িও গঙ্গার পাড়ভাঙনে ধসে পড়ছে একে একে। ইতিমধ্যেই প্রায় ১০০ মিটার জমি গঙ্গার গর্ভে চলে গিয়েছে। রবিবার রাত থেকেই বাঁধের রাস্তার একটি বড় অংশ ধসে পড়ে, ফাটল ধরে কালীমন্দিরের মূল কাঠামোতেও। আতঙ্কে রাত কাটাচ্ছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
স্থানীয়দের অভিযোগ, এই ভয়াবহ পরিস্থিতিতেও প্রশাসনের তরফে কেউ আসেননি। বালির বস্তা ফেলে আর পরিস্থিতি সামলানো সম্ভব নয় বলে দাবি তাঁদের। দ্রুত পাথর ফেলে পাড় বেঁধে দেওয়ার দাবি তুলেছেন তাঁরা।
বিজেপি বিধায়ক সুব্রত মৈত্র বলেন, “প্রতিবার বালির বস্তা ফেলে ভাঙন আটকানো যাবে না, এটা আগেই বলেছিলাম। কিন্তু কোনও পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।” কংগ্রেস নেতা জয়ন্ত দাসের মন্তব্য, “বাড়ি হারানো মানুষদের ত্রিপল দিয়ে সান্ত্বনা দেওয়া হচ্ছে, অথচ অন্যদিকে চলছে কার্নিভাল।” তবে তৃণমূল বিধায়ক জাকির হোসেন জানিয়েছেন, তিনি মানুষের পাশে আছেন এবং পরিস্থিতি মোকাবিলার চেষ্টা করছেন।
প্রবল বৃষ্টি ও গঙ্গার ভাঙনে বিধ্বস্ত সামশেরগঞ্জের এই ঘটনা আবারও সামনে এনেছে নদীভাঙন রোধে দীর্ঘদিনের প্রশাসনিক ব্যর্থতা ও মানুষের অসহায়তার চিত্র।
