স্বাস্থ্য- চড়া রোদ আর অতিরিক্ত গরমে ক্লান্ত শরীরকে চাঙ্গা করতে অনেকেই খুঁজে নেন প্রাকৃতিক উপায়। গরমের এই সময়ে বাজারে সহজলভ্য একটি ফল হচ্ছে জাম (কালোজাম)। দেখতে কালচে বেগুনি, খেতে টক-মিষ্টি এই ফল যেমন মুখের স্বাদ বদলে দেয়, তেমনই শরীরের জন্যেও হতে পারে উপকারী। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন—সবার শরীরের পক্ষে জাম উপযোগী নয়।
জামে থাকা জ্যাম্বোসিন ও জ্যাম্বোলিন নামক উপাদান রক্তে শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। ফলে ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য জাম একটি প্রাকৃতিক ও সহায়ক ফল। এছাড়াও, জাম ফাইবারসমৃদ্ধ হওয়ায় হজমশক্তি বাড়ায়, কোষ্ঠকাঠিন্য রোধ করে এবং ত্বক ও রক্ত পরিষ্কারে সাহায্য করে। এর জলীয় উপাদান শরীরকে ঠান্ডা রাখে ও ডিহাইড্রেশন প্রতিরোধ করে, যা গরমে খুবই জরুরি।
তবে কিছু ক্ষেত্রে জাম খাওয়া বিপজ্জনক হতে পারে। যাঁদের গ্যাস্ট্রিক বা অ্যাসিডিটির সমস্যা রয়েছে, তাঁদের জন্য জাম বাড়তি অস্বস্তির কারণ হতে পারে। আবার জাম ঠান্ডা প্রকৃতির ফল হওয়ায় ঠান্ডা-কাশিতে ভোগা ব্যক্তিদের এটি না খাওয়াই ভালো। পাশাপাশি, অতিরিক্ত জাম খেলে পেটের গণ্ডগোল, গ্যাস, এমনকি মুখের ঘা পর্যন্ত হতে পারে। বিশেষজ্ঞরা বলেন, দিনে আট থেকে দশটির বেশি জাম না খাওয়াই ভাল।
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডাঃ অমিতাভ ঘোষ বলেন, “জাম একটি ঔষধি গুণসম্পন্ন ফল হলেও, শরীরের প্রকৃতি অনুযায়ী খেতে হবে। বিশেষ করে যাঁরা ঠান্ডা বা হজমের সমস্যায় ভোগেন, তাঁদের জন্য এটি সমস্যা তৈরি করতে পারে।”
সব মিলিয়ে বলা যায়, জাম একটি উপকারী মৌসুমি ফল হলেও তা খেতে হবে পরিমাণ বুঝে ও নিজের শারীরিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে। গরমে শরীর ঠান্ডা রাখতে ও স্বাস্থ্যের ভারসাম্য বজায় রাখতে জাম সহায়ক হতে পারে, তবে তা হতে হবে সঠিকভাবে খেলে তবেই।
