গীতার জ্ঞানে বিশ্ববাসীর হৃদয়কে উদ্ভাসিত. ইসকন এর প্রধান কেন্দ্র শ্রীধাম মায়াপুর। শ্রীধাম মায়াপুর এখন বিশ্ববাসীর কাছে পারমার্থিক জ্ঞান আহোরনের অন্যতম পীঠস্থান। ভক্তিবেদান্ত গীতা অ্যাকাডেমী ভারতবর্ষে বিশেষত বাংলা, ইংরেজি, ও হিন্দি ভাষায় গীতা স্টাডি কোর্সের মাধ্যমে শ্রীল প্রভুপাদের গীতা ও ভাগবত পড়ার সুবর্ণ সুযোগ করে দিয়েছে।
প্রতিবছরের ন্যায় এবারও ২৭শে নভেম্বর থেকে ৩রা ডিসেম্বর পর্যন্ত গীতা জয়ন্তী মহোৎসব মহাসমারোহে যথাযথ মর্যাদার সঙ্গে পালন করা হয় , এবং গীতা মেলা ২৩শে ডিসেম্বর থেকে ৩রা জানুয়ারি ২০২৩ তারিখ পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়াও আজ ৫,০০০ ভক্তের সন্মিলিত গীতা পাঠ অনুষ্ঠিত হয় । গীতার জ্ঞানে বিশ্ববাসীর হৃদয়কে উদ্ভাসিত ও গীতা অধ্যয়নরত ছাত্র-ছাত্রীদের মনোবলকে বৃদ্ধি করতেই এই মহান উৎসবের আয়োজন। পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণ পাঁচ হাজার বছরেরও আগে হরিয়ানার কুরুক্ষেত্রের সমরাঙ্গনে অমিত শক্তিশালী ধনুর্ধর অর্জুনকে গীতার জ্ঞান দান করেছিলেন এই শুভ তিথিতে। সেই ঐতিহ্য স্মরণ করে প্রতিবৎসর এই উৎসব পালন করা হয়। গীতাকে বলা হয় মানব ধর্মতত্ত্বের একটি সংক্ষিপ্ত পাঠ।
আরও পড়ুন – তৃণমূলের কর্মীদের মারধরের অভিযোগ বিজেপির বিরুদ্ধে।
আজ থেকে ৫১৫৫ বছর পূর্বে ভগবদ্গীতার দিব্যজ্ঞান শ্রীকৃষ্ণ অর্জুনকে প্রদান করলেও গীতার চতুর্থ অধ্যায়ে বলা হয়েছে যে, এর পূর্বেও তিনি এই জ্ঞান অন্যকে প্রদান করেছিলেন। মহাভারতের শান্তি পর্বে ভগবদ্গীতার ইতিহাসে উল্লেখ আছে, কৃষ্ণ অর্জুনকে বলেন যে, তিনি প্রথম এই জ্ঞান সূর্যদেবকে প্রদান করেন এবং সূর্যদেব তা মনুকে প্রদান করেন। মনু সেই জ্ঞান ইক্ষাকুকে প্রদান করেন এভাবে ভগবদ্গীতার দিব্যজ্ঞান প্রদান গুরু শিষ্য পরম্পরায় চলতে থাকলেও কালের বিবর্তনে তা হারিয়ে যায়। সর্বশেষ ভগবান কৃষ্ণ কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধের প্রথম দিন তিনি তাঁর পরম ভক্ত ও শ্রেষ্ঠ বীর অর্জুনকে এই অমূল্য জ্ঞান প্রদান করেন। মোট ১৮ দিন এই কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধ চলেছিল।
ভগবদ্গীতা মানবজাতীর জন্য কৃষ্ণের অন্যতম শ্রেষ্ঠ উপহার। প্রকৃতপক্ষে তাঁর উদ্দেশ্য ছিল মানবজাতীকে জড়-জাগতিক অজ্ঞতা থেকে উদ্ধার করা। কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধে অর্জুন যখন যুদ্ধে কৌরবপক্ষে তার আত্মীয়দের বিরুদ্ধে লড়াই করতে ইতস্তত করছিলেন, তখন কৃষ্ণ জীবনের সত্য এবং কর্ম, জ্ঞান, ধ্যান এবং ভক্তির দর্শন তাঁর কাছে ব্যাখ্যা করেছিলেন। যায় ফলে বিশ্বের অন্যতম বড় ধর্মগ্রন্থ ভগবদ্গীতা প্রকাশিত হয়।