বলিউড অভিনেত্রী মহিমা চৌধুরীর গোপন রহস্য। সিনেমার পর্দা থেকে একেবারেই গায়েব অভিনেত্রী মহিমা চৌধুরী ৷ যে মহিমা, পরিচালক সুভাষ ঘাইয়ের ছবিতে তোলপাড় তুলেছিল বলিউডে ৷ সেই মহিমা এখন বড় পর্দা থেকে এতটা দূরে!এতদিন পর, এসব নিয়ে মুখ খুললেন নায়িকা ৷ কেন তিনি ক্যামেরার সামনে থেকে দূরে থাকেন তাও জানালেন সাক্ষাৎকারে ৷ মহিমা চৌধুরী পরদেশের মধ্য দিয়ে বলিউডে নিজের ক্যারিয়ার শুরু করেছিলেন।
সুভাষ ঘাই নির্দেশিত এই সিনেমায় মহিমা চৌধুরীকে দর্শকরা খুবই পছন্দ করেছিলেন। এরপর দিল কেয়া করে, দাগ দ্য ফায়ার, ধড়কন, দিওয়ানে, কুরুক্ষেত্র, লজ্জা, ইয়ে তেরা ঘর ইয়ে মেরা ঘর, দিল হ্যায় তুমহারার মতো সিনেমায় অভিনয় করেছেন। ২০০৬ সালে তিনি ববি মুখার্জির সঙ্গে বিয়ে করেন। ২০০৭ এ তাদের মেয়ে হয়। তাঁর নাম আরিয়ানা। বিয়ের কিছু বছর পরে ২০১৩তে মহিমা এবং ববি ডিভোর্স নিয়ে নেন। আপাতত তিনি সিঙ্গেল রয়েছেন।
শাহরুখ খানের বিপরীতে পরদেশের মতো ব্লকবাস্টার হিট দিয়ে তার ক্যারিয়ার শুরু হয়েছিল। ভাঙা হাসকি ভয়েস, এবং ফ্রেশ লুক নিয়ে বলিউডে ডেবিউ করেছিলেন তিনি। প্রথম সিনেমা থেকেই লাইমলাইটে চলে আসা মহিমা চৌধুরী পরপর কয়েকটি সুপারহিট সিনেমা করার পর আচমকা হারিয়ে গিয়েছেন সিলভার স্ক্রিন থেকে।
মাঝেমধ্যে তার বক্তব্য এবং বিভিন্ন বিষয় টিপ্পনি করে খবরের শিরোনামে থাকলেও তাকে আর ফিল্মে সেভাবে পাওয়া যায়নি। সম্প্রতি একটি সাক্ষাৎকারে তিনি চলচ্চিত্র জগতের কালো দিকটি তুলে ধরেছেন। বলিউডে অ্যাক্ট্রেসদের প্রতি যে মনোভাব কীভাবে বদলে যাচ্ছে, তাতে তিনি সামনে এনেছেন। সেই সঙ্গে তিনি আগে অ্যাক্ট্রেসদের প্রতি কিভাবে বৈষম্য করা হতো তাও সামনে এনেছেন।
তিনি বলেন, আমার মনে হয় ইন্ডাস্ট্রি এখন সেই লেভেলে চলে যাচ্ছে, যেখানে ফিমেল অ্যাকটার্স সমান এবং ভালো সুযোগ দেওয়া হচ্ছে। তাদের ভালো চরিত্র, ভালো পেমেন্ট, এনডোর্সমেন্ট দেওয়া হচ্ছে এবং তারা ভালো পাওয়ারফুল পজিশনে থাকছেন। তাদের কাছে আগের চেয়ে অনেক ভালো এবং লম্বা ক্যারিয়ার তৈরি হচ্ছে। তিনি সম্প্রতি ইন্ডাস্ট্রিতে এই বদল নিয়ে সদর্থক মত জানিয়েছেন। এখন মহিলাদের বিভিন্ন আলাদা আলাদা রোল-এ দর্শকরা দেখতে পাচ্ছেন। তিনি যখন ডেবিউ করেছিলেন, শুরুর দিকে তিনি এই রকম সাপোর্ট পাননি বলে তিনি জানিয়েছেন।
নিজের ক্যারিয়ার সম্পর্কে বলতে গিয়ে জানিয়েছেন, যে আগে নিজের ব্যক্তিগত জীবন লুকিয়ে রাখতে হতো। যা এখন করতে হয় না। তিনি জানান. আগেকার সময় আপনি কারও সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়েছেন, তখন সেটা সামনে আসলেই সিনেমা থেকে বের করে দেওয়া হতো।
কারণ তাদের শুধু ভার্জিন মহিলা নায়িকা প্রয়োজন ছিল। দর্শক এবং পরিচালক থেকে শুরু করে সকলেই এমন নায়িকা চাইত, যাঁরা ব্যক্তিগত জীবনে একটা চুম্বন পর্যন্ত করেনি। এই কারণে যদি আপনি কারও সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন, মার্কেটে যান, তাহলে তার সম্পর্কে বলতো, “ওহ সি ইজ ডেটিং!”
যদি আপনার বিয়ে হয়ে যায়, তাহলে আপনি আস্তে আস্তে পার্শ্বচরিত্রে চলে যেতেন। ক্যারিয়ার সেখানেই শেষ এবং আপনাকে অন্য কিছু ভাবতে হতো। আর যদি আপনার বাচ্চা হয়ে যায়, তাহলে আপনা ক্যারিয়ার পুরোপুরি চৌপাট হয়ে গেল। তিনি জানান বহু নায়কদেরও ব্যক্তিগত জীবন লুকিয়ে রাখতে হতো।
আর ও পড়ুন হিন্দু বিবাহ আইনের কথা স্মরণ করে দিয়ে শোভনকে হুঁশিয়ারি রত্নার
এছারাও তিনি বলেন এখনও লড়ছি আমি জীবনের সঙ্গে ৷ আয়নার সামনে দাঁড়াতে ভয় পাই ৷ একটা দুর্ঘটনা জীবনকে একেবারে বদলে দিয়েছে ৷ তখন আমি কাজল ও অজয় দেবগণের সঙ্গে দিল ক্যায়া করে ছবিতে অভিনয় করছি ৷ স্টুডিওতে যাচ্ছিলাম ৷ হঠাৎ করে একটা লরি আমার গাড়িতে এসে ধাক্কা মারে ৷ গুরুতর আহত হই ৷ গাড়ির কাচ ভেঙে আমার মুখের অনেকাংশে ঢুকে যায় ৷
মোট ৬৭ কাচের টুকরো আমার মুখের নানা অংশ থেকে বের করা হয় অপারেশন করে ৷ চলে একের পর এক সার্জারি ৷ মহিমা আরও বলেন, ‘আমার ঘরে কোনও আয়না ছিল না, লাইট ছিল না সেই সময় ৷ সূর্যের আলো ঢুকতে দেওয়া মানা ছিল৷ কেননা, আমি যে ওষুধ ব্যবহার করতাম, তাতে এগুলো সব মানা করা হয়েছিল ৷