দিল্লী – তেলেঙ্গানার বাসারাতে গোদাবরী নদীতে পবিত্র স্নানের সময় ঘটে গেল এক হৃদয়বিদারক দুর্ঘটনা, যা রাজস্থানের পালি এবং নাগোর জেলাকে শোকস্তব্ধ করে দিয়েছে। রবিবারের ওই দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন রাজস্থানের পালি জেলার তিন সহোদর ভাই—রাকেশ (২০), মদন (১৮) এবং ভরত (১৬), তাঁদের মাসতুতো ভাই বিনোদ, এবং নাগোর জেলার ঋত্বিক কাছাওয়া। প্রত্যেকেই স্নান করতে নেমে তীব্র স্রোতে তলিয়ে যান এবং শেষ পর্যন্ত তাঁদের মৃতদেহ নদী থেকেই উদ্ধার করা হয়।
দুর্ঘটনাস্থলে তাঁরা সরস্বতী মন্দির দর্শনের আগে গোদাবরী নদীতে স্নান করছিলেন। রাজস্থান থেকে ১৮ জনের একটি দল বাসারাতে এসে পৌঁছেছিল এই তীর্থযাত্রার উদ্দেশ্যে। কিন্তু সেই পবিত্র স্নানই পাঁচ তরতাজা যুবকের জীবনের শেষ স্নান হয়ে দাঁড়াল। আশেপাশে থাকা আত্মীয়রা প্রাণপণ চেষ্টা করলেও স্রোতের তীব্রতা এতটাই ছিল যে কাউকেই বাঁচানো সম্ভব হয়নি। ডুবুরি ও স্থানীয় প্রশাসনের সহযোগিতায় তাঁদের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়।
বিশেষ করে পালির ধাবার গ্রামে শোকের ছায়া আরও ঘন হয়, যখন মঙ্গলবার রাতে চার ভাইয়ের একসঙ্গে চিতা জ্বলে ওঠে। গ্রামের মানুষ চোখের জল ধরে রাখতে পারেননি। মৃত ভরত সদ্য দশম শ্রেণির পরীক্ষায় পুরো তেলেঙ্গানাতে প্রথম স্থান অধিকার করেছিল, আর রাকেশ সদ্য NEET-এ উত্তীর্ণ হয়েছিল। প্রত্যেকেই ডাক্তার হওয়ার স্বপ্ন দেখত, যা আর পূরণ হলো না। তাঁদের মাসতুতো ভাই বিনোদও NEET-এর প্রস্তুতির জন্যই এসেছিলেন ভাইদের কাছে।
নাগোর জেলার টাউসর গ্রামের ঋত্বিক কাছাওয়ার মৃতদেহ হায়দ্রাবাদে নিয়ে গিয়ে সেখানেই শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়। তাঁর পরিবার বর্তমানে হায়দ্রাবাদেই বাস করে।
ধাবার গ্রামের সরপঞ্চ প্রতিনিধি জানিয়েছেন, এই দুর্ঘটনা কেবল একাধিক পরিবারকে নয়, গোটা গ্রামকেই এক অপূরণীয় শোকে ভাসিয়ে দিয়েছে। সাংসদ হনুমান বেনিওয়াল সোশ্যাল মিডিয়ায় শোকপ্রকাশ করে লিখেছেন, “ঈশ্বর প্রয়াত আত্মাদের শান্তি প্রদান করুন।” গোটা ঘটনা রাজস্থান ও তেলেঙ্গানার দুই প্রান্তের মানুষের হৃদয়ে গভীর ব্যথা ও স্মৃতির ছাপ রেখে গেল।
