বিনোদন – ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ফেস্টিভাল অফ ইন্ডিয়া-তে নন্দিতা রায় এবং শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের পরিচালিত ও প্রযোজিত ছবি ‘আমার বস’-এর স্ক্রিনিং ছিল। সেই স্ক্রিনিং শেষে গোয়া বিমানবন্দর থেকে ফিরছিলেন পরিচালক এবং অভিনেতারা। ছিলেন বর্ষীয়ান অভিনেত্রী রাখি গুলজারও।বিমানবন্দরেই ঘটে এমন এক ঘটনা যা দেখে রীতিমতো চমকে যান পরিচালক-অভিনেতা শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়।শিবপ্রসাদ জানিয়েছেন, তিনি এবং রাখী গুলজার মুম্বাই ফেরার জন্য অপেক্ষা করছিলেন বিমানবন্দরে। ফ্লাইট সামান্য দেরিতে থাকায় তাঁরা একটি কফির দোকানে যান। শিবপ্রসাদ নেন দার্জিলিং চা, আর রাখী গুলজার বেছে নেন ক্যাপুচিনো।
ঠিক তখনই দোকানে এক ফুটবল ক্লাবের একজন বিদেশি খেলোয়াড় প্রবেশ করেন। খাবার কেনার পর তিনি নগদ কিছু টাকা দেন, যার মধ্যে একটি ছেঁড়া বা কিছুটা খারাপ নোট ছিল। দোকানদার সেই নোট নিতে অস্বীকার করেন। বেশিরভাগ সময় এমন পরিস্থিতিতে আশেপাশের মানুষ মুখ খোলেন না। কিন্তু এক্ষেত্রে রাখী গুলজার চুপ করে থাকেননি।তিনি দোকানদারকে প্রশ্ন করেন, “কিউ নেহি লেঙ্গে প্যায়সা?” নিজে হাতে টাকা নিয়ে খুঁটিয়ে দেখে বলেন, “ঠিক তো হ্যাঁ, কিউ নেহি লেঙ্গে ইয়ে নোট?” দোকানদার জেদ ধরে বসেন নেবেন না, আর রাখীও জেদ ধরে বলেন, “নিতে হবেই।”এই বিতর্কের মাঝেই সেই বিদেশি খেলোয়াড় হঠাৎ বলে ওঠেন, “What is this? This only happens in India!” অর্থাৎ “এটা কেমন ব্যাপার! এরকম শুধু ভারতেই হয়”-এই কথাটি যেন মুহূর্তে বদলে দেয় গোটা পরিস্থিতি।
রাখী গুলজারের মুখের অভিব্যক্তি পাল্টে যায়। এতক্ষন তিনি যাঁর পক্ষে কথা বলছিলেন, মুহূর্তেই তাঁর কথার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ান। রাখী গর্জে ওঠেন, “তোমার সাহস কী করে হয় ইন্ডিয়া নিয়ে কথা বলার? ভারত আমার মাতৃভূমি। তোমরা এখানে খেলতে এসেছো, আগে অন্যের দেশকে সম্মান করতে শেখো।”শিবপ্রসাদের কথায়, “রাখীদির সেই রণমূর্তি দেখে আমি তাঁকে পড়ি কি মরি করে সেখান থেকে বার করে আনতে পেরে বাঁচি।” তবে সেই মুহূর্ত তাঁর হৃদয়ে গেঁথে গিয়েছে চিরতরে। তিনি উপলব্ধি করেন-“যতই বয়স হোক, যতই নাম-ডাক হোক, নিজের দেশের প্রতি, নিজের মাতৃভূমির প্রতি যে টান, যে ভালবাসা, সেটা কখনও কমে না।”এই ঘটনা শুধুমাত্র একজন অভিনেত্রীর দেশপ্রেম নয়, বরং একজন নাগরিকের দৃঢ় মনোভাবেরই প্রতিফলন। রাখী গুলজার যেন প্রমাণ করে দিলেন, দেশের সম্মান রক্ষার লড়াইয়ে তিনি আজও সমান সক্রিয়।
