সোনাপুর চৌপথী গোহাটের নিলাম অনুষ্ঠিত হলো বুধবার । গত কয়েক বছরের চিরাচরিত নিয়ম ত্যাগ করে লটারির মাধ্যমে অকশনে গোহাটটির ইজারা দিল আলিপুরদুয়ার -১ নং পঞ্চায়েত সমিতি । পঞ্চায়েত সমিতির এহেন নিয়মনীতিতে এদিন স্বাভাবিকভাবেই খুশি হয়েছেন নিলামে অংশগ্রহণকারীরা। যদিও এনিয়ে কটাক্ষের সুর শোনা গিয়েছে বিরোধীদের গলায় ।
আলিপুরদুয়ার -১ নং ব্লকের কোচবিহার সীমান্ত লাগোয়া সোনাপুর চৌপথীস্থিত গোহাটটি সুপ্রাচীন । বহুকাল ধরে স্থানীয় ও ভীনরাজ্যের ব্যবসায়ীরা গরু কেনাবেচা করে এই হাটে । সপ্তাহের প্রতি মঙ্গলবারে সেখানে গোহাট বসে । গোহাটটি পুরোপুরিভাবে আলিপুরদুয়ার-১ নং পঞ্চায়েত সমিতির নিয়ন্ত্রণাধীন । প্রতি বছর পঞ্চায়েত সমিতির তরফে হাট ডাকের মাধ্যমে ইজারা দেওয়ার বন্দোবস্ত করা হত । সেক্ষেত্রে বহুদিন ধরেই হাটের ইজারা প্রাপ্তি নিয়ে স্বজনপোষণের একটা অভিযোগ ছিল বিরোধীদের মধ্যে । গত কয়েকদিন আগে তা নিয়ে বিডিওর কাছে একটি লিখিত ডেপুটেশন দেয় বিজেপি । আলিপুরদুয়ারের বিধায়ক সুমন কাঞ্জিলালও ওইদিন সেখানে উপস্থিত ছিলেন । বিডিও তা খতিয়ে দেখার আশ্বাস দেন ।
আরও পড়ুন – সিমেন্ট ও তুষের বস্তার নিচে অবৈধ সেগুন কাঠ পাচারের চেষ্টা,গ্রেপ্তার ৫
বুধবার বেলা সাড়ে বারোটা নাগাদ বিডিও অফিসে গোহাটের অকশন শুরু হয় । এগারোজন সেই অকশনে এদিন অংশ নেয় । এবারেই প্রথম লটারি ড্রয়ের মাধ্যমে হাটের ইজারার বন্দোবস্ত করে সমিতি । এই বছর মোট ৫১ লক্ষ টাকায় ঘাটপাড় নিবাসী এক ব্যক্তি অকশনে চূড়ান্ত ব্যক্তি হিসেবে মনোনীত হন । আগামী সপ্তাহের মধ্যে ওই ব্যক্তিকে পঞ্চায়েত সমিতিতে ওই টাকা জমা করার জন্য বলা হয়েছে । এরপরই আগামী এক বছরের জন্য তিনি হাট পরিচালনার সুযোগ পাবেন ।
এ বিষয়ে আলিপুরদুয়ার -১ নং পঞ্চায়েত সমিতির সহ সভাপতি লক্ষ্মীকান্ত রাভা বলেন, ” খুব সুন্দরভাবে এদিনের নিলামপর্ব শেষ হয়েছে । এবারে মোট ৫১ লক্ষ টাকায় এক ব্যক্তি সোনাপুর গোহাটের ইজারা পেয়েছেন ।” বিডিও সঞ্জয় প্রধান বলেন, ” লটারি ড্রয়ের মাধ্যমে ফ্রি অ্যান্ড ফেয়ার পদ্ধতিতে নিলাম হয়েছে । এতে অংশগ্রহণকারীরাও দারুনভাবে খুশি হয়েছে । পঞ্চায়েত সমিতির রেজ্যুলেশন মেনেই সমস্ত কর্মসূচি হয়েছে । ”
জানা গিয়েছে গত বছর এই গোহাটটি ২৫ লক্ষ টাকায় ইজারা দেওয়া হয়েছিল । এবছর তাই একধাক্কায় দ্বিগুণ নিলাম ওঠায় স্বাভাবিকভাবেই পঞ্চায়েত সমিতির কোষাগারে ভালো উপার্জন এলো বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল । যদিও বিজেপির পক্ষ থেকে এদিনের এই অকশন পদ্ধতি সম্পর্কে কটাক্ষ করা হয়েছে । এ বিষয়ে আলিপুরদুয়ার জেলা বিজেপির সাধারণ সম্পাদক সাধন সাহা জানান, ” পদ্ধতি ঠিকঠাক থাকলেও অকশনে অর্জিত সেই বিপুল পরিমাণ টাকা যাতে ঠিকঠাক সরকারী খাতে জমা পড়ে আগে সেটা নিশ্চিত করতে হবে । ” এদিন অকশনে সঞ্জয়বাবু ছাড়াও পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি ললিতা ওঁরাও, সোনাপুর ফাঁড়ির ওসি মিংমা শেরপা, কর্মাধ্যক্ষ পীযুষকান্তি রায়, সুব্রত সরকার প্রমুখেরা উপস্থিত ছিলেন ।