গোয়ার স্বাধীনতা অর্জনে বড় ভূমিকা জওহরলাল নেহেরুর

গোয়ার স্বাধীনতা অর্জনে বড় ভূমিকা জওহরলাল নেহেরুর

Facebook
Twitter
LinkedIn
Email
WhatsApp
Print
Telegram

গোয়ার স্বাধীনতা অর্জনে বড় ভূমিকা জওহরলাল নেহেরুর। গোয়া সম্পর্কে নরম নীতির জন্য স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে বহু বার সমালোচিত হতে হয়েছিলো জওহরলাল নেহেরুকে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বরাবরই এই বিষয়ে নিরপেক্ষ থাকার চেষ্টা করেলেও তাদের হাবভাবে স্পষ্ট ছিলো যে তাদের মতে গোয়া আদপে পর্তুগালেরই অংশ; যা নেহেরুকে ভীষণ ভাবেই হতাশ করেছিল। শেষ পর্যন্ত নেহেরু গোয়ার স্বাধীনতা ছিনিয়ে নিতে ট্রুপ পাঠায় সেখানে। সে গল্প অনেকেরই অজানা। ১৪ই আগস্ট ঘড়িতে যখন মধ্যরাত, বিশ্ব তন্দ্রাচ্ছন্ন, তখনই জীবন ও স্বাধীনতার জন্য জেগে ওঠে ভারত-গোয়া ছাড়া।

 

১৯৪৭ সালে, ভারত যখন ব্রিটেনের হাত থেকে স্বাধীনতা অর্জন করে, গোয়া তখন ছিলো অন্য এক ঔপনিবেশিক শক্তির দখলে।  ভারতের পশ্চিম উপকূল বরাবর—গোয়া, দাদরা, নগর হাভেলি, দমন এবং দিউ ছিলো সম্পূর্ণ ভাবে পর্তুগিজদের দখলে। তাই, ১৯৪৭ সালের ১৫ আগস্ট মধ্যরাতে ভারত স্বাধীনতা অর্জন করলেও পর্তুগিজ শাসনাধীন বর্তমান ভারতের এই পাঁচটি অঞ্চল তখনও রয়ে ছিলো পরাধীন। ভারতীয় ইউনিয়নের অংশ হয়ে উঠতে তাদের এখনো এক বড় পথ চলা বাকি ছিল।

 

গোয়ার চিরন্তন শাসন এতো সহজে ছেড়ে যাওয়ার কোনো ইচ্ছাই ছিলো না পর্তুগিজদের। তবে, ভারতীয় জাতীয়তাবাদীদের কাছে গোয়ায় পর্তুগালের শাসন এক অস্থায়ী উপদ্রপ ছাড়া এটা আর কিছুই ছিলো না। গোয়ার স্থানীয় নাগরিক বা সদ্য গঠিত ভারত সরকার কেউই আর গোয়াতে পর্তুগিজ শাসন চাইছিলো না। স্বাধীনতার আগেই ১৯৪৬ সালের জুন মাসে ডঃ রাম মনোহর লোহিয়া গোয়াতে পর্তুগিজদের বিরুদ্ধে ডাকা এক সম্মেলনে “গোয়া ছাড়ো” প্রস্তাব পাস পেশ করে নেতৃত্ব দেন সেই আন্দোলনে।

 

১৯৪৯ সালের জুন মাসে গোয়ান পিপলস পার্টি এবং গোয়ান জাতীয় কংগ্রেসের সভাপতি উভয়েই বিদেশী শাসনের অবসান এবং গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করে। ওই একই মাসে, ভারত পর্তুগালের রাজধানী লিসবনে একটি কূটনৈতিক অফিস স্থাপন করে ভারতের উপনিবেশগুলি থেকে পর্তুগালের শাসন প্রত্যাহার নিয়ে আলোচনা শুরু করে। পর্তুগাল ১৯৫১ সালের জুন মাসে ভারত সহ অন্যান্য প্রদেশে তাদের বিদেশি উপনিবেশগুলির অবস্থা পরিবর্তনের জন্য সংবিধানেও বেশ কিছু সংশোধন আনে।

আর ও পড়ুন    আজ কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৬২তম জন্মজয়ন্তী

কিন্তু একবারের জন্যেও ভারতের হাতে ভূখণ্ডগুলি হস্তান্তরের কোনো প্রশ্নই ওঠেনি পর্তুগালে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই ভারত ক্ষুব্ধ হয়। আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান না হওয়ায় ১৮৫৩ সালের জুন মাসে ভারত লিসবন থেকে নিজেদের যাবতীয় কূটনৈতিক মিশন প্রত্যাহার করে নেয় এবং পর্তুগিজ উপনিবেশ এবং ভারতের মধ্যে ভিসায় নানা বিধি নিষেধ চালু করে। পর্তুগিজ সৈন্যকে নিন্দা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী নেহেরু অবিলম্বে পর্তুগালের সাথে যাবতীয় কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করেন।

 

ভারত গোয়াতে তার কনস্যুলেট বন্ধ করে দেয়। সেই সঙ্গে মানি অর্ডার সুবিধা কমিয়ে দিয়ে গোয়া, দমন ও দিউ-এ একপ্রকার ভাবে ভ্রমণ ও অর্থনৈতিক অবরোধ চালু করে ভারত। ১ ডিসেম্বর, ভারত গোয়া পুনরুদ্ধার এবং সেখানে নজরদারি চালানোর জন্য অনুশীলন শুরু করে। দুটি ভারতীয় ফ্রিগেট গোয়ার উপকূলে টহল দিতে শুরু করে এবং ভারতীয় নৌবাহিনী ষোলটি জাহাজকে চারটি টাস্ক গ্রুপে বিভক্ত করে।  ইন্ডিয়ান এয়ার ফোর্স (IAF) সেই সময় রিকনেসান্স ফ্লাইট শুরু করে যাতে প্রলুব্ধ হয়ে পর্তুগিজ ফাইটার জেট তাদের অবস্থান প্রকাশ করে ফেলে। ভারতীয় সেনাবাহিনী গোয়া, দমন ও দিউ সীমান্তের চারপাশে সেনা মোতায়েন করে।

RECOMMENDED FOR YOU.....

Scroll to Top