কন্যাশ্রী প্রাপ্ত দুই মেয়ে বাবার চাপ কমাতে গড়ছেন সরস্বতী ঠাকুর । প্রতিবছরের মতো এবারও জ্ঞানের আলো ছড়াতে আসছেন দেবী সরস্বতী।করোনা কালে স্কুল কলেজ বন্ধ হলেও তাই বলে তো আর পড়াশোনা বন্ধ নেই। শুরু হয়ে গেছে অনলাইনে পড়াশোনার পাঠ। তাই এবার ও ঘরে ঘরে এবং বিদ্যা প্রাংগনে৷ ছাত্র ছাত্রীদের দ্বারা পুজিত হবেন বিদ্যার দেবী মা সরস্বতী। ইতিমধ্যেই বাঁশ, খড় ও কাঁদামাটি দিয়ে প্রতিমা তৈরীর কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে।
স্কুল কলেজের ছাত্র ছাত্রীরা যখন বাগদেবির আরাধনার জন্য সরস্বতী প্রতিমা কেনার জন্য পালেদের কারখানায় বায়না করতে যাচ্ছে। তখন দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার বালুরঘাট শহরের চকভৃগু এলাকায় সরস্বতী প্রতিমা তৈরীতে বাবার সাথে কাধে কাধ মিলিয়ে সরস্বতী প্রতিমা গড়ার কাজে হাত লাগিয়েছে ওই মৃৎশিল্পি উত্তম পালের দুই স্কুল পড়ুয়া মেয়ে উর্মি আর সুর্মি পাল।
পশ্চিমবঙ্গ সরকারের অন্যতম সফল প্রকল্পের নাম কন্যাশ্রী। মেয়েদের স্বাবলম্বী করার উদ্দেশ্যেই শুরু হয় এই প্রকল্প। টাকার অভাবে গরিব ঘরের মেয়েদের লেখাপড়া বন্ধ হওয়ার যে সমস্যা, তাতে লাগাম টানতে এই প্রকল্পের সূচনা হয় ২০১৩ সালে।মেয়েদের সাম্বলম্বি করে তোলার লক্ষেই কন্যাশ্রী প্রকল্প এরা পেলেও বাবার চাপ কমাতে দিনরাত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন দুই বোন। উর্মি জানান,তিনি মূলত প্রতিমার রঙের কাজ ও সাজসজ্জার যাবতীয় খুঁটিনাটি কাজের দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নিলেও প্রতিমাও গড়তেও তারা পটু ।
আর ও পড়ুন সিঙ্গুরে টাটা ন্যানো কারখানার জায়গায় হতে চলেছে শেষমেশ মাছের ভেড়ি
করোনা পরিস্থিতির কারনে বিগত দু’বছর ধরে মৃৎশিল্পিদের অবস্থা খুবই শোচনীয় । একে সেভাবে কাজ নেই,যেটুকু কাজ আছে তার যথাযথ মূল্য পাচ্ছেন না মৃৎ শিল্পিরা । একথা নিজ মুখে জানিয়েছে উর্মির বাবা উত্তম পাল।
যদিও উর্মির কথায় সে ছোট থেকেই যেহেতু এই পরিবেশের মধ্যে মানুষ। তাই বাবাকে প্রতিমা তৈরি করা দেখতে দেখতে সে ও তার বোন দুজনেই শিখে ফেলেছে প্রতিমা তৈরির কাজ।পড়াশোনার পাশাপাশি সে ও তার বোন দুজনেই প্রতিমা নির্মানের কাজে বড়দের ( বাবা – মা) সাহায্য করতেন । তারপর বিগত কয়েক বছর ধরে বিভিন্ন পুজোর প্রতিমা গড়ার এই কাজের সঙ্গে যুক্ত হয়ে পড়েছে তারা ।
এদিকে দুই পড়ুয়ার বাবা মৃৎশিল্পি উত্তম পালের দাবি যেহেতু তার কোন ছেলে নেই, তাই তাদের এই পেশা চালিয়ে নিয়ে যেতে তিনি চান তার দুই মেয়ে পড়াশোনার পাশাপাশি তার পরম্পরা এই পেশার শিল্পকে বজায় রাখুক তার দুই মেয়ে উর্মি আর সুর্মি ।