হুগলী – প্রাণ রক্ষা হলো এক মরণাপন্ন কিশোরীর। চন্দননগর হাসপাতালে সফল হলো একটি জটিল অস্ত্রোপচার, যেখানে দেড় কেজি ওজনের একটি ফেটে যাওয়া টিউমার অস্ত্রোপচার করে বের করে এনে বাঁচানো হলো ১১ বছর বয়সী ষষ্ঠ শ্রেণির এক ছাত্রীকে। উন্নত পরিকাঠামো ছাড়াই এই সফল অস্ত্রোপচারে চিকিৎসকদের সাহসিকতা ও দক্ষতা এক নতুন নজির গড়েছে।
গত ২২ মে সকালে চাঁপদানি পুরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা রাজকুমার দাসের কন্যা তীব্র পেটের যন্ত্রণায় কাতরাতে থাকলে, পরিবারের সদস্যরা প্রথমে স্থানীয় চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যান। প্রাথমিকভাবে অ্যাপেনডিক্সের সন্দেহ করা হলেও, অবস্থার অবনতি হওয়ায় পরে তাকে নিয়ে যাওয়া হয় চন্দননগরের বাবুর বাজারের এক চিকিৎসকের কাছে। সেখান থেকেই কিশোরীকে তৎক্ষণাৎ ভর্তি করা হয় চন্দননগর হাসপাতালে।
সেখানে শল্য চিকিৎসক ডা. বহ্নিশিখা মোদক পরীক্ষা করে বুঝতে পারেন, কিশোরীর জরায়ুর পাশে প্রায় দেড় কেজি ওজনের একটি টিউমার রয়েছে এবং সেটি ইতিমধ্যেই ফেটে গলে পেটের মধ্যে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়েছে। সময়মতো অস্ত্রোপচার না হলে কিশোরীর মৃত্যু অবশ্যম্ভাবী ছিল।
পরিবারের সম্মতির পর শুরু হয় জরুরি অস্ত্রোপচারের প্রস্তুতি। টানা কয়েক ঘণ্টা ধরে চলে জটিল অপারেশন। সফলভাবে টিউমারটি বের করে আনা হয়। অপারেশনের পর চিকিৎসক বহ্নিশিখা জানান, “টিউমারটি নাভির কাছ পর্যন্ত পৌঁছে গিয়েছিল এবং ভিতরে পচন ধরেছিল। এই অবস্থায় শিশুটির প্রাণ বাঁচানো অত্যন্ত কঠিন ছিল। তবুও ঝুঁকি নিয়ে আমরা চেষ্টা করেছি।”
চন্দননগর হাসপাতালের সুপার ডা. সন্টু ঘোষ বলেন, “আমাদের হাসপাতালে পরিকাঠামোর ঘাটতি রয়েছে ঠিকই, তবে রোগী রেফার করার প্রবণতা নেই। আমাদের চিকিৎসকরাই এই কঠিন অস্ত্রোপচারে সাফল্য এনেছেন। কিশোরী এখন স্থিতিশীল, পুরোপুরি সুস্থ হয়ে উঠছে। আগামী দিনে হাসপাতালের পরিকাঠামো আরও উন্নত করে রোগীদের আরও ভালো পরিষেবা দেওয়ার চেষ্টা চালানো হবে।”
