ভগ্নাদশা থাকায় চন্দ্রপাড়া হাসপাতাল যাচ্ছে দুস্কৃতিদের দখলে

ভগ্নাদশা থাকায় চন্দ্রপাড়া হাসপাতাল যাচ্ছে দুস্কৃতিদের দখলে

Facebook
Twitter
LinkedIn
Email
WhatsApp
Print
Telegram
চন্দ্রপাড়া

ভগ্নাদশা থাকায় চন্দ্রপাড়া হাসপাতাল যাচ্ছে দুস্কৃতিদের দখলে। পুনরায় চালুর দাবি হাজারো বাসিন্দার
প্রায় পাঁচদশক আগের কথা।মালদার মালতিপুর বিধানসভার চন্দ্রপাড়া স্থাস্থ‍্যকেন্দ্রেই হাজার হাজার মানুষ চিকিৎসায় নির্ভর ছিলেন।সেখানে চিকিৎসকও ছিলেন বেশ কয়েকজন,ছিল নার্সিং স্টাফ ও রোগীদের জন‍্য সরকারি ভাবে শয‍্যা ছিল প্রায় চৌদ্দটি।স্থানীয় সূত্রে এমনটাই জানা যাচ্ছে।

 

এলাকার মানুষদের স্বাস্থ‍্য পরিষেবাটা নাগালের মধ‍্যেই ছিল।কিন্তু বর্তমানে সেই পরিস্থিতি বদলে গিয়েছে। সরকারি হাসপাতাল ভবন জরাজীর্ণ।যেখানে রোগীরা শয‍‍্যাসায়ী থাকতেন, সেই ভবনগুলি ভগ্নদশা।ডাক্তাররা যেখানে বসতে সেই ভবনও ধ্বংসপ্রাপ্ত প্রায়।এইরকম বেশ কয়েকটি ভবন রয়েছে সেগুলিও শেষপথে।ঘর গুলির পলাস্টার ছেড়ে ছাদের রড বের হয়ে গিয়েছে।যেকোনো সময় ভেঙে পড়তে পারে ছাদ।ছাদের উপরে ও দেওয়ালে আগাছা ছেড়ে গেছে।

 

বট ও অশ্বথের চারাও গজিয়েছে দেওয়ালে দেওয়ালে।তাতে ফাটলও ধরেছে।এক সময় সেখানে হাসপাতাল ছিল,বিল্ডিংটি দেখে ঐতিহাসিক নিদর্শন বলেই মনে হবে এখন। এলাকাসূত্রে জানা গেছে,চন্দ্রপাড়া পঞ্চায়েত এলাকায় প্রায় ষাট হাজার মানুষের বসবাস।

 

এলাকায় দুর্ঘটনাগ্রস্ত রোগীকে নিয়ে যেতে হয় প্রায় ১৫ কিমি দূরে মালতিপুর গ্রামীণ হাসপাতালে।গ্রামগুলির কারোও বাড়িতে প্রসূতি মহিলা থাকলে তাকেও ওই মালতীপুর গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া ছাড়া আর অন‍্য কোনো উপায় থাকেনা।থাকলেও তবে তা আরোও দৈর্ঘ‍্য অনেকটাই।বর্ষাকালে বা শীতের রাতে কোনো প্রসূতি মায়ের প্রসব যন্ত্রণা উঠলে ওই ১৫ কিলোমিটার পাড়ি দিয়েই মালতিপুরে আসতে হয়।

 

আর ও পড়ুন    ইংলিশবাজার পুরসভা এলাকায় বিজেপিতে ব্যাপক ভাঙ্গন

 

ওই প্রসূতি মহিলার পরিবারের লোকজন সেই শীত বা বর্ষার মধ‍্যেই ঝুঁকি নিয়ে তাদের আসতে হয়।যানবাহন প্রয়োজনীয় তুলনায় অপ্রতুল।এলাকায় সাপে কাটা,বিষপাণ,অগ্নিদগ্ধ রোগীদেরও মালতিপুরে নিয়ে আসতে হয়।এই ধরনের রোগীদের জন‍্য খুব অল্প সময়ের মধ‍্যে স্বাস্থ‍্য পরিষেবা পাওয়া অত‍্যন্ত জরুরি।সেক্ষেত্রে প্রায় ১৫ কিমি দূর মালতিপুর হাসপাতালে আসতে গিয়েই অনেকটাই সময় নষ্ট হয়।

 

এছাড়াও চন্দ্রপাড়া অঞ্চলের মহানন্দা নদীর ওপর পাড়ে রয়েছে ১৫০ পরিবারের হোসেনপুর গ্রাম।সেতু না থাকায় নৌকা বা বাঁশের মাচার উপর দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে এপারে এসে চিকিৎসা পরিষেবা নেই।ফলে তাদেরকেও ছুটতে হয় মালতিপুর গ্রামীণ হাসপাতালে।সরকারি স্বাস্থ‍্য পরিষেবা নাগালের মধ‍্যেই পাওয়ার দাবি তুলেছেন বাসিন্দারা।চন্দ্রপাড়া হাসপাতালটিকে সংস্কার করার দাবি তুলেছেন প্রায় সকলেই।স্থায়ীভাবে চিকিৎসক ও নার্সিং স্টাফের দাবিও রয়েছে তাদের,যেটা আগেও ছিল।

 

চন্দ্রপাড়া অঞ্চলের বাসিন্দা মহম্মদ জিন্নাহ বলেন,প্রায় পাঁচ দশক আগে এখানে চৌদ্দ শয‍্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল ছিল।চিকিৎসক নার্স সব ছিল।কিন্তু এখন তা অতীত।হাসপাতালের অবস্থা ভগ্নদশা।ফলে ভবনগুলিও এলাকাবাসীদের দখলে চলে যাচ্ছে।রাজ‍্য সরকার পুনঃভাবে হাসপাতালটি চালু করলে হাজারো মানুষ উপকৃত হবে।

 

ঘটনার কথা শুনে চাঁচল মহকুমা স্বাস্থ‍্য আধিকারিক জয়ন্ত বিশ্বাস জানান,এলাকাবাসীর তরফে কোনো লিখিত পায়নি।স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রশাসন ওই এলাকার ব্লক স্বাস্থ‍্য আধিকারিকের কাছে একটি লিখিত আবেদন করূক।আমিও বিষয়টি সংশ্লিষ্ট দপ্তরে জানাব।হাসপাতাল দখলমুক্ত করতে হাসপাতাল ফিরিয়ে আনা এইসব এলাকাবাসীকেই উদ‍্যোগ নিতে হবে বলে জানিয়েছেন মহকুমা স্বাস্থ‍্য আধিকারিক।

 

চন্দ্রপাড়া এলাকাটি মালতিপুর বিধানসভা কেন্দ্রের আওতায় রয়েছে।ওই এলাকার বিধায়ক আব্দুর রহিম বক্সি জানিয়েছেন, ওই হাসপাতালের ভবনগুলি সংস্কার ও পুরোপুরি চালু করার বিষয়টি নিয়ে স্বাস্থ‍্য দফতরের সাথে কথা বলব।

RECOMMENDED FOR YOU.....

Scroll to Top