দুর্গাপুজো করছে বিজেপি! চলছে মেনু নিয়ে ভাবনাচিন্তা। ২০২০-তে ধুমধাম করে দুর্গাপুজোর আয়োজন করেছিল বিজেপি। কিন্তু ২০২১ সালে দুর্গাপুজোর কয়েকদিন আগেও পুজো নিয়ে কোনও হোলদোল তেমন দেখা যায়নি পদ্ম শিবিরে। অনেক টালবাহানার পর শেষ পর্যন্ত এ বছরেও দুর্গাপুজো করার সিদ্ধান্ত নিল বিজেপি। তবে তা দলের পুজো না দলের কতিপয় নেতার পুজো, তা নিয়ে ধোঁয়াশা রইল। গত বছর বিধানসভা ভোটের আগে বাঙালির মন জয় করতে বিধাননগরের ইজ়েডসিসি-তে দুর্গাপুজো এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিল বিজেপি।
বস্তুত, সেটাই ছিল রাজ্যে প্রথম কোনও রাজনৈতিক দলের আয়োজিত দুর্গাপুজো। বিজেপির তৎকালীন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ এবং তাঁর শিবিরের নেতাদের অবশ্য সেই পুজোয় আপত্তি ছিল। দিলীপ ওই পুজোয় যানওনি। তাঁদের বক্তব্য ছিল, পুজো করা কোনও রাজনৈতিক দলের কাজ নয়। পুজো হয়েছিল রাজ্য বিজেপির কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয়, দলের তৎকালীন সর্বভারতীয় সহ সভাপতি মুকুল রায়, সব্যসাচী দত্ত প্রমুখের উদ্যোগে, যাঁরা দিলীপের বিরোধী গোষ্ঠীর নেতা হিসাবে দলের অন্দরে পরিচিত ছিলেন। এ বছর মুকুল তৃণমূলে ফিরে গিয়েছেন।
বিধানসভা ভোটে বিজেপির পরাজয়ের পর কৈলাসকে আর এ রাজ্যে দেখা যাচ্ছে না। এই পরিস্থিতিতে এ বছর আর পুজো হওয়ার সম্ভাবনা ছিল না। দলের যুব এবং মহিলা মোর্চার কোনও কোনও নেতা-নেত্রী এ বছরও পুজো করতে চাইলে রাজ্য নেতৃত্ব তাঁদের নিষেধ করেছিলেন।
কিন্তু ধর্মীয় প্রথার কারণে শেষ পর্যন্ত তাঁরা পুজোয় অনুমতি দিয়েছেন। সল্টলেকে EZCCতেই পুজোর আয়োজন করা হচ্ছে। তবে আগের মতো ধুমধাম করে নয়, বরং ছোট করেই দুর্গাপুজো করতে চায় গেরুয়া শিবির। বিজেপির সদ্য রাজ্য সভাপতির দায়িত্ব পাওয়া সুকান্ত মজুমদার পুজো করার পক্ষেই ছিলেন। কিন্তু প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি তথা বর্তমান বিজেপির সর্বভারতীয় সহ সভাপতি দিলীপ ঘোষ দুর্গাপুজো করার পক্ষে ছিলেন না।
দিন কয়েক আগেই বিজেপির সর্বভারতীয় সহ সভাপতি দিলীপ ঘোষ জানান,”কোনওদিনই রাজনৈতিক দলের কাজ রাজনীতি করা, দুর্গাপুজো করা নয়।
আর ও পড়ুন বিজেপির জাতীয় কার্যকরী সমিতির তালিকা থেকে বাদ পড়ল মেনকা-বরুণ
গতবছরও বিজেপি দুর্গাপুজো করেনি, কিছু সদস্য এটি আয়োজন করেছিল। এই বছরও সাংস্কৃতিক সেলের কিছু সদস্য করতে পারে।” তবে এবার বিজেপির দুর্গাপুজোয় খুব সম্ভবত প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী উদ্বোধন করছেন না। তার বদলে উদ্বোধন করবেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা।
ছোট করেই আপাতত দুর্গাপুজো সারবে পদ্ম শিবির। তবে পুজোর মেনু কী হবে, তা নিয়ে আবার ভাবনাচিন্তা শুরু হয়েছে। কারণ একপক্ষ নিরামিষের দাবিতে অনড় হলেও, অপরপক্ষের দাবি আমিষ রান্না। পুজোর তিন দিন প্রথমে খিচুড়ি রান্না করা হবে বলে ভাবা হয়েছিল। কিন্তু কয়েকজনের দাবি মাছ-মাংসও থাকা চাই। ফলে মেনু নিয়ে এখন ভাবনা চিন্তা করছে পদ্ম শিবির। অন্য দিকে দুর্গাপুজো শুরুর আগেই ধাক্কা খেয়েছে বিজেপি। কারণ, পুজো উদ্যোক্তাদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন সব্যসাচী দত্ত। ইদানিং দলের অন্দরে বেসুরো ছিলেন তিনি।