চাকুরীপ্রার্থী তরুণীকে কুপ্রস্তাব চেয়ারম্যানেরপদ খোয়ালেন শিশির । ক্ষমাহীন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। পদত্যাগ করতে বাধ্য করলেন পৌর প্রধানকে। এক চাকুরীপ্রার্থী তরুণীকে কু -প্রস্তাব দেওয়ার ‘ফোনলাপ’ সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হতেই দ্রুত সিদ্ধান্ত নেয় দল। সিদ্ধান্ত জানান সাংসদ ও সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তরুণীকে কুপ্রস্তাব দেওয়ার অভিযোগ উঠতেই তার বিরুদ্ধে কড়া ব্যাবস্থা নেওয়ায় সকলেই খুশী। এই অভিযুক্ত চেয়ারম্যান শিশিরকুমার মণ্ডল। পূর্ব বর্ধমানের দাঁইহাট পুরসভার চেয়ারম্যান।
এবার পদ থেকে ইস্তফা দিতে বাধ্য করলেন অভিষেক । তার কঠোর নির্দেশ যে কোনমতেই কোন নারীর অবমাননা দল মেনে নেবে না। এবং তা সঙ্গে সঙ্গে প্রমাণ করে দিলেন সাধারণ সম্পাদক। ওই নেতাকে পদত্যাগ করতে হবে বলে নির্দেশ এসেছে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছ থেকে। বৃহস্পতিবার এমনটাই জানালেন পূর্ব বর্ধমানে তৃণমূলের জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়। শিশিরের বিরুদ্ধে এক তরুণীকে চাকরির লোভ দেখিকরতেয়ে কুপ্রস্তাব দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে সম্প্রতি। নেটমাধ্যমে সেই সংক্রান্ত এক ক্লিপও ছড়িয়ে পড়ে।
যার সত্যতা আনন্দবাজার অনলাইন যাচাই করেনি। ওই অডিয়ো ক্লিপে শোনা গিয়েছে, এক তরুণী ‘কাকা’ বলে এক জনকে সম্বোধন করে চাকরির আবেদন করছেন। যাকে ‘কাকা’ বলে সম্বোধন করা হচ্ছে, অভিযোগ তিনি দাঁইহাটের চেয়ারম্যান। পরে ‘কাকা’ তাঁকে ফোন এবং ভিডিয়ো কল করা শুরু করেন। পুজোর আগে একটি লজে ডেকে শারীরিক সম্পর্কের বিনিময়ে চাকরি ও টাকা দেওয়ার প্রস্তাবও দেওয়া হয়।
অভিযোগ এমনই।ওই অডিয়ো ক্লিপ প্রকাশ্যে আসতেই বেকায়দায় পড়ে শাসক দল। দলের অন্দরেও সমালোচনার ঝড় ওঠে। সেই আবহে বৃহস্পতিবার বিকেলে তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্বের কাছ থেকে জেলা নেতৃত্বের কাছে শিশিরকে চেয়ারম্যান পদ থেকে পদত্যাগ করতে বলার নির্দেশ আসে। জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ বলেন, ‘‘দাঁইহাট পুরসভার চেয়ারম্যান শিশিরকুমার মণ্ডলের যে অডিয়ো ভাইরাল হয়েছে সংবাদমাধ্যমে, তার জেরেই এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন দলের নেতা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়৷
শিশিরবাবুকে চেয়ারম্যান পদ থেকে পদত্যাগ করতে বলা হয়েছে। উনি পদত্যাগ করবেন৷ পরে যদি ওই অডিয়ো ক্লিপ মিথ্যে প্রমাণিত হয়, তখন আবার সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করা যাবে। ’’শিশির অবশ্য আগেই দাবি করেছেন, তিনি ওই মহিলাকে চেনেন না। তাঁকে ফাঁসানো হয়েছে। পুরপ্রধানের কথায়, ‘‘আমি ওই মহিলাকে চিনিই না। এখন ডিজিটাল যুগ। আমার গলা ও ছবি নকল করে ওই ভিডিয়ো ছড়ানো হয়েছে।’’ ইতিমধ্যে কাটোয়া থানায় লিখিত অভিযোগও দায়ের করেছেন দাঁইহাটের দু’বারের চেয়ারম্যান শিশির।
শীর্ষ নেতৃত্বের নির্দেশ আসার পর তিনি বলেন, ‘‘আমি থানায় লিখিত অভিযোগ জানিয়েছি। পুরো ঘটনার তদন্ত চেয়েছি পুলিশের কাছে। পাশাপাশি, দলকেও তদন্ত করে দেখার জন্য অনুরোধ করেছি। আমি এমন কলঙ্ক নিতে চাই না। দল আমাকে পদত্যাগ করতে বলেছে। সেটা আমি করব।’’ শিশির মন্ডলের এই ভীমরতি প্রদর্শন দলকে ক্ষতির মুখে ঠেলে দিল। বিরোধীদের হাতে অস্ত্র তুলে দিল।