মালদা – চিকিৎসার আশায় ঝাড়খণ্ড থেকে পশ্চিমবঙ্গে এলেও শেষরক্ষা হল না। মালদহের একটি বেসরকারি নার্সিংহোমে চিকিৎসার গাফিলতির অভিযোগে মৃত্যু হল এক গর্ভবতী মহিলা এবং তাঁর সদ্যোজাত শিশুর। ঘটনায় নার্সিংহোমের বিরুদ্ধে তীব্র অভিযোগ তুলে জেলা প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েছেন মৃতার স্বামী।
ঘটনাটি ঘটেছে মালদহের কালিয়াচক থানার জালালপুর এলাকায়। জানা গেছে, মৃতা ফুলটুসি খাতুন (২৪) এবং তাঁর স্বামী মিজান শেখ ঝাড়খণ্ডের সাহেবগঞ্জ জেলার মির্জাপুরের বাসিন্দা। গত বৃহস্পতিবার রাতে প্রসব যন্ত্রণা নিয়ে স্ত্রীকে মালদহে নিয়ে আসেন মিজান। অভিযোগ, এক অ্যাম্বুল্যান্স চালক তাঁদের ভুল বুঝিয়ে জালালপুরের এক বেসরকারি নার্সিংহোমে নিয়ে যান।
সেই রাতেই ফুলটুসি একটি পুত্র সন্তানের জন্ম দেন। কিন্তু শিশুর অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ তাঁকে মালদা মেডিকেল কলেজে স্থানান্তর করার নির্দেশ দেয়। রাতেই শিশুকে মেডিকেলে ভর্তি করা হয়। সকালে ফিরে এসে পরিবারের লোকজন দেখতে পান, ফুলটুসির মৃত্যু হয়েছে। আজ সকালে মৃত্যু হয় সদ্যোজাতেরও।
অন্যদিকে নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষের দাবি, শিশুকে রাতেই রেফার করা হয়েছিল এবং ফুলটুসির অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাকেও সকালে রেফার করা হয়। তাঁদের দাবি, নার্সিংহোমেই ফুলটুসির মৃত্যু হয়নি।
ঘটনার গুরুত্ব বুঝে জেলা স্বাস্থ্য দফতরের প্রতিনিধি দল ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। অসহায় বাবা মিজান শেখ নার্সিংহোমের বিরুদ্ধে চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগপত্র তুলে দেন তাঁদের হাতে। জেলা স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্পের কো-অর্ডিনেটর প্রতীক সান্যাল জানিয়েছেন, “আমরা অভিযোগ পেয়েছি, তদন্ত শুরু হয়েছে।”
এই মর্মান্তিক ঘটনা ফের একবার প্রশ্ন তুলে দিল—প্রসবকালীন চিকিৎসা এবং রেফারাল ব্যবস্থার ওপর কতটা ভরসা করা যায়? তদন্তের পরেই প্রকৃত সত্য উঠে আসবে বলে মনে করছে প্রশাসন।
