চিরাচরিত নিয়ম ভেঙে চার হাত এক করে দিল মহিলা পুরোহিত। যদিও এই কাজ একমাত্র পুরুষ ব্রাক্ষণরাই করে থাকেন। তবে এবার পুরুষ পুরোহিতের জায়গায় বিয়ের চার হাত এক করে দিলেন মহিলা পুরোহিত। শুধু তাই নয় বিয়ের সমস্ত কাজ করলেন মহিলা পুরোহিত ডঃ তনুশ্রী চক্রবর্তী। এমনই এক ব্যতিক্রমী বিয়ের সাক্ষী হলেন শহর শিলিগুড়ি অরবিন্দ পল্লী ভবন বিয়ের অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকা নিয়ন্ত্রিতরা।
যদিও প্রাচীনকাল থেকে প্রাথা অনুসারে এই বিয়ের কাজ সম্পন্ন করে আসছেন পুরুষ ব্রাক্ষ্মণরা। তবে সেই প্রথার বাইরে গিয়ে চিরাচরিত নিয়মের থেকে একটু আলাদা ছবি দেখল শিলিগুড়িরবাসী। শিলিগুড়ি ডাব গ্রাম এর বাসিন্দা তনামি পাল ও হায়দার পাড়ার বাসিন্দা পার্থপ্রতিম রায়ের চার হাত এক করে দিলেন মহিলা পুরোহিত ডক্টর তনুশ্রী চক্রবর্তী।
যদিও এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া অর্থাৎ মহিলা পুরোহিত দিয়ে মেয়ের বিয়ে সম্পন্ন করাটা খুব একটা সহজ ছিল না বলে জানিয়েছেন পাত্রীর বাবা ভবতোষ পাল। পাড়া-প্রতিবেশী থেকে শুরু করে আত্মীয়-স্বজনেরা সবাই বলেছিল এটা কি করে সম্ভব হয়? এটা উচিত নয়! তবে এসব নেতিবাচক কথাকে তোয়াক্কা না করে পাত্রীর বাবা নিজের সিদ্ধান্তে অনড় থেকে মেয়ের বিয়ে সম্পন্ন করার গুরু দায়িত্ব দিলেন এক মহিলা পুরোহিতকে।
জানা গিয়েছে, পাত্রীর বাবা ভবোতোষ পাল মেয়ের বিয়ে ঠিক করতেই মহিলা পুরোহিত খুঁজছিলেন। তিনি আগাগোড়া ব্যতিক্রমী কিছু কাজ করতে ভালোবাসেন। তাই মেয়ের বিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে মহিলা পুরোহিত খুঁজতে বাকি রাখেনি শিলিগুড়ি শহরের আশে-পাশে এলাকা, এরপরে কলকাতায় এক মহিলা পুরোহিতের খোঁজ পেলে তার সাথে যোগাযোগ করা হলে ওই মহিলা পুরোহিত সময় দিতে পারেননি। এরপর ভবতোষ বাবুর হঠাৎ মাথায় আসে যে শিলিগুড়ি উচ্চতর বালিকা বিদ্যালয়ে সরস্বতী পূজা করেছিলেন এক মহিলা পুরোহিত।
আর ও পড়ুন মুর্শিদাবাদে বাড়িতে ঢুকে এক তৃণমূল কর্মীকে এলোপাথাড়ি কোপানো হলো
এই কথা মাথায় আসতেই তিনি দেরি না করে তৎক্ষণাৎ ছুটে যান শিলিগুড়ি উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা অত্যুয়া বাগচীর কাছে। তার কাছ থেকেই তনুশ্রী দেবীর নম্বর সংগ্রহ করে তার সাথে যোগাযোগ করেন ভবতোষ বাবু এরপরে রবিবার শিলিগুড়ির অরবিন্দ পল্লী একটি ভবনে চার হাত এক করার দায়িত্ব নেন ডঃ তনুশ্রী চক্রবর্তী। সমস্ত রীতিনীতি মেনে বরণ মালাবদল সিঁদুর দান থেকে শুরু করে সমস্ত রীতিনীতি মেনে সম্পন্ন করেন এই বিয়ের অনুষ্ঠান।ভবতোষ বাবু এহেনো উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছে শিলিগুড়িবাসী। ইতিমধ্যে এই খবর ছড়িয়ে পড়তেই ভবতোষ বাবুকে শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন শহরবাসী।
এদিন তনুশ্রী চক্রবর্তী বলেন, প্রথম মহিলা ব্রাহ্মণ দিয়ে বিয়ে করানো বিষয়টা একটু অস্বস্তিকর লাগছিল। যদিও পরে মন থেকে সাহস করায় আর কিছু মনে হয়নি। পরিবারের সহযোগিতার জন্য আজ এই কাজ করতে পেরেছি। যদি কোন দুস্থ পরিবার বিয়ে করানোর জন্য তাঁকে বলেন তবে কোনও দক্ষিণা ছাড়াই তাঁদের বিয়ে দেবেন বলেও জানান তিনি।