হুগলি – রাজ্যজুড়ে ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সংশোধন (SIR) শুরু হওয়ার আগে থেকেই তৎপর শাসক তৃণমূল কংগ্রেস। সোমবার চুঁচুড়ার রবীন্দ্রভবনে আয়োজিত এক কর্মশালায় চুঁচুড়ার বিধায়ক অসিত মজুমদার ঘোষণা করলেন, স্থানীয় স্তরে তৈরি হচ্ছে SIR ওয়ার রুম, যেখানে প্রতিদিনের কাজের রিপোর্ট জমা দেবেন দলের বুথ লেভেল এজেন্ট (BLA)-রা।
তিনি জানান, প্রতিদিন বিকেল ৬টার মধ্যে বিএলএ ২-রা রিপোর্ট দেবেন ওয়ার রুমে, আর রাত ৮টার মধ্যে সেই রিপোর্ট পৌঁছে যাবে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের অফিসে। ভোটার তালিকার পরিমার্জন পর্যায়ে যাতে মাঠপর্যায়ের কোনও সমস্যায় বিএলএরা না পড়েন, তা দেখার দায়িত্বও নিল দল।
অসিত মজুমদার বলেন, “বিএলএ ২-দের কাজ বিএলও-দের (বুথ লেভেল অফিসার) ছায়াসঙ্গী হয়ে থাকা। সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত তাঁদের সঙ্গে বুথে বুথে ঘুরবেন। যাঁরা বেসরকারি চাকরি করেন, তাঁরা স্থানীয় নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করুন—আমরা চেষ্টা করব ছুটির ব্যবস্থা করতে। আর যাঁরা টোটো বা অটো চালান, তাঁদের যাতে আর্থিক ক্ষতি না হয়, তার দায়িত্বও দল নেবে।”
কমিশনের নিয়ম অনুযায়ী, ভোটার তালিকার পরিমার্জন পর্বে সরকারি কর্মচারীরা বিএলও-র দায়িত্ব পালন করেন। অন্যদিকে, রাজনৈতিক দলগুলি নিয়োগ করে বিএলএ (বুথ লেভেল এজেন্ট), যাঁদের মধ্যে বিএলএ ১ সাধারণত দলের জেলা বা উচ্চপদস্থ নেতারা, আর বিএলএ ২ হন স্থানীয় স্তরের কর্মীরা। এই বিএলএ ২-দেরই দায়িত্ব—বুথে বুথে ঘুরে ভোটারদের নাম যাচাই, বাদ পড়া বা নতুন নাম তোলার তথ্য সংগ্রহ, এবং প্রতিদিন রিপোর্ট তৈরি করা।
চুঁচুড়ার ওয়ার রুমে প্রতিদিন সন্ধ্যায় জমা পড়বে সেই রিপোর্ট। কতজন ভোটারের নাম নতুন করে তোলা হলো, কার নাম বাদ পড়ল—সব তথ্য থাকবে সেই তালিকায়। বিধায়ক বলেন, “এই কাজটা নিখুঁতভাবে করতে হবে। কারণ প্রতিটি বুথে গণতন্ত্রের ভিত্তি গড়ে উঠছে এখন। আমরা চাই, কোনও প্রকৃত ভোটার যেন বাদ না যায়।”
তৃণমূল নেতৃত্বের বার্তা স্পষ্ট—রাজ্যের এসআইআর পর্ব শুধু প্রশাসনিক প্রক্রিয়া নয়, সাংগঠনিক দায়িত্বও বটে। তাই চুঁচুড়া থেকে শুরু হচ্ছে ‘ওয়ার রুম মডেল’, যা কার্যত ভোটার যাচাই অভিযানকে নতুন মাত্রা দিতে চলেছে।




















