কলকাতা – শনিবার রাতের চেতলা কেঁপে উঠল এক নৃশংস খুনের ঘটনায়। মেয়র ফিরহাদ হাকিমের নিজের ওয়ার্ডের মধ্যেই প্রকাশ্য রাস্তায় ধারালো অস্ত্র দিয়ে খুন করা হল এক ব্যক্তিকে। মৃতের নাম অশোক পাসওয়ান (৪২)। তিনি পেশায় গাড়ির মেকানিক। পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, শনিবার রাত ১১টা ৩০ মিনিট নাগাদ চেতলার ১৭এ/১৭বি বাস স্ট্যান্ডের সামনে বন্ধুদের সঙ্গে বসেছিলেন অশোক। সেই সময় কোনও বিষয় নিয়ে তাঁদের মধ্যে বচসা বাধে। হঠাৎই একজন ধারালো রড দিয়ে অশোকের গলায় আঘাত করে বলে অভিযোগ।
রক্তাক্ত অবস্থায় অশোক প্রায় ১০০ মিটার দৌড়ে নিজের বোনের বাড়ির দিকে যাওয়ার চেষ্টা করেন, কিন্তু পৌঁছতে পারেননি। রাস্তাতেই লুটিয়ে পড়েন তিনি। স্থানীয় বাসিন্দারা তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান, যেখানে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। খবর পেয়ে চেতলা থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে তদন্ত শুরু করে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, আপাতত তিনজনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। প্রাথমিক অনুমান, মদের আসরে গণ্ডগোল থেকেই এই খুনের সূত্রপাত। ধৃতরাও অশোকের পরিচিত। পুলিশের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, “ঘটনাস্থলে বসে মদ্যপান চলছিল। সেখানে তর্কাতর্কির জেরে হঠাৎই এই হত্যাকাণ্ড ঘটে।”
ঘটনার পর এলাকা জুড়ে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। স্থানীয় বাসিন্দারা অভিযোগ তুলেছেন, ওই বাস স্ট্যান্ডের আশপাশে প্রতিদিন সন্ধ্যার পর থেকেই শুরু হয় মদের আসর, চলতে থাকে গভীর রাত পর্যন্ত। তাঁদের দাবি, বহুবার অভিযোগ করেও পুলিশ কার্যকর ব্যবস্থা নেয়নি।
উল্লেখযোগ্যভাবে, ঘটনাস্থলটি কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিমের ওয়ার্ডের মধ্যেই পড়ে। এই এলাকায় প্রায়ই বিভিন্ন সামাজিক ও প্রশাসনিক অনুষ্ঠানে মেয়র এবং তাঁর কন্যা হাজির থাকেন। ফলে প্রশাসনের নাকের ডগায় এমন খুনের ঘটনা ঘটায় প্রশ্ন উঠছে নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে।
পুলিশ এখন ঘটনার সমস্ত দিক খতিয়ে দেখছে—কী নিয়ে বচসা, কারা জড়িত, এবং অস্ত্র কোথা থেকে এল। খুনে ব্যবহৃত রডটি উদ্ধার হয়েছে বলে জানা গেছে। ফরেনসিক দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে এবং আশপাশের সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
স্থানীয়দের দাবি, চেতলায় রাতের পর মদের আসর ও অসামাজিক কর্মকাণ্ডে লাগাম টানতে হবে, নাহলে আরও বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।




















