বর্ধমান – কালীপুজো থেকে বিসর্জন—কোথাও শব্দবাজি, কোথাও ডিজের তাণ্ডব। এবার ছটপুজোয়ও সেই একই চিত্র ধরা পড়ল। সোমবার বিকেল থেকেই বর্ধমান শহরের রাস্তায় দেখা গিয়েছে পণ্যবাহী গাড়িতে বোঝাই করা একের পর এক ডিজে বক্স। প্রতিটি গাড়ি থেকে একসঙ্গে বেজেছে কর্ণভেদী শব্দ। উৎসবের আনন্দের সঙ্গে মিশে গেছে শব্দদূষণের তীব্রতা, যা সাধারণ মানুষের জন্য হয়ে উঠেছে অসহনীয়।
বর্ধমান শহরের প্রাণকেন্দ্র কার্জন গেট চত্বর থেকে জিটি রোড ধরে সারি সারি ডিজে-বক্স বোঝাই গাড়ি যেতে দেখা গিয়েছে। দামোদর নদের ঘাট সংলগ্ন এলাকায়ও ডিজের দাপটে সাধারণ মানুষ অতিষ্ঠ। প্রচণ্ড ভিড়ের মধ্যে যাতায়াত করাই হয়ে উঠেছিল কঠিন। তার উপর উচ্চস্বরে ডিজে সাউন্ডে অনেকে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। শিশুদের কান চেপে ধরেছিলেন বাবা-মায়েরা। এক মা, তানিয়া সাউ, বললেন, “উৎসবের আনন্দে সবাই মেতে উঠেছে ঠিকই, কিন্তু এই ডিজের আওয়াজে বাচ্চার কান ফেটে যাওয়ার জোগাড়। কান চেপে ধরে দূরে সরে যাচ্ছি।”
শহর সংলগ্ন পালা ও শ্রীরামপুর এলাকাতেও একই ছবি। দামোদর নদের ঘাটে যাওয়ার পথে লাইন দিয়ে ভ্যান, পিকআপ ভ্যান, লরি, ট্রাক্টরে বোঝাই করে আনা হয়েছিল বিশাল ডিজে বক্স। তার তালে মত্ত যুবকরা নেচে চলেছে, আর সেই শব্দে পথচলতি মানুষ নাজেহাল। অনেকে পুজো দিতে এসেও সমস্যায় পড়েন, বিশেষ করে বয়স্ক ও শিশুদের নিয়ে আসা পরিবারগুলো। গ্রামের বহু মানুষ অভিযোগ করেছেন, শব্দ তাণ্ডবে তাঁরা তিতিবিরক্ত, কিন্তু প্রতিবাদ করতে গেলে অশান্তির আশঙ্কায় কেউ মুখ খোলেননি।
এক স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, “প্রতিবাদ করলে ঝামেলা হবে, তাই চুপ থাকাই ভালো। উৎসবে কেউ ঝগড়ায় জড়াতে চায় না।” তবে পুলিশ দাবি করেছে, শব্দবাজি ও ডিজের তাণ্ডব রুখতে যথেষ্ট ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল। তবুও বাস্তবে রুখে রাখা গেল না শব্দদানবকে—বর্ধমানের ছটপুজো শেষ হয়েছে কানফাটানো আওয়াজের মধ্যেই।



















