হাওড়া – ছট পুজো উপলক্ষে বিপুল যাত্রীর চাপ সামলাতে বিহারমুখী যাত্রীদের সুবিধার্থে পূর্ব রেল চালু করেছে একাধিক অতিরিক্ত ট্রেন। হাওড়া স্টেশনে তৈরি করা হয়েছে বিশেষ ক্যাম্প, যেখানে যাত্রীদের বসার ব্যবস্থা ও টিকিট কাউন্টার রাখা হয়েছে। তবে এই উদ্যোগকে ঘিরেই শুরু হয়েছে রাজনৈতিক বিতর্ক। তৃণমূল কংগ্রেসের অভিযোগ, বিহার বিধানসভা ভোটের আগে এই পদক্ষেপ আসলে কেন্দ্রীয় সরকারের রাজনৈতিক কৌশল, বিহারী ভোটারদের খুশি করার চেষ্টা।
রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রতিবছরের মতো এবারও ছট পুজো উপলক্ষে অতিরিক্ত ট্রেন চালানো হচ্ছে। তবে এবার প্রথমবার হাওড়া স্টেশনের মধ্যে অস্থায়ী ‘হোল্ডিং এরিয়া’ বা বিশেষ ক্যাম্প তৈরি করা হয়েছে, যেখানে যাত্রীরা ট্রেনের অপেক্ষায় বসে থাকতে পারবেন এবং প্রয়োজনে সেখানেই টিকিট সংগ্রহ করতে পারবেন।
পূর্ব রেলের হাওড়া ডিভিশনের ডিআরএম বিশাল কাপুর জানান, “ছট উৎসবের জন্য বর্তমানে ২০টি দূরপাল্লার ট্রেন চলছে। হোল্ডিং এরিয়াতে যদি অতিরিক্ত যাত্রী থাকে, তাঁদের জন্য সঙ্গে সঙ্গে স্পেশাল ট্রেনের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। যাত্রীদের বসার ও টিকিট কাটার সুবিধা ছাড়াও স্টেশন চত্বরে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।”
যদিও রেল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এটি সম্পূর্ণ প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত—যাত্রীদের ভোগান্তি কমাতেই এই ব্যবস্থা। তবে রাজনৈতিক মহলে উঠছে প্রশ্ন, এত বছর ছট পুজোর সময় কখনও ক্যাম্পের ব্যবস্থা করা হয়নি, অথচ এবার কেন? সামনে বিহার বিধানসভা নির্বাচন বলেই কি এই বিশেষ উদ্যোগ?
এই প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলে ডিআরএম বিশাল কাপুর বলেন, “রেল একটি পেশাদার সংস্থা। আমরা যাত্রীদের পরিষেবা নিশ্চিত করতে কাজ করি। রাজনৈতিক বিষয়ে কোনও মন্তব্য করব না।”
অন্যদিকে, রাজ্যের খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ দফতরের মন্ত্রী অরূপ রায় অভিযোগ তুলেছেন, “ভোটের আগে বিহারীদের খুশি করার জন্যই কেন্দ্রীয় সরকার এই ব্যবস্থা করেছে। এটা নিছক রাজনৈতিক গিমিক। রাজ্য সরকার ইতিমধ্যেই ছট উপলক্ষে দু’দিনের ছুটি ঘোষণা করেছে, গঙ্গার ঘাটগুলিকে সংস্কার করা হচ্ছে, আলো-ব্যবস্থা বাড়ানো হয়েছে। রেলের এই ক্যাম্প করে আসলে তেমন কোনও সুবিধা হবে না।”
রাজনৈতিক মহলে জল্পনা তুঙ্গে—ছট পুজোকে ঘিরে কেন্দ্র ও রাজ্যের এই টানাপোড়েন কি বিহার ভোটের আগে নতুন করে উত্তেজনা ছড়াবে? আপাতত রেলের তরফে বলা হয়েছে, যাত্রী সুরক্ষা ও আরামদায়ক যাত্রা নিশ্চিত করাই তাদের একমাত্র লক্ষ্য।




















