কলকাতা – ভরদুপুরে গোলপার্কের গেস্ট হাউসে স্কুলছাত্রীকে গণধর্ষণ করল তারই তিন বন্ধু! খাস দক্ষিণ কলকাতার বুকে এমনই অভিযোগ ওঠায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। জানা গিয়েছে, হেরম্ব চন্দ্র (সাউথ সিটি) কলেজ সংলগ্ন এক গেস্ট হাউসে ‘পার্টি’ করতে ডাকা হয়েছিল ওই নাবালিকাকে। সেখানে তাকে মদ খাইয়ে বেহুঁশ করে চলে গণধর্ষণ।তোলা হয়েছিল ভিডিও। দীর্ঘক্ষণ যৌন নির্যাতনের পর অ্যাপ-বাইকে ওই ছাত্রীকে বাড়ি ছেড়ে যায় ওই তিন বন্ধু। গত বছর ডিসেম্বর মাসে ঘটনাটি ঘটলেও ভয়ে অভিযোগ জানানোর সাহস দেখাননি নির্যাতিতার মা। ছাত্রীর বাবা লন্ডন থেকে ফিরে গোটা ঘটনা জেনে পুলিসের দ্বারস্থ হন। সোমবার রাতেই রবীন্দ্র সরোবর থানায় অভিযোগ দায়ের করে পরিবার। তার ভিত্তিতেই রুজু হয় গণধর্ষণের মামলা। ওই তিন বন্ধুকে গ্রেপ্তার করে পুলিস। ধৃতদের মধ্যে দু’জন সদ্য উচ্চ মাধ্যমিক পাস করেছে। অন্যজন স্কুল ছুট।
সোশ্যাল মিডিয়াতেই ওই তিনজনের সঙ্গে বন্ধুত্ব হয়েছিল ওই ছাত্রীর। নির্যাতিতার মা অভিযোগপত্রে জানিয়েছেন, মেয়েকে সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটে একটি গ্রুপে যুক্ত করা হয়েছিল। সেখান থেকেই ওই তিন অভিযুক্তের সঙ্গে তার পরিচয়। বাস্তবে একে অপরের মুখোমুখি না হলেও নিত্য ‘চ্যাট’ করত। বিষয়টি জানতে পেরে একবার মেয়ের মোবাইল কেড়ে নিয়েছিলেন মা। এরপর থেকে মায়ের ফোন থেকেই ওই তিন বন্ধুর সঙ্গে কথা বলত ওই ছাত্রী। একদিন সকলে মিলে একসঙ্গে সিনেমা দেখা ও মধ্যাহ্নভোজের প্রস্তাব দেওয়া হয় নির্যাতিতাকে। ঠিক হয় ২০২৪ সালের ১৯ ডিসেম্বর দুপুরে তারা দেখা করবে দক্ষিণ কলকাতার একটি শপিং মলে। সেখানে লাঞ্চ সেরে তারপর বাকি ‘মজা’।
পুলিস জানিয়েছে, সেদিন দুপুর দেড়টা-দু’টো নাগাদ মেয়েকে ওই শপিং মলে ছাড়তে আসেন মা। তাঁর অভিযোগ, সেখান থেকে একটি অ্যাপ ক্যাব বুক করে মেয়েকে নিয়ে যাওয়া হয় সাউথ সিটি কলেজ সংলগ্ন একটি গেস্ট হাউসে। সেখানে ‘পার্টি’ করার জন্য দু’টি রুম আগে থেকে অনলাইনে ‘বুক’ করা ছিল। মদ কেনার জন্য বাবার কাছ থেকে টাকা চাইতে চাপ দেওয়া হয় কিশোরীকে। বিদেশ থেকেই মেয়ের বন্ধুর ই-ওয়ালেটে ২৫০০ টাকা পাঠান তিনি। সেই টাকায় ঘরভাড়া মেটায় অভিযুক্তরা। এরই মধ্যে ছাত্রীর ডাকে সাড়া দিয়ে আরও এক বন্ধু আসে গেস্ট হাউসে। কিন্তু পরিবেশ ভালো না লাগায় সে বেরিয়ে যায়। এরপর রুমে ঢুকে কিশোরীকে জোর করে মদ্যপান করায় তিন অভিযুক্ত। তারপর তাকে পাশের ঘরে টেনে নিয়ে গিয়ে গণধর্ষণ করে বলে অভিযোগ। রুমের দরজা বন্ধ করে দেওয়ায় সে বেরতে পারেনি। এমনকী বাথরুমে ঢুকে পড়েও রেহাই মেলেনি। সন্ধ্যায় হোটেল না ছাড়া পর্যন্ত সব ঘটনা ক্যামেরাবন্দি করে রাখে ওই তিন বন্ধু।
