নন্দীগ্রামে দাঁড়িয়ে এবার হুঙ্কার ছাড়লেন শুভেন্দু, কী বললেন? শীতের সকালে ফের উত্তপ্ত নন্দীগ্রাম। শহিদ শ্রদ্ধাঞ্জলি দিবস কর্মসূচিতে গাড়িতে চেপে যোগ দিতে যাচ্ছিলেন নন্দীগ্রামের বিজেপি বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারী। তখনই তাঁকে লক্ষ্য করে কটূক্তি করে তৃণমূল বলে অভিযোগ। যদিও এসবে কান দিতে চাননি রাজ্যের বিরোধী নেতা শুভেন্দু অধিকারী। তিনি স্পষ্ট বলেন, তৃণমূল গতবারও নোংরামো করে তাঁকে আটকানোর চেষ্টা করেছে। লাভ হয়নি। এ নিয়ে এখনও মুখ খোলেনি তৃণমূল।
শুক্রবার সকালে ভাঙাবেড়া ব্রিজের কাছে শহিদ শ্রদ্ধাঞ্জলি অনুষ্ঠানের আয়োজন করে বিজেপি। নেতৃত্বে অবশ্যই শুভেন্দু অধিকারী। সেখানে শহিদ মিনারে বক্তৃতা দেন শুভেন্দু। তার ৫০ মিটার দূরত্বে শহিদদের শ্রদ্ধা নিবেদনের কর্মসূচি আয়োজন করেছিল তৃণমূলও। বিজেপি–র অনুষ্ঠানে যোগ দিতে যাওয়ার সময়ই কটাক্ষের শিকার হন শুভেন্দু বলে অভিযোগ। প্রসঙ্গত, তৃণমূল এবং বিজেপি, দুই দলের অনুষ্ঠানেই মানা হয়নি কোভিডবিধি। সেই নিয়ে অভিযোগ উঠেছে। বেশিরভাগেরই মুখে ছিল না মাস্ক।
শুভেন্দু বলেন, ওঁদের বুকের উপর দাঁড়িয়ে শহিদ দিবস পালন করলাম নন্দীগ্রামে। শুক্রবার সকালে নন্দীগ্রামে শহিদ দিবসে পালন করে তৃণমূলকে চড়া সুরে আক্রমণ শানালেন বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারী। তিনি এদিন শহিদ দিবসের মঞ্চ থেকে হুঙ্কার ছাড়লেন, তৃণমূলের ৮০ ভাগ ইতিমধ্যেই ফাঁকা হয়ে গিয়েছে। বাকি যে কজন আছে, তাঁদেরও ফাঁকা করে দেব। গত বছর শুভেন্দু অধিকারীকে শহিদ দিবস পালন করেত দেয়নি তৃণমূল। শহিদ মঞ্চে তাঁকে মাল্যদান করতে দেওয়া হয়নি। তাঁকে আগের দিন রাতে এসে মাল্যদান করে যান তিনি। এক বছর পর নন্দীগ্রামের বিধায়ক হয়ে তিনি ফের শহিদ দিবস পালন করলেন। কড়া ভাষায় আক্রমণ করলেন তৃণমূলকে।
আর ও পড়ুন শীত কি বিদায় ঘন্টা বাজিয়ে ফেললো? কি বলছে আবহাওয়া দফতর ?
২০০৭ সালের ৭ জানুয়ারি নন্দীগ্রামে ভূমি আন্দোলনে শহিদ হয়েছিলেন তিন জন। শেখ সেলিম, বিশ্বজিৎ মাইতি ও ভরত মণ্ডল শহিদ হন ভাঙাবেড়াতে। এদিন সাত সকালে সেখানে উপস্থিত হয়ে শহিদ বেদিতে মাল্যদান করেন নন্দীগ্রামের বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারী। তিনি চড়া সুরে বলেন, আমাদের গতবার শহিদ দিবস পালন করতে দেওয়া হয়নি, ওঁদের বুকে দাঁড়িয়েই এবার শহিদ দিবস পালন করে গেলাম।
শুভেন্দু বলেন, শহিদ দিবস পালনের অধিকার সবার আছে। এখানকার মানুষ আমার সঙ্গে আছে। ওরা ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে। দেবব্রত মাইতি কেসে ওঁদের ৮০ ভাগ ফাঁকা হয়ে গিয়েছে। যে ক’জন অবশিষ্ট রয়েছে, তাদেরকেও ফাঁকা করে দেব। এ ব্যাপারে আমি ওস্তাদ আছি। নন্দীগ্রামের মানুষ সবাই আমার সঙ্গে রয়েছেন, ওঁদের সঙ্গে পুলিশ ছাড়া কেউ নেই।
এদিন তিনি দেবব্রত মাইতি খুনের ঘটনা নিয়েও মুখ খোলেন। তিনি বলেন, দেবব্রত মাইতি মার্ডির কেসে গতকালই চার্জশিট জমা পড়েছে। এটা খুবই আনন্দের কথা। মোট ১১ জনের নামে চার্জশিট দিয়েছে সিবিআই। যাঁদের নামে চার্জশিট জমা পড়েছে, তাঁদের মধ্যে গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান রয়েছেন আবার প্রধানের স্ত্রীও রয়েছেন। আর যাঁরা আছেন, তাঁরা সব সাধারণ মানুষের টাকা আত্মসাৎ করে বড়লোক হয়েছেন। প্রত্যেকে ৫-৬ একর করে জমি করেছে, পাকা বাড়ি করেছে। এই কেসে সব তৃণমূলের লোক ফাঁকা হয়ে গিয়েছে। ওদের নিশ্চিহ্ন করতে বেশি বাকি নেই।
লক্ষ্মণ শেঠকে নিয়ে শুভেন্দু অধিকারী এদিন বলেন, গুরুজনেদের কথায় কুকুর মানুষের পায়ে কামড়ায়। কখনও মানুষকে কুকুরের পায়ে কামড়াতে নেই। ভালো কাজ দেখে লোকে শেখে। তেমনই খারাপ কাজকে পরিহার করাই উচিত। স্থানীয় যাঁরা বামপন্থী রয়েছেন, তাঁরা সবাই খারাপ নন। কিন্তু লক্ষ্ম শেঠ যদি তৃণমূলে যোগ দেন, তবে নন্দীগ্রামের তৃণমূলকর্মীরা কেউ আর তৃণমূলের সঙ্গে থাকবেন না। এদিন লক্ষ্মণ শেঠকে নিয়ও মুখ খুলেছেন শুভেন্দু অধিকারী। তিনি বলেন, যাঁর হাতে রক্ত লেগে রয়েছে, সেই লক্ষ্মণ শেঠ ওখন আনঅফিসিয়ালি তৃণমূলের লোক।