ছেলে বউমার অত্যাচারে বিষ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করলেন বৃদ্ধ শ্বশুর শ্বাশুড়ি। উল্লেখ্য দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানার অবসরপ্রাপ্ত কর্মী চিত্তরঞ্জন দাস ও লিপিকা দাস, ছেলে ও বৌমার নিত্যদিনের অশান্তি সহ্য করতে না পেরে বিষ খেয়ে আত্মঘাতী হওয়ার চেষ্টা করেন। ঘটনায় মারা যান শ্বশুর চিত্তরঞ্জন দাস(৭২), শ্বাশুড়ি লিপিকা দাস আশঙ্কাজনক অবস্থায় দুর্গাপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
ঘটনার পরে প্রতিবেশীরা দম্পতির ছেলে ও বৌমার বিরুদ্ধে ক্ষোভে ফেটে পড়েন। বৌমা সোমা দাসকে দেখে মারমুখী হয়ে ওঠেন প্রতিবেশীরা। দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানার অবসরপ্রাপ্ত কর্মী চিত্তরঞ্জন দাস তার স্ত্রী লিপিকা দাস তাদের একমাত্র পুত্রসন্তান সঞ্জয় দাস, পুত্রবধু সোমা দাস ও এক নাতিকে নিয়ে রানাপ্রতাপ রোডের ইস্পাত কারখানার আবাসনের দীর্ঘদিনের বাসিন্দা।
প্রতিবেশীদের অভিযোগ, সঞ্জয় ও সোমা দীর্ঘদিন নিজেদের মধ্যেও যেমন অশান্তি করত, পাশাপাশি চিত্তরঞ্জনবাবু ও লিপিকা দেবীকেও মানসিকভাবে নির্যাতন করতেন। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ নির্যাতন সহ্য করতে না পেরেই গতকাল রাতে দাস দম্পতি বিষপান করেন। পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার সকালে বেলা হলেও বৃদ্ধ দম্পতি দরজা না খোলায় বউমা সোমা ও ছেলে সঞ্জয়ের সন্দেহ হওয়ায় প্রতিবেশীদের খবর দিলে দম্পতির ঘরের দরজা ভেঙে দুজনকে বের করে দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানা হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা চিত্তরঞ্জন দাসকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
আরও পড়ুন – ৮ বছর আগে খুনের মামলায় গ্রেফতার ২
আশঙ্কাজনক অবস্থায় লিপিকাদেবীকে দুর্গাপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ঘটনায় পুলিশ মৃত চিত্তরঞ্জন দাসের দেহ দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে পাঠায় ময়নাতদন্তের জন্য। এদিন প্রতিবেশীরা অভিযোগ করে বলেন, সঞ্জয় ও সোমা দীর্ঘদিন ধরেই নিজেদের মধ্যে অশান্তি করত। এরা অশান্তি করে অত্যাচার চালাত বৃদ্ধ ও বৃদ্ধার ওপরে। ঘটনাস্থলে সোমা দাসের বাবা, মা আত্মীয়রা এলে প্রতিবেশীরা মারমুখী হয়ে ওঠে। এলাকার স্থানীয় মহিলারাও প্রতিবাদে গর্জে ওঠেন।
তাদের অভিযোগ, সোমা দাস দীর্ঘদিন ধরে অশান্তি করত। সে ঘরের কোনও কাজ করত না। সোমা প্রতিবেশীদের সাথে মিশত না। এই ঘটনায় রীতিমতো চাঞ্চল্য ছড়ায় এলাকায়। ঘটনার পর সোমা দাস তার বাপের বাড়ি দয়ানন্দ রোডে চলে গেলে প্রতিবেশীরা আরও ক্ষুব্ধ হয়ে পড়েন। অভিযুক্ত বৌমা সোমা দাসের বাবা মিহির কুমার বিশ্বাস বলেন, ‘আমার জামাই সঞ্জয় দাস এই ঘটনার জন্য দায়ী।
আমার মেয়েকে প্রচন্ড জ্বালাতন করত আমার জামাই। আমরা সব সহ্য করেছি দীর্ঘ ১৩ বছর। আমার জামাই সেভাবে কোন কাজ করত না। আমার মেয়েকে শ্বশুরবাড়িতে ঠিকমতো খেতেও দেওয়া হতো না’। এদিন বিকেলে চিত্তরঞ্জন দাসের মৃতদেহ তার বাড়িতে আসতেই আবারো কার্যত ক্ষোভে ফেটে পড়েন এলাকার বাসিন্দারা।