দ্বিতীয়ার রাতেই জনজোয়ার নামলো রাজপথে, উঁকি দিচ্ছে করোনা সংক্রমণের আশঙ্কা। দ্বিতীয়ার রাতেই জনজোয়ার নামলো শহর কলকাতায়। শুক্রবার, দ্বিতীয়ার সন্ধ্যাতেই রাজপথে মানুষের ঢল নামলো। মণ্ডপে ঢুকতে না-পারলেও বাইরে থেকে দর্শন সারতেই ভিড় বেড়েছে কলকাতার রাস্তায় রাস্তায়। আর তাতেই পুজোর মরসুমে সিঁদুরে মেঘ দেখতে শুরু করেছেন সংক্রমণ বিশেষজ্ঞ ও চিকিৎসকেরা। তাঁদের আশঙ্কা, পুজোই করোনার ‘সুপার স্প্রেডার’ হয়ে উঠবে না তো!
মানুষকে করোনা বিধি মেনে চলার পরামর্শ দেওয়ার পাশাপাশি ভিড়ের জন্য পুজোর উদ্যোক্তাদেরই দায়ী করছেন চিকিৎসকেরা। কারণ, মণ্ডপে প্রবেশ করতে না-পারলেও রাস্তার বাহারি আলো, থিম-প্যান্ডেলের আকর্ষণে জনতাকে টেনে আনার পথ তো উদ্যোক্তারাই দেখিয়েছেন। যদিও রাস্তায় বেরোনো অনেকেরই যুক্তি, তাঁদের তো করোনা প্রতিষেধকের দ্বিতীয় ডোজ় হয়ে গিয়েছে!
বিপদ এড়াতে স্বাস্থ্য দফতরের পরামর্শ: উৎসবে জমায়েত-শোভাযাত্রা এড়িয়ে এ বারের পুজো পরিবারেই সীমাবদ্ধ রাখা দরকার। দল বেঁধে সিঁদুরখেলা না-হয় এ বার না-ই হল। ভিড় থেকে বিশেষত শিশু, বৃদ্ধ, অন্তঃসত্ত্বা ও অসুস্থদের দূরে রাখুন। টিকার জোড়া ডোজ়ই রক্ষাকবচ, এক শ্রেণির মানুষের এই ধারণা মারাত্মক ভুল, জানান ডাক্তাররা।
কারণ টিকার পরেও করোনার কোপে পড়া মানুষের সংখ্যা কম নয়। চিকিতসকদের একটি অংশ মনে করছেন, টিকা নেওয়া জনগণের মধ্যে কোভিডের উপসর্গ এত কম থাকছে যে বোঝা যাচ্ছে না। এক বা দু’দিনের জ্বরে আরটিপিসিআর পরীক্ষাও করাচ্ছেন না কেউ। এক বা দু’দিনের জ্বর কমে গেলেও অনেকে কিন্তু কোভিড পজ়িটিভ হয়েই থেকে যাচ্ছেন। সেই ব্যক্তি মণ্ডপে ঘুরলে অন্যদের মধ্যেও সংক্রমণ ছড়াবেন। গত বছর ছিলো বয়স্কদের রক্ষার পুজো এটা। এ বার এটা শিশুদের রক্ষার পুজো। তাই যাঁরা দায়িত্বজ্ঞানহীন ভাবে সন্তানকে নিয়ে মণ্ডপে ভিড় করছেন, তাঁরা ভুলে যাচ্ছেন, নিজেদের টিকা হলেও সন্তানের কিন্তু সেটা হয়নি।
আর ও পড়ুন শাহরুখ পুত্র আরিয়নের গ্রেফতারি নিয়ে কী বললেন রবিনা ট্যান্ডন
পুজোর ভিড়ের সংমিশ্রণে নতুন কোনও স্ট্রেন প্রকট হওয়ার আশঙ্কা উড়িয়ে দিচ্ছেন না সংক্রমণ বিশেষজ্ঞরা। তারা মনে করছেন, “মানুষের মধ্যে করোনা পরীক্ষার ব্যাপারে অনীহা তৈরি হয়েছে। এটা ঠিক নয়। কেউ তো নতুন স্ট্রেনে আক্রান্ত হয়ে থাকতেই পারেন। ভিড়ে মিশে সেটা আরও মারাত্মক ভাবে ছড়াতে পারে। তাই পুজোটা নিজের পাড়ায় কাটিয়ে, আগামী দিনে স্বাভাবিক কাজের পরিবেশ তৈরি এবং শিশুদের স্কুলে যাওয়ার পথ সুগম রাখার কথাটাই ভাবা উচিত সকলের।”
রাজ্যের কোথায় কোথায় করোনা ঘাপটি মেরে রয়েছে, তা জানতে সেন্টিনেল সার্ভে শুরু করেছে স্বাস্থ্য দফতর। সম্প্রতি ষষ্ঠ দফার সেই সমীক্ষার রিপোর্টে দেখা যাচ্ছে, দু’টি জেলায় পজ়িটিভিটি রেট আবার চারের উপরে, দু’টি জেলায় তা তিনের বেশি।