বিনোদন – ভারতীয় ক্রিকেটের ‘রানমেশিন’ বিরাট কোহলির আজ (৫ নভেম্বর) জন্মদিন। ৩৭ বছরে পা দিলেন এই আধুনিক যুগের কিংবদন্তি ক্রিকেটার। তিন ফরম্যাটের মধ্যে টি-টোয়েন্টি ও টেস্ট থেকে অবসর নিলেও, এখনও ওডিআই ক্রিকেটে সক্রিয় রয়েছেন তিনি। ভক্তদের প্রত্যাশা—২০২৭ সালের ওডিআই বিশ্বকাপে আবারও টিম ইন্ডিয়ার জার্সিতে তাঁকে দেখা যাবে। এই বিশেষ দিনে ফিরে দেখা যাক কোহলির চারটি ইনিংস, যা ভারতীয় ক্রিকেট ইতিহাসে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে।
২০১২ সালে হোবার্টে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে কোহলির ১৩৩ রানের ইনিংস আজও ক্রিকেটপ্রেমীদের মনে গেঁথে আছে। সিবি ট্রাই-সিরিজে শ্রীলঙ্কা প্রথমে তোলে ৩২০ রান। ভারতের সামনে ছিল ৪০ ওভারের মধ্যে ৩২১ রানের চ্যালেঞ্জ, যা প্রায় অসম্ভব। কিন্তু কোহলি সেদিন ছিলেন অন্য মেজাজে—মাত্র ৮৬ বলে ১৩৩ রানে অপরাজিত থেকে ভারতকে জয় এনে দেন এবং বোনাস পয়েন্টও নিশ্চিত করেন। সেই ইনিংস থেকেই শুরু হয়েছিল তাঁর ‘চেজ মাস্টার’ পরিচয়।
একই বছর ঢাকায় এশিয়া কাপে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে এল আরেকটি মহাকাব্যিক ইনিংস। পাকিস্তান তুলেছিল ৩২৯ রান, কিন্তু কোহলির ব্যাট যেন আগুন ঝরাচ্ছিল। সচিন তেন্ডুলকরের সঙ্গে দুর্দান্ত জুটি গড়ে ১৮৩ রানের ঐতিহাসিক ইনিংস খেলেন তিনি, যা আজও তাঁর সর্বোচ্চ ওডিআই রান। ভারতের ৭ উইকেটে জয়ে তিনি ছিলেন মূল স্থপতি। ক্রিকেট ইতিহাসে এটি এখনও অন্যতম সেরা ইনিংস হিসেবে বিবেচিত।
২০১৪ সালে অস্ট্রেলিয়ায় টেস্ট ম্যাচে অধিনায়ক কোহলির লড়াই ক্রিকেটবিশ্বকে মুগ্ধ করেছিল। অ্যাডিলেডে লক্ষ্য ছিল ৩৬৪ রান—প্রায় অসম্ভব এক টার্গেট। কিন্তু কোহলি ১৪১ রানের লড়াকু ইনিংস খেলে দলকে লড়াইয়ে রাখেন। যদিও ভারত সামান্য ব্যবধানে হারে, তবে তাঁর ব্যাটিং আত্মবিশ্বাস ও আগ্রাসনের প্রতীক হয়ে ওঠে। সেই ইনিংস থেকেই শুরু হয় কোহলির অধিনায়কত্বের নতুন যুগ।
২০১৮ সালে ইংল্যান্ড সফর ছিল তাঁর জন্য আত্মপ্রমাণের মঞ্চ। ২০১৪ সালে ব্যর্থতার দাগ মুছে ফেলে বার্মিংহামের মাটিতে তিনি খেললেন অনবদ্য ১৪৯ রানের ইনিংস। কঠিন কন্ডিশনে ব্যাট হাতে কোহলির দৃঢ়তা ও মনোসংযোগ ভারতের জয়ের ভিত গড়ে দেয়। সেই ইনিংস প্রমাণ করে দেয়—চাপের মুখেও কোহলি মানসিকভাবে কতটা অটল।
বিরাট কোহলির এই চারটি ইনিংস কেবল পরিসংখ্যান নয়, একেকটি গল্প—জেদ, আবেগ আর নেতৃত্বের প্রতীক। তাই হয়তো আজও তিনি শুধুই এক ক্রিকেটার নন, কোটি ভক্তের কাছে এক অনুভব—‘কিং কোহলি’।



















