ই-কমার্স জায়ান্ট অ্যামাজনকে ২০০ কোটি টাকার জরিমানা করেছে ভারত। ভারতীয় ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ফিউচার গ্রুপের সঙ্গে ব্যবসা-সংক্রান্ত তথ্য গোপন করার অভিযোগে অ্যামাজনকে এ জরিমানা করে ভারতের প্রতিযোগিতা কমিশন ‘সিসিআই’। সিসিআই বলছে, একাধিক নিয়ম লঙ্ঘন এবং ইচ্ছাকৃতভাবে তথ্য গোপন করায় অ্যামাজনকে জরিমানার পাশাপাশি চুক্তি স্থগিত করা হয়েছে। বলা হচ্ছে, এশিয়ার শীর্ষ ধনকুবের মুকেশ আম্বানির রিল্যায়েন্স রিটেইল ভেনচারসের সঙ্গে প্রায় ২৫ হাজার কোটি টাকার প্রস্তাবিত চুক্তির মুখে অ্যামাজনকে এমন জরিমানা গুনতে হচ্ছে।
বাণিজ্যিক নিয়ামক সংস্থা সিসিআই রায় দিয়েছে, মার্কিন ই-কমার্স গ্রুপ দুই বছর আগে ভারতীয় খুচরা বিক্রেতা ফিউচার গ্রুপে বিনিয়োগের বিষয়ে নিয়ন্ত্রকের অনুমোদন চাওয়ার সময় বেশ কিছু তথ্য চেপে গিয়েছিল। কম্পিটিশন কমিশন অফ ইন্ডিয়া (CCI)-র এই রায়ের ফলে ফিউচার গ্রুপের সঙ্গে অ্যামাজ়নের এক আইনি লড়াইয়ের পরিবেশ তৈরি হতে পারে। উল্লেখ্য, ২০১৯ সালে ফিউচারল কুপনস লিমিটেডের ৪৯ শতাংশ শেয়ার কিনেছিল অ্যামাজ়ন। এর পাশাপাশি ফিউচার রিটেইলের ৭.৩ শতাংশ ইকুইটির মালিকানা রয়েছে অ্যামাজ়নের হাতে। সিসিআই তার ৫৭ পাতার রায়ে জানিয়েছে, অ্যামাজন ২০১৯ সালে চুক্তির পিছনে তার আসল উদ্দেশ্য এবং তথ্য প্রকাশ করেনি।
এমতাবস্থায়, চুক্তিটি আবার দেখা উচিত এবং ততক্ষণ পর্যন্ত চুক্তিতে দেওয়া অনুমোদন স্থগিত রাখা দরকার। সেই সঙ্গে ২০০ কোটি টাকা জরিমানাও করা হয়েছে অ্যামাজনের ওপর। ফিউচার কুপন প্রাইভেট লিমিটেড এবং কনফেডারেশন অফ অল ইন্ডিয়া ট্রেডার্সের দ্বারা অ্যামাজনের বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছিল। অভিযোগে বলা হয়েছিল, অ্যামাজন ফিউচার কুপনের ৪৯ শতাংশ শেয়ার কিনে ফিউচার রিটেলকে পরোক্ষভাবে প্রভাবিত করার উদ্দেশ্য গোপন করেছিল। সুপ্রিম কোর্টের আদেশের দুই সপ্তাহ পরে সিসিআইয়ের আদেশ আসে, যেখানে আদালত অ্যামাজনকে এই বিষয়ে তার প্রতিক্রিয়া জানাতে বলেছিল।
আর ও পড়ুন অভিযোগ থাকলে ফুটেজ প্রকাশ্যে আনুন, কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে, বললেন অভিষেক
ফিউচার কুপন মার্চ মাসে অ্যামাজনের বিরুদ্ধে আবেদন করেছিল, যার উপর আজ সিদ্ধান্ত এসেছে। প্রতিবেদন অনুসারে, অ্যামাজন এর আগে যুক্তি দিয়েছিল যে সংস্থার দেওয়া অনুমোদন প্রত্যাহার করার কোনও আইনি অধিকার নেই। অ্যামাজন ফিউচার গ্রুপের একটি কোম্পানি ফিউচার কুপনের ৪৯ শতাংশ শেয়ার কিনেছে। এর জন্য, তারা ২০১৯ সালে ফিউচার গ্রুপের সাথে ১৪৩১ কোটি টাকার চুক্তি করেছিল।
ফিউচার কুপনের হাতে ফিউচার রিটেলের ১০ শতাংশ রয়েছে। এই সময়, উভয় সংস্থার মধ্যে একটি চুক্তি ছিল যে আমাজনের সম্মতি ছাড়া ফিউচার রিটেলের ব্যবসা অন্য কোনও পক্ষের কাছে বিক্রি করা হবে না। তবে ২০২০ সালে, কিশোর বিয়ানি এই ব্যবসাটি রিলায়েন্সের কাছে ২৪ হাজার ৫০০ কোটি টাকায় বিক্রি করে দেন। এর পরে অ্যামাজন চুক্তি লঙ্ঘনের অভিযোগ করে।