খেলা – জাতীয় ক্রীড়া বিল আইনে পরিণত হলে ভারতের ক্রীড়া প্রশাসনে বড় পরিবর্তনের সম্ভাবনা দেখা দিচ্ছে। বিশেষ করে, ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের (BCCI) প্রেসিডেন্ট-সহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ পদে নির্বাচিত হওয়ার শর্ত শিথিল হয়ে যেতে পারে বলেই ধারণা করছেন ক্রীড়া মহলের বিশ্লেষকরা। এর ফলে বোর্ড পরিচালনার কাঠামো এবং নির্বাচনী যোগ্যতার সংজ্ঞা নতুন করে গঠিত হতে পারে।
ইতিমধ্যে প্রস্তাবিত ক্রীড়া বিলে দু’টি গুরুত্বপূর্ণ সংশোধন আনা হয়েছে, যা আলোড়ন তুলেছে ক্রীড়া প্রশাসনে। প্রথম সংশোধনে বলা হয়েছে, কেবলমাত্র সেই সমস্ত ক্রীড়া সংস্থাই ‘রাইট টু ইনফরমেশন অ্যাক্ট’ (RTI)-এর আওতায় পড়বে, যারা ভারত সরকারের কাছ থেকে আর্থিক অনুদান গ্রহণ করে। অর্থাৎ, যারা সরকারি সাহায্য নেয় না, তাদের তথ্য জানার অধিকার আইনের আওতায় পড়ার বাধ্যবাধকতা থাকবে না। এই নিয়মে সবচেয়ে বেশি লাভবান হতে পারে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড, যেহেতু তারা মূলত স্বনির্ভর এবং সরকারি অনুদান নেয় না। ফলে RTI-এর আওতা থেকে BCCI সম্পূর্ণরূপে বাইরে থাকছে।
দ্বিতীয় সংশোধনটি আরও গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি জাতীয় ক্রীড়া সংস্থার পদপ্রার্থীদের যোগ্যতা সংক্রান্ত বিধিতে বড়সড় রদবদল এনেছে। প্রাথমিকভাবে প্রস্তাবিত বিলে বলা হয়েছিল, জাতীয় ক্রীড়া সংস্থার প্রেসিডেন্ট, সেক্রেটারি জেনারেল বা কোষাধ্যক্ষ হতে হলে অন্তত দুইবার এক্সিকিউটিভ কমিটির সদস্য হিসেবে কাজ করার অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। কিন্তু সংশোধনের পরে এখন তা কমে হয়েছে মাত্র একবার। এমনকি, এক্সিকিউটিভ কমিটির অভিজ্ঞতাও যদি না থাকে, তবু প্রার্থী যোগ্য বিবেচিত হবেন যদি তিনি নিজ রাজ্যের অনুমোদিত ক্রীড়া সংস্থার প্রেসিডেন্ট, সেক্রেটারি জেনারেল অথবা কোষাধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করে থাকেন।
এই পরিবর্তনগুলোর ফলে বোর্ড প্রশাসনে প্রবেশের পথ অনেকটাই সহজ হতে চলেছে। একদিকে RTI-এর আওতা থেকে রেহাই, অন্যদিকে অভিজ্ঞতার শর্তে শিথিলতা—এই দুই সংশোধন ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের ভবিষ্যৎ গঠন ও নেতৃত্ব নির্বাচন প্রক্রিয়াকে প্রভাবিত করতে চলেছে। জাতীয় ক্রীড়া বিল আইনে পরিণত হলে ভারতের ক্রীড়াঙ্গনে প্রশাসনিক স্বচ্ছতা ও দক্ষতার নতুন দিগন্ত খুলে যাবে বলেই মনে করা হচ্ছে।
