কলকাতা: ঘর তৈরি। তৈরি সব ব্যবস্থাও। কিন্তু সাধারণ মানুষের আড়ালেই হৃষ্টপুষ্ট হয়ে উঠছে মাদ্রাজ ক্রোকোডাইল পার্ক থেকে আসা দু’জোড়া অ্যানাকোন্ডা। সপ্তাহে দু’দিন ছোট সাইজের সাদা ইঁদুর খেয়ে দিব্যি আছে তারা। তবে সাধারণ মানুষেরও কৌতূহল থামছে না। কবে থেকে এই প্রজাতির সাপকে তাঁরা চাক্ষুস করতে পারবেন, তা নিয়ে চিড়িয়াখানায় আসা দর্শকরা ইতিমধ্যেই হা-হুতাশ শুরু করছেন। চিড়িয়াখানার অধিকর্তা আশিস সামন্তের কথায়, ১৫ জুলাইয়ের আশপাশে এই প্রাণীদের জনসমক্ষে আনার চেষ্টা করা হচ্ছে।
নিয়ম মতো যে কোনও নতুন প্রাণী চিড়িয়াখানায় এলেই তাদের বেশ কয়েক সপ্তাহ কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়। অর্থাৎ, আলাদা এবং আড়ালে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়। সেই মতো এই অ্যানাকোন্ডাগুলিকেও কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে। সেখানেই চলছে তাদের আদর আপ্যায়ন। খাওয়া দাওয়া অবশ্য তেমন কিছু নয়। স্রেফ একটি করে সাদা ইঁদুর। তাও আবার রোজ নয়। সপ্তাহে দু’দিন। তবে সেই ইঁদুর দেওয়ারও নানা কায়দা আছে। যে ইঁদুর দেওয়া হয়, তার গড় ওজন ৫০-৭৫ গ্রাম। প্রথমে ইঁদুরের মাথায় বাড়ি দিয়ে সেটিকে অজ্ঞান করা হয়। এরপর সেটিকে অ্যানাকোন্ডার ঘরের সামনে ঝুলিয়ে নাড়ানো হয়। গন্ধ শুঁকে দ্রুত তার কাছে পৌঁছে একেবারে ছোঁ মেরে ইঁদুরকে টেনে নিয়ে চলে যায় তারা। তারপর সেই শিকারকে পুরো পেঁচিয়ে বেশ কিছুক্ষণ একেবারে স্থির থাকে অ্যানাকোন্ডা। শিকার যখন একেবারে নিস্তেজ হয়ে যায়, তখন তাকে ধীরে ধীরে গিলে নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়।
অধিকর্তা বলেন, ইঁদুরকে অজ্ঞান না করলে তাদের দাঁতের দংশনে অ্যানাকোন্ডার সংক্রমণ হতে পারে। তাই কোনও ঝুঁকি নেওয়া হয় না। ১৫-২০ মিনিটের মধ্যেই অ্যানাকোন্ডা ওই খাদ্যকে একেবারে গিলে নেয়। আপাতত ইঁদুরই হচ্ছে এই সরীসৃপের খাদ্য। পরে অবশ্য তালিকায় ছোট ছোট মুরগি দেওয়া হবে। চিড়িয়াখানা সূত্রে জানা গিয়েছে, মাসে অ্যানাকোন্ডাদের জন্য ৩২টি ইঁদুর লাগে। প্রতি ইঁদুর পিছু ৭০-৮০ টাকার মতো খরচ হচ্ছে কর্তৃপক্ষের।
এদিকে, চিড়িয়াখানা এখন ভরা সংসার। কিছুদিন আগেই সাদা বাঘের সঙ্গে সম্বর ও কৃষ্ণসার হরিণ এসেছে। এবার জঙ্গলি কুকুর, রিংটেল লেমুর এবং স্পটবিল পেলিকান আসছে চিড়িয়াখানায়। অধিকর্তার আশ্বাস, শীতের আগেই তারা এসে যাবে। এদের জন্য এখন ঘর তৈরির কাজ শুরু হবে। তা শেষ না করে আনা যাবে না। ভাইজাগের ইন্দিরা গান্ধী জুলজিক্যাল পার্ক থেকে এই প্রাণীগুলি নিয়ে আসা হবে। তার বদলে আলিপুর থেকে দু’টি জেব্রা, দু’টি ওয়াটার মনিটার লিজার্ড এবং একটি মারমোসেট পাঠানো হবে।
জুলাইয়ের মাঝামাঝি চিড়িয়াখানায় প্রকাশ্যে আসবে ৪টি অ্যানাকোন্ডা
জুলাইয়ের মাঝামাঝি চিড়িয়াখানায় প্রকাশ্যে আসবে ৪টি অ্যানাকোন্ডা
Facebook
Twitter
LinkedIn
Email
WhatsApp
Print
Telegram