১৯ নভেম্বর, বাজারে গাজরের দেখা প্রায়ই পাওয়া যায়। বিশেষ করে এই শীতে গাজর বাজারে এবং ঘরে বেশি নজরে পড়বে। গাজর দিয়ে সুস্বাদু খাবারের কথা বলতে গেলে প্রথমেই মনে পড়ে যায় গাজরের হালুয়ার কথা। যা প্রতিটি মানুষেরই খুবই প্রিয়। তারসাথে গাজর দিয়ে নানান সবজি ও স্যালাড তৈরি করা হয়। তাই গাজরের ডিম্যান্ড একটু বেশি, সাথে শীতকালে এর দাম কমে যাওয়ায় মানুষ আরও বেশি গাজরকে কেনে। ছোটবেলায় বড়রা বেশ জোড় করেই গাজর খাইয়ে দিত। আমরা তা মুখ বুঝে খেয়ে নিলেও তার কার্যকারিতা সম্পর্কে তেমন ধারনা ছিল না। প্রতিদিন সকালে একটা গাজরের রস খাওয়া স্বাস্থ্যের পক্ষে খুবই উপকারী। প্রতিদিন গাজরের রস পান করলে দেহের পুষ্টির ঘাটতি দূর হয়, শরী্রে এনার্জি বাড়ে, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে, সেই সঙ্গে মেলে আরও অনেক উপকারিতা। যেমন –
১। ভিটামিনের উৎস
ভিটামিন এ- এর অন্যতম উৎস হল গাজর। গাজরের মধ্যে থাকা বিটা ক্যারোটিন দৃষ্টিশক্তি বাড়াতে সাহায্য করে। চোখের অন্যান্য সমস্যা দূর হয় প্রতিদিন গাজর খেলে।
২। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে
প্রতিদিন এক গ্লাস করে গাজরের রস পান করলে দেহে ভিটামিন এ এবং বিটা-ক্যারোটিন মাত্রা বৃদ্ধি পায়। ফলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।
৩। ক্যানসার প্রতিরোধ করে
হজমের পর খাদ্যের কিছু উচ্ছিষ্ট (ফ্রি র্যাডিকেলস) আমাদের শরাীরে থেকে যায়, যা শরীরের কিছু কোশ নষ্ট করে। অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট জাতীয় খাবার এই ধরনের মৌলের বিরুদ্ধে লড়াই করে। ফলে শরীরে ক্যানসারের কোশ উৎপাদন কম হয়। গবেষণায় দেখা যায়, প্রতি ১০০ গ্রাম গাজরে ৩৩ শতাংশ ভিটামিন ‘এ’, ৯ শতাংশ ভিটামিন ‘সি’ এবং ৫ শতাংশ ভিটামিন ‘বি-৬’ পাওয়া যায়। এগুলো এক হয়ে ফ্রি র্যাডিকেলসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে।
৪। রক্তকে জমাট বাঁধতে বাঁধা দেয়
কোনও কারণে ব্লাড ক্লট বাঁধতে শুরু করলে আপনার শরীরে একের পর এক জটিল রোগ মাথা চাড়া দিয়ে উঠতে পারে। আর সেটা যাতে না হয়, তার জন্য প্রতিদিন গাজরের রস খাওয়া উচিত। কারণ গাজরে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন কে থাকে, যা রক্তকে জমাট বাঁধতে দেয় না।
৫। ত্বকের সৌন্দর্য বাড়ে
শীতকাল মানেই স্কিনের আদ্রতা হারিয়ে যাওয়া, ত্বক রুক্ষ দেখাতে শুরু করে এবং সেই সঙ্গে নানাবিধ ত্বকের রোগ দেখা দেয়। গাজরের মধ্যে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ত্বকের মধ্যে জমে থাকা টক্সিক উপাদা্নকে শরীর থেকে বার করে দেয়। সেই সঙ্গে কোলাজেনের উৎপাদন বাড়িয়ে দেয়। ফলে ত্বক উজ্জ্বল এবং প্রাণবন্ত হয়ে ওঠে।
৬। লিভারের কর্মক্ষমতা বাড়ায়
গবেষকরা বলেন, গাজর লিভারের মধ্যে থাকা বর্জ্য পদার্থদের বের করে দিয়ে শরীরে লিভারের কর্মক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে।
৭। হার্টের স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটে
১০০ গ্রাম গাজরে থাকে প্রতি দিনের চাহিদার প্রায় ৩৩ শাতাংশ ভিটামিন এ, ৯ শতাংশ ভিটামিন সি এবং ৫ শতাংশ বি৬। সেই সঙ্গে থাকে প্রচুর মাত্রায় থাকে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। এই সব উপাদান হার্টের কর্মক্ষমতা বাড়ানোর পাশাপাশি রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ রাখতে এবং খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।
৮।কোলেস্টেরল এবং ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণ করে
কোলেস্টেরল এবং ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে গাজরের জুস ভীষণ ভাবে সাহায্য করে। গাজরের মধ্যে থাকা পটাশিয়ামই এর মূল কারণ। গাজরে ক্যালরি এবং সুগারের উপাদান খুবই কম থাকে। গাজর ডায়াবেটিস প্রতিরোধে সাহায্য করে। গাজর ওজন কমাতে সাহায্য করে।