টোটো দুর্ঘটনায় মানবিক ভূমিকা পালন করলেন ট্রাফিক ডিএসপি সঞ্জয় কুমার

টোটো দুর্ঘটনায় মানবিক ভূমিকা পালন করলেন ট্রাফিক ডিএসপি সঞ্জয় কুমার

Facebook
Twitter
LinkedIn
Email
WhatsApp
Print
Telegram



নদিয়া – নদীয়ার কৃষ্ণনগর ১২ নম্বর জাতীয় সড়কে মঙ্গলবার রাতে ঘটে যায় ভয়াবহ এক দুর্ঘটনা। একটি টোটোকে ধাক্কা মারে একটি চার চাকা গাড়ি। ওই টোটোয় ছিলেন চালকসহ সাতজন যাত্রী। এর মধ্যে তিনজন শিশু। দুর্ঘটনার পর গুরুতর জখম হন সকলে।

সেই সময় ঘটনাস্থল দিয়ে ফিরছিলেন রানাঘাট জেলা পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের ডিএসপি সঞ্জয় কুমার। তিনি মুর্শিদাবাদের জঙ্গিপুর কোর্টে সাক্ষ্য দিয়ে ফিরছিলেন নদিয়ায়। রাত প্রায় নয়টার সময় নজরে আসে দুর্ঘটনাটি।

তৎক্ষণাৎ নিজের গাড়ি থামিয়ে ঘটনাস্থলে নেমে পড়েন তিনি। স্থানীয়দের সহযোগিতায় উদ্ধার করেন টোটোয় থাকা আহতদের। দেরি না করে নিজের সরকারি গাড়িতে তুলেই শক্তিনগর জেলা হাসপাতালে পৌঁছে দেন।

আহতদের মধ্যে ছিলেন কয়েকজন মহিলা ও শিশু। রক্তাক্ত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাঁদের। দ্রুত চিকিৎসার ব্যবস্থা হওয়ায় স্বস্তি পান আহতদের পরিবার। বর্তমানে সকলে শক্তিনগর জেলা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

ঘটনার খবর পেয়ে এলাকায় ভিড় জমান স্থানীয় বাসিন্দারা। তারা দেখেন, পুলিশের উচ্চপদস্থ আধিকারিক নিজেই আহতদের বাঁচাতে উদ্যোগী হয়েছেন। সাধারণ মানুষ এই ভূমিকার প্রশংসায় মুখর হয়ে ওঠেন।

ঘটনার পরই ডিএসপি সঞ্জয় কুমার জানান, পুলিশ কেবল আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করে না, মানুষের বিপদে পাশে দাঁড়ানোও তাদের দায়িত্ব। তাই সময় নষ্ট না করে তিনি নিজেই এগিয়ে এসেছিলেন।

এদিকে দুর্ঘটনার পর পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে ঘাতক গাড়ির চালক। কিন্তু তৎপরতার সঙ্গে সেই গাড়িকেও আটক করে পুলিশ। কোতোয়ালি থানায় নিয়ে যাওয়া হয় তাকে।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, টোটোয় থাকা যাত্রীরা সকলেই কৃষ্ণনগরের বাসিন্দা। তাদের কাজ সেরে বাড়ি ফেরার পথে ঘটে যায় এই দুর্ঘটনা। হঠাৎ সংঘর্ষে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন সকলে।

স্থানীয়রা জানাচ্ছেন, দুর্ঘটনা ঘটার সঙ্গে সঙ্গেই সঞ্জয় কুমার গাড়ি থেকে নেমে পড়েন। তিনি আহতদের তুলে ধরার পাশাপাশি রক্তপাত বন্ধের প্রাথমিক ব্যবস্থা নিতেও সহযোগিতা করেন।

শিশুদের কাঁদতে দেখে নিজেই তাঁদের শান্ত করেন ডিএসপি। দ্রুত হাসপাতালে পৌঁছে চিকিৎসা করানোই ছিল তাঁর প্রথম লক্ষ্য। ফলে সময় নষ্ট হয়নি।

এই ঘটনার ফলে আবারও সামনে এল পুলিশের মানবিক চেহারা। সাধারণ মানুষ বলছেন, সঞ্জয় কুমারের মতো আধিকারিকরা পুলিশের ভাবমূর্তিকে আরও উজ্জ্বল করে তোলেন।

ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়তেই সোশ্যাল মিডিয়াতেও প্রশংসার ঢেউ ওঠে। অনেকে মন্তব্য করেন, পুলিশ যদি এভাবেই মানুষের পাশে থাকে, তবে সমাজ আরও নিরাপদ হয়ে উঠবে।

ডিএসপি সঞ্জয় কুমার অবশ্য বিনয়ী ভাষায় বলেন, “এটা আমার কর্তব্য। বিপদে কাউকে ফেলে যাওয়া যায় না। আমি শুধু দায়িত্ব পালন করেছি।”

এই ঘটনায় দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে রানাঘাট জেলা পুলিশ। সাধারণ মানুষের কাছে তাদের বিশ্বাসযোগ্যতা আরও বাড়ল। দুর্ঘটনার মতো পরিস্থিতিতে পুলিশের এমন তৎপরতা বিরল বলেই মনে করছেন অনেকে।

কৃষ্ণনগরের মানুষজন জানান, দুর্ঘটনার ভয়াবহতা কমে যেতেই দ্রুত চিকিৎসা শুরু হওয়ায় প্রাণহানি ঘটেনি। আর সেই কৃতিত্ব অনেকটাই ডিএসপি সঞ্জয় কুমারের মানবিক ভূমিকার।

RECOMMENDED FOR YOU.....

Scroll to Top