রাজ্য – বাস, অটো বা ট্যাক্সির মতো এবার টোটোর ক্ষেত্রেও রেজিস্ট্রেশন বাধ্যতামূলক করল রাজ্য সরকার। পরিবহণমন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তী শুক্রবার সাংবাদিক সম্মেলনে জানান, আগামী ১৩ অক্টোবর থেকে টোটো রেজিস্ট্রেশনের প্রক্রিয়া শুরু হবে, যা চলবে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত। এই সময়সীমার মধ্যে টোটো রেজিস্ট্রেশন না করালে ৩০ নভেম্বরের পর থেকে বিনা রেজিস্ট্রেশনে কোনও টোটো চালানো যাবে না। রেজিস্ট্রেশনের পর টোটো মালিক বা চালকরা একটি অস্থায়ী এনরোলমেন্ট নম্বর পাবেন, যাতে কিউআর কোড থাকবে এবং সেটি টোটোর গায়ে লাগিয়ে রাখতে হবে।
পরিবহণ দপ্তরের কাছে বর্তমানে রাজ্যে ঠিক কত সংখ্যক টোটো চলছে তার নির্দিষ্ট তথ্য না থাকলেও, অনুমান করা হচ্ছে এই সংখ্যা প্রায় ১৫ লক্ষের কাছাকাছি। ক্রমবর্ধমান এই যানবাহনের কারণে বিভিন্ন এলাকায় যানজট ও নিরাপত্তা সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে। তাই টোটোকে শৃঙ্খলায় আনতেই সরকার নির্দিষ্ট গাইডলাইন জারি করেছে। প্রথম ধাপে জানা হবে, কোন এলাকায় কত টোটো চলছে। পরবর্তীতে প্রতিটি টোটোর নির্দিষ্ট রুট বেঁধে দেওয়া হবে, যা স্থানীয় প্রশাসন, পুরসভা বা পঞ্চায়েতের সঙ্গে আলোচনা করে নির্ধারণ করা হবে।
টোটো রেজিস্ট্রেশনের আবেদন অনলাইনের মাধ্যমে করতে হবে এবং এর জন্য ১০০০ টাকা ফি লাগবে। রেজিস্ট্রেশনের পর ছ’মাস পর্যন্ত আর কোনও টাকা দিতে হবে না, তবে এরপর প্রতি মাসে ১০০ টাকা করে ফি দিতে হবে। আবেদনকারীদের সুবিধার্থে প্রতিটি আরটিও অফিস এবং বাংলা সহায়তা কেন্দ্রে ক্যাম্পের ব্যবস্থা করা হবে। মন্ত্রীর আশ্বাস, এই পদক্ষেপে কারও জীবিকা যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, সেদিকেও নজর রাখা হবে।
সরকারি নির্দেশিকায় জানানো হয়েছে, কোনওভাবেই জাতীয় বা রাজ্য সড়কে টোটো চালানো যাবে না। পাশাপাশি, বিনা অনুমতিতে টোটো তৈরি বা বিক্রির ক্ষেত্রে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। শুধুমাত্র কেন্দ্র স্বীকৃত নয়টি সংস্থার তৈরি ই-রিকশাই ক্রয়যোগ্য বলে জানানো হয়েছে। যারা বর্তমানে অনুমোদনহীন টোটো চালাচ্ছেন, তাঁদের ভবিষ্যতে নতুন অনুমোদিত ই-রিকশা কিনে রেজিস্ট্রেশন করাতে হবে অথবা বিদ্যমান টোটোর কাঠামো সরকার অনুমোদিত মডেলে রূপান্তর করতে হবে।
মন্ত্রী আরও জানিয়েছেন, আগামী দিনে টোটো চালাতে গেলেও নির্দিষ্ট পরীক্ষার মাধ্যমে ড্রাইভিং লাইসেন্স নেওয়া বাধ্যতামূলক করা হবে। প্রশাসনের ধারণা, এই রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া শেষ হলেই রাজ্যে মোট কত টোটো চলছে, তার সঠিক চিত্র স্পষ্ট হয়ে যাবে।
