পূর্ব মেদিনীপুর- ট্রলিব্যাগ শব্দটি শুনলেই সকলের কুমোরটুলি কাণ্ডের কথা মনে পড়ছে। খুনের পর তাতেই মৃতদেহ ভরে গঙ্গায় ফেলতে এসেছিলেন মা-মেয়ে। এবার ট্রলিব্যাগে শিশুকে ভরে অপহরণের চেষ্টা করা হল রাজ্যে! ঘটনাস্থল আর কোথাও নয়, রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর বিধানসভা এলাকা নন্দীগ্রাম।
অভিযুক্ত এক গৃহশিক্ষককে ইতিমধ্যে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।নন্দীগ্রামের গড়চক্রবেড়িয়ার কাঁটাখালি এলাকার বাসিন্দা সঞ্জয় শিমূলকুন্ডু গ্রামে ঘটেছে এই ঘটনা। স্থানীয় সূত্রে খবর, সঞ্জয় পতি নামের ওই যুবক একজনের বাড়ি যেতে পড়াতে। সেই বাড়ির শিশুকে দোলের দিন ট্রলিব্যাগে ভরে অপহরণের চেষ্টা করেছেন তিনি। শিশুটির বাবা-মা ছোট ব্যবসায়ী। তাই বেশিরভাগ সময়ে বাড়িতে থাকেন না। শুক্রবারও ছিলেন না। সেই সুযোগেই শিশুর মুখে কাপড় ঢুকিয়ে তাকে ট্রলিব্যাগে ঢুকিয়ে আটকে দেন সঞ্জয়। তারপর নিঃশব্দে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান।
তবে বেরতে গিয়ে তাকে ছোট বাধার মুখে পড়তে হয়। একটি ৯ বছরের তাকে দেখে ফেলে। তবে তাকে রেয়াত করেননি ওই গৃহশিক্ষক। মেয়েটির মুখ, হাত-পা বেঁধে সেখানেই ফেলে রেখে চলে যান তিনি। তবে অল্প কিছুক্ষণের মধ্যেই মেয়েটির চেঁচামেচিতে পাড়া-প্রতিবেশীরা চলে আসেন। তারপর খোঁজ পড়ে ওই গৃহশিক্ষকের। সবশেষে বিপদ বুঝে ট্রলিব্যাগ রেখেই পালিয়ে যান সঞ্জয়।
পুলিশে খবর দেওয়া হলে তাঁরা ওই ট্রলিব্যাগ উদ্ধার করে নন্দীগ্রাম-২ ব্লকের ঘোলপুকুরিয়া এলাকা থেকে। শিশুটিকে সঙ্গে সঙ্গে স্থানীয় হাসপাতালে পাঠানো হয়। তবে শুক্রবার অভিযুক্তর খোঁজ না পেলেও শনিবার তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে। শুধু সঞ্জয় নন, গ্রেফতার হয়েছেন আরও চারজন। তারাও এই ঘটনায় জড়িত বলে সন্দেহ পুলিশের।
কিন্তু হঠাৎ এমন কাজ কেন করলেন ওই যুবক? পুলিশকে তিনি জানিয়েছেন, শিশুর বাবা তাঁর থেকে ১০ হাজার টাকা ধার নিয়েছিলেন। কিন্তু অনেকবার বলা সত্ত্বেও তা ফেরত দিচ্ছিলেন না। তাই ছেলেকে অপহরণ করে সেই টাকা আদায়ের ভাবনা নিয়েছিলেন তিনি। সঞ্জয়ের এও বক্তব্য, টাকা পেলেই শিশুকে ছেড়ে দিতেন। অন্য কোনও খারাপ উদ্দেশ্য তাঁর ছিল না। আর এই কাজ করতে তাঁকে এক বন্ধু পরামর্শ দিয়েছিলেন বলে জানিয়েছেন ধৃত সঞ্জয়।
