বিদেশ – প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্ক বৃদ্ধি সংক্রান্ত মন্তব্যের জেরে ভারত ও আমেরিকার মধ্যে বাণিজ্যিক উত্তেজনা বৃদ্ধি পেতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। সিএনবিসি-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প অভিযোগ করেন, ভারত ‘যুদ্ধযন্ত্রকে ইন্ধন দিচ্ছে’ এবং ভারতের ‘অশোভন বাণিজ্যিক প্রতিবন্ধকতা’ রয়েছে, যার কারণে শীঘ্রই ভারতীয় পণ্যের উপর উল্লেখযোগ্য হারে শুল্ক আরোপ করা হতে পারে।
এই মন্তব্যে ভারতের কূটনৈতিক এবং অর্থনৈতিক মহলে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। ট্রাম্পের ভারতকে ‘মৃত অর্থনীতি’ এবং ভারতীয়দের ‘ইউক্রেনীয়দের প্রতি উদাসীন’ বলার কারণে, একটি সম্ভাব্য বাণিজ্যচুক্তির আলোচনা জটিল হয়ে পড়েছে বলে সরকারি সূত্রে জানা গেছে।
ভারতের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সম্ভাব্য ক্ষতিগ্রস্ত খাতগুলির জন্য ত্রাণ প্যাকেজ নিয়ে কাজ করছে। এর মধ্যে রত্ন ও গহনা, বস্ত্র এবং ইঞ্জিনিয়ারিং পণ্য উল্লেখযোগ্য। ফেব্রুয়ারির বাজেটে ঘোষিত ₹২২.৫ বিলিয়ন রপ্তানি সহায়তা প্রকল্প দ্রুত কার্যকর করার কথা ভাবা হচ্ছে। পাশাপাশি মার্কিন দুগ্ধজাত পণ্য আমদানির ব্যাপারেও ছাড় দেওয়া নিয়ে আলোচনা চলছে।
২০২৬-এর দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকে ২৫ শতাংশ শুল্ক কার্যকর হলে ভারতের প্রায় ১০ শতাংশ রপ্তানি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে বলে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের একটি অভ্যন্তরীণ রিপোর্টে জানানো হয়েছে। এইচএসবিসি-র অর্থনীতিবিদ প্রাঞ্জুল ভান্ডারির মতে, এই শুল্ক জিডিপি বৃদ্ধির হার ০.৩ শতাংশ কমিয়ে দিতে পারে।
কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশ প্রধানমন্ত্রী মোদীর ‘ট্রাম্পের সঙ্গে ব্যয়বহুল বন্ধুত্ব’ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন এবং বলেছেন, ‘এই বন্ধুত্ব আমাদের মূল্য দিতে হচ্ছে।’ তবে নীতি বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, ভারত পালটা কোনও কড়া ব্যবস্থা না নিয়ে আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার পথেই এগোবে। আপাতত কূটনৈতিক আলোচনার পাশাপাশি রপ্তানি ত্রাণ এবং আমদানির কিছু ক্ষেত্রে ছাড় দেওয়ার কৌশল নিচ্ছে নয়াদিল্লি।
