‘ঠোটকাটা’ তাই কি অভিনেত্রীকে এড়িয়ে গেলেন প্রশাসনিক কর্তারা, জোর গুঞ্জন রাজনৈতিক মহল থেকে সাধারণ মানুষের। ‘ঠোটকাটা’ সবসময় বিতর্কে শীর্ষে থাকেন! তাই কি অভিনেত্রীকে এড়িয়ে যাওয়া? অভিনেত্রী শ্রীলেখা মিত্র মঞ্চে ওঠার আগেই মঞ্চ ছাড়লেন জেলাশাসক ও জেলা পুলিশ সুপার সহ আধিকারিকরা, যা নিয়ে গুঞ্জন শহরে। রবিবার রাতে জলপাইগুড়ির ধূপগুড়ি এসটিএস ক্লাবের শ্যামা পূজার উদ্ধোধন করতে আসেন বাংলা চলচ্চিত্রের অভিনেত্রী শ্রীলেখা মিত্র।
যা নিয়ে গত কয়েকদিন ধরেই জোরদার প্রচার চলছিল। অভিনেত্রীকে দেখতে প্রচুর মানুষ ভিড় জমেছিলো মঞ্চের সামনে। টলিউড অভিনেত্রী শ্রীলেখা মিত্র তখন ক্লাবের অফিস কক্ষে বসে। অনুষ্ঠান মঞ্চ উদ্বোধন করার জন্য মঞ্চে একে একে ডাকা হলো প্রশাসনিক কর্তা ও জনপ্রতিনিধিদের।জলপাইগুড়ির জেলা পরিষদের সভাধিপতি উত্তরা বর্মন, পৌরসভার প্রসাশনিক মন্ডলীর চেয়ারপারসন ভারতী বর্মন, ছিলেন ভাইস-চেয়ারম্যান তথা ক্লাবের কর্মকর্তা রাজেশ কুমার সিং, জলপাইগুড়ি জেলা শাসক মৌমিতা গোদারা বসু, জলপাইগুড়ির পুলিশ সুপার দেবর্ষি দত্ত। প্রথমে প্রদীপ প্রজ্জ্বোলনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের সূচনা করা হয় এরপর ক্লাবের বার্ষিক পত্রিকা ‘অর্জুন’ এর শুভ উদ্বোধন করা হয়।
মঞ্চে প্রশাসনিক কর্তাদের উপস্থিতিতে অভিনেত্রীকে মঞ্চে তোলা হয় নি। সেই সময় ক্লাব ঘরে বসিয়ে রাখা হলো অভিনেত্রীকে।শ্রীলেখা মিত্রকে মঞ্চে ওঠানোর আগে মঞ্চ ছেড়ে বেরিয়ে যান জেলাশাসক এবং পুলিশ সুপার।
এমনকি অনুষ্ঠান মঞ্চে প্রদীপ প্রজ্জ্বোলন এবং স্মারক পত্রিকা উদ্বোধনীতেও ডাকা হলো না অভিনেত্রীকে। যাকে ঘিরে তৈরি হয়েছে বিতর্ক, শুরু হয়েছে গুঞ্জন এমনটাই দাবি বিরোধীদের। সুর জড়িয়েছে বিজেপি সিপিএম। অভিনেত্রীকে নিয়েও রাজনীতি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ তুলেছে বিজেপি।
রবিবার রাতে এই চিত্র দেখা গেল ধূপগুড়ি এসটিএস ক্লাবের মঞ্চে। রবিবার রাতে পূজা উদ্ধোধনের জন্য দেখা গেল মঞ্চে বসে রয়েছেন জেলাশাসক মৌমিতা গোদারা বসু, পুলিশ সুপার দেবর্ষি দত্ত, জেলা পরিষদের সভাধিপতি উত্তরা বর্মন সহ অনেকে। এদিকে হয়ে গেল প্রদীপ প্রজ্জ্বোলন, অতিথি বরণ। প্রতিবছরের মতো এবারও প্রকাশ করা হলো অর্জুন পত্রিকা। সবকিছু হয়ে গেল যখন মঞ্চে, তখন ক্লাব কক্ষে বসে রয়েছেন অভিনেত্রী যে নাকি এদিনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি তাকেই বাদ দিয়ে ক্লাব ঘরে বসিয়ে প্রদীপ প্রজ্জ্বলন, পত্রিকা প্রকাশ ও বক্তব্য রাখার পর মঞ্চ ছাড়লেন জেলাশাসক ও জেলা পুলিশ সুপার। তারপরেই মঞ্চে ডাকা হয় অভিনেত্রী শ্রীলেখা মিত্রকে।
এমনকি শ্রীলেখার মিত্রের সঙ্গে কোথাও দেখা গেলোনা ক্লাবের অন্যতম কর্তা ধূপগুড়ি পৌরসভার ভাইস চেয়ারম্যান তথা তৃণমূলে নেতা রাজেশ কুমার সিং কেও। যদিও এর আগে যতগুলো পুজো হয়েছে। যত অভিনেত্রী এসেছেন, তাদের তদারকি করতে দেখা গিয়েছে ক্লাবের কর্মকর্তা তথা পুরসভার ভাইস-চেয়ারম্যান রাজেশকুমার সিংকে। এমনকি পুজোর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রশাসনিক আধিকারিক জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে নিয়েই অভিনেত্রীরা পুজোর উদ্বোধন করেছেন। তবে এবারই ব্যাতিক্রম হলো বলে দাবি উপস্তিত দর্শকদের।
আরও পড়ুন – বাঁশের কারুকার্যে নজর কারা থিম ধূপগুড়ির ইয়ং অ্যাসোসিয়েশনের
দর্শক এবং রাজনৈতিক মহলের ধারণা যেহেতু গত শনিবার অভিনেত্রী শ্রীলেখা মিত্র হবু শিক্ষকদের আন্দোলন নিয়ে সরকারবিরোধী মন্তব্য করেছিলেন সেই কারণেই হয়তো তাকে এড়িয়ে চললেন প্রশাসনের কর্তারা এমনটাই মনে করছে রাজনৈতিক মহল থেকে সাধারণ মানুষ। যদিও ঘটনা প্রসঙ্গে এসটিএস ক্লাবের অন্যতম কর্ম কর্তা সুশীল বৈদ্যকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, আমাদের আজকের অনুষ্ঠানে জেলাশাসক পুলিশ সুপার ও প্রধান অতিথি শ্রীলেখা মিত্রকে আমরা নিয়ে এসেছি মানুষের বিনোদন দেওয়ার জন্য।
আমরা একটু বসিয়ে রেখেছি। তা ছাড়া অন্য কোন কিছু নয়, আধিকারিকের সময় ছিল না তাই তারা বেরিয়ে গেছেন। এখানে কোনো রাজনীতি বা পক্ষপাতিত্বের কোনো ব্যাপার নেই। এবিষয়ে অভিনেত্রীকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, হয়তো আমি ঠোঁটকাটা, তাই তারা আমার সাথে মঞ্চ শেয়ার করলেন না,পাশাপাশি তিনি জানান, আমি ঘরের ভেতরে ছিলাম। হলেও হয়ে থাকতে পারে বলে অট্টহাসি দিয়ে চলে যান অভিনেত্রী শ্রীলেখা মিত্র।