পশ্চিম মেদিনীপুরে ডাইনি সন্দেহে বৃদ্ধাকে মারধর, গ্রেফতার তিন। এলাকায় চাঞ্চল্য। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার মেদিনীপুর সদর ব্লকের সাতগেড়িয়া গ্রামে শনিবার রাতে ডাইনি সন্দেহে এক বৃদ্ধা কে মারধর করলেন গ্রামের মোড়লরা। মাদু হাঁসদা নামে ওই বৃদ্ধা কে গুরুতর আহত অবস্থায় মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
ওই ঘটনার খবর পেয়ে রবিবার সকালে তাঁকে দেখতে হাসপাতালে আসেন খড়্গপুর গ্রামীণের বিধায়ক দীনেন রায় , তৃণমূলের মেদিনীপুর সদর ব্লকের সভাপতি মুকুল সামন্ত সহ আদিবাসী সংগঠনের নেতারা ।
বছর খানেক আগে মারা গেছেন মাদু হাঁসদার স্বামী। একাই বাড়িতে থাকতেন। মাস খানেক আগে গ্রামে এক জনের জ্বর হয়। হাসপাতালে নিয়ে না গিয়ে হাতুড়ে চিকিৎসক এর কাছে চিকিৎসায়না সারায় গুনীন , জানগুরু ডাকা হয়। জানগুরু বিধান দেন গ্রামে ডাইনি আছে । তার জন্যই নাকি জ্বর সারছে না।
এরপর মাদু হাঁসদা কেই ডাইনি হিসেবে ঘোষণা করা হয়। গ্রামে বিচার বসিয়ে তখন তাঁকে গ্রাম ছেড়ে চলে যেতে বলা হয়।তাঁকে তখন নিজের বাড়িতে আশ্রয় দেন তৃণমূল কংগ্রেসের পঞ্চায়েত সদস্যা সোনালী হাঁসদা ।
১৫ দিন তাঁর কাছে থাকার পর পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়েছে ভেবে তিনি শনিবার দুপুরে গ্রামের বাড়িতে ফিরে যান।এরপর সন্ধ্যায় তাঁর বাড়িতে চড়াও হয় গ্রামের মোড়লরা ।কেন তিনি ফিরে এসেছেন প্রশ্ন তুলে বাঁশ , লাঠি দিয়ে তাঁকে মারা হয়। তিনি মাথায় , বুকে , পিঠে হাতে , পায়ে গুরুতর চোট পান ।
আর ও পড়ুন এবার নেপালে যাওয়ার আমন্ত্রণ পেলেন মমতা, কী করবেন তিনি?
খবর পেয়ে ছুটে আসেন পঞ্চায়েত সদস্যা সোনালী হাঁসদা। তিনি অপর এক পঞ্চায়েত সদস্য মঙ্গল বাস্কের সহযোগিতায় তাঁকে উদ্ধার করে প্রথমে পাঁচখুরি গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি করেন। পরে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে শনিবার রাতেই তাঁকে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজও হাসপাতালে নিয়ে এসে ভর্তি করা হয়।
বিধায়ক দীনেন রায় জানান , তিনি পুলিশকে জানিয়েছেন দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
কোতয়ালী থানার পুলিশ এঘটনায় ৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। যার ফলে ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে।