ডিউটি সামলে, সন্তানদের শিক্ষিত করতে সব্জি বেঁচেন সিভিক ভলেন্টিয়ার

ডিউটি সামলে, সন্তানদের শিক্ষিত করতে সব্জি বেঁচেন সিভিক ভলেন্টিয়ার

Facebook
Twitter
LinkedIn
Email
WhatsApp
Print
Telegram

ডিউটি সামলে, সন্তানদের শিক্ষিত করতে সব্জি বেঁচেন সিভিক ভলেন্টিয়ার। রায়গঞ্জ থানার অন্তর্ভুক্ত শিলিগুড়ি মোড় থেকে বিদ্রোহী মোড় পর্যন্ত এলাকায় আধিকারিকদের নির্দেশ মেনে নিয়মিত ট্র্যাফিক সামলান তিনি। সিভিক ভলেন্টিয়ার হিসেবে সরকারি নির্দেশিকা অনুযায়ী মাসে বেতনও জোটে নির্দিষ্ট সময়ে। তবুও সংসারের বাড়তি চাহিদা পূরন করা অসম্ভব হয়ে পড়ে তার কাছে।

 

তাই সিভিক ভলেন্টিয়ারের দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি রায়গঞ্জ রেল মার্কেটে শাক, আলু, পেঁয়াজ, কাচা সব্জি বিক্রি করছেন রায়গঞ্জ সুভাষগঞ্জের বাসিন্দা প্রশান্ত সরকার। তার থেকে শাক, সবজি নিয়মিত কেনেন উকিলপাড়ার বাসিন্দা তথা পেশায় শিক্ষক কৌশিক মৈত্র। তিনি বলেন, আমি দীর্ঘদিন ধরে এই রেল বাজার থেকে সংসারের প্রয়োজনীয় শাক, সব্জি কিনে থাকি। প্রশান্ত বাবুর থেকে বিভিন্ন সময়ে আলু, পেঁয়াজ, লঙ্কা নিই। উনি সিভিক ভলেন্টিয়ার হিসেবে নিজের সরকারি ডিউটি পালন করে, বাড়তি সময়ে সৎ পথে এই ব্যবসা করছেন জেনে ভীষণ ভালো লাগছে। সরকারি অল্প বেতনে বড় পরিবার চালানো সত্যিই মুশকিল।

 

রায়গঞ্জ রেল বাজারের রাস্তার পাশে রোদ, বৃষ্টি, শীতে সবজি নিয়ে ছোট্ট দোকান চালান প্রশান্ত বাবু। ঘরে বিধবা মা প্রীতিলতা সরকার, স্ত্রী নয়নি সরকার, নবম শ্রেণিতে পাঠরত ছেলে শুভজিৎ সরকার ও তৃতীয় শ্রেনীতে পাঠরত একমাত্র মেয়ে প্রিয়া সরকার। মায়ের ওষুধ, ছেলেমেয়েদের পড়াশোনা করাতে এবং ঘর গৃহস্থালীর কাজে প্রয়োজন প্রচুর অর্থ। মূল্য বৃদ্ধির এই সময়ে পরিবারের প্রয়োজনে, ছেলেমেয়েদের পড়াশোনার বাড়তি খরচ জোগাড় করতে বর্তমান সময়ে হিমশিম খেতে হয় সাধারণ মানুষকে।

আরও পড়ুন – পদ্মা পারের হাওয়ায় উত্তাল গঙ্গা পারের কলকাতা

সেখানে সরকারি ভাতায় সংসার চালানো মুশকিল হয়ে পড়েছে প্রশান্ত বাবুর। সকাল থেকে হাসিমুখে ক্রেতা সামলাতে সামলাতে তিনি বলেন, ২০১৪ সালে সিভিক ভলেন্টিয়ারের চাকুরী পাই। আমার ডিউটি প্রতিদিন গড়ে ৬ ঘন্টা মতন। দুপুর ১২টার পরে আমার ট্র্যাফিক ডিউটি থাকে। তাই ভোরে মোহনবাটি বাজার থেকে পাইকারি দামে শাক, সবজি সংগ্রহ করে নিই। এরপর পসরা সাজিয়ে বসি। কোনোদিন ১৫০, কোনোদিন একটু কম টাকা উপার্জন হয়।

 

এতে অবসর সময় টুকু সঠিকভাবে কাটিয়ে ঘরে পরিবারের জন্য বাড়তি কিছু করতে পারি। প্রশান্ত বাবু জানান, তিনি ছাড়াও এই রেল বাজারে সব্জি বিক্রি করেন সমীর সাহা নামে আরও এক সিভিক ভলেন্টিয়ার। যদিও এদিন তিনি দোকান না বসানোয় তার সাথে কথা বলা সম্ভব হয়নি। এদিকে রেলমার্কেটটি রায়গঞ্জ পৌরসভার যে ১৪ নম্বর ওয়ার্ডে অবস্থিত, সেই ওয়ার্ডের কোঅরডিনেটর অনিরূদ্ধ সাহা বলেন, আমি ঘটনাটা জানি। একজন সরকারি সিভিক ভলেন্টিয়ার যদি তার নির্দিষ্ট ডিউটি সামলে, অবসর সময়ে সৎ পথে থেকে বাড়তি উপার্জন করে, সেটা অবশ্যই ভালো খবর।

RECOMMENDED FOR YOU.....

Scroll to Top