বৃষ্টি কমলেও ডিভিসি ক্রমাগত জল ছাড়ার ফলে বিপর্যস্ত আরামবাগ। ডিভিসি জল ছাড়ায় হুগলীর খানাকুলের পরিস্থিতি আরও অবনতি হয়েছে। খানাকুলের দুটি ব্লকের প্রায় ২৪ গ্রাম পঞ্চায়েতের সব কটিই জলমগ্ন। লক্ষাধিক মানুষ জলবন্দি। অনেকে কিছুটা উঁচু জায়গায় চলে এসেছেন বাড়ি ঘর ছেড়ে। বেশ কয়েকটি গ্রাম পঞ্চায়েত অফিস জলমগ্ন। জল মগ্ন কয়েকটি সরকারি অফিসও। একতলা বাড়ি সবই জলের তলায়। বহু মাটির বাড়ি ভেঙে পড়েছে। এক তলা সমান বাড়ির সমান কার্যত জম জমেছে কোথাও কোথাও।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, এলাকার পানীয় জলের কলগুলিকে খুঁজেও পাওয়া যাচ্ছে না। পানীয় জলের সঙ্কট দেখা দিয়েছে। খানাকুলের পানশিউলি, মাড়োখানা, নতিবপুর, খুনিয়াচক, পলাশপাই, মাকড়ি, চিংড়া, ধান্যঘোড়ি, কাকনান, ঘোড়াদহ, বন্দর, রাজিহাটি, শবল সিংহপুর, বালিপুর, উদনা তাঁতিশাল, পোল, পাতুল, হরিশ্চক, রামচন্দ্রপুর, কুশলী-সহ একাধিক এলাকা এখন জলমগ্ন।
জলস্তর বাড়ছে নদীগুলিরও। বিভিন্ন এলাকায় এনডিআরএফের টিম ঘুরছে। গৃহবন্দিদের তাঁরা উদ্ধার করছেন। রাজ্য সড়কের ওপর দিয়ে বইছে স্রোত। অপেক্ষাকৃত উঁচু রাজ্য সড়কগুলিতে কোথাও কোমর সমান, কোথাও হাঁটু সমান জল। খানাকুলের অবস্থায় চিন্তার ভাঁজ পড়েছে প্রশাসনিক কর্তাদেরও। চিন্তা বাড়াচ্ছে নদীর জলস্তর। ডিভিসি আবারও জল ছাড়লে ভাসবে হুগলির বিস্তীর্ণ এলাকা। পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে খানাকুলের।
আর ও পড়ুন ভবানীপুরে ভোটে জয়লাভ করার পর কী বললেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়
পশ্চিমের জেলাগুলিতে বৃষ্টিপাতের ফলে একদিকে যেমন শিলাবতী ও দারকেশ্বরের জল ক্রমশই বাড়ছে, অন্যদিকে মুন্ডেশ্বরী নদী দিয়ে ডিভিসির জল খানাকুলের পানশিউলিতে রূপনারায়ণে আসছে। ইতিমধ্যেই খানাকুলের আবারও জলের চাপ বাড়ছে। রূপনারায়ণের ভাঙ্গা নদী বাঁধগুলি দিয়ে জল ঢুকছে খানাকুলের বিস্তীর্ণ এলাকায়। ফলে আবারও সাঁড়াশি আক্রমণের মুখে পড়বে খানাকুল।দুর্গাপুর ব্যারাজ থেকে আরও কিছুটা কমানো হল জল ছাড়ার পরিমাণ। শনিবার রাত দশটায় ছাড়া হয়েছে ১,২৬,২০০ কিউসেক জল ।
দুর্গাপুর ব্যারাজ থেকে জল ছাড়ার পরিমাণ আরও কিছুটা কমানো হল। শনিবার সকালে ছাড়া হচ্ছিল ১,৫৫,৪০০ কিউসেক জল। বেলায় আরও কিছুটা কমানো হয় জল ছাড়ার পরিমাণ। ১,৪৬,৪০০ কিউসেক জল ছাড়া হয়। পরে আরও কমানো হয় জল ছাড়ার পরিমাণ।
নতুন করে বৃষ্টি না হওয়ায় দুর্গাপুর ব্যারাজ থেকে দফায় দফায় কমানো হচ্ছে জল ছাড়ার পরিমাণ । শনিবার সন্ধ্যেয় দুর্গাপুর ব্যারাজ থেকে ছাড়া হচ্ছে ১,২৬,২০০ কিউসেক জল । সেচ দফতর সূত্রে জানা গেছে বৃষ্টি না হলে ধীরে ধীরে আরও কমানো হবে জল ছাড়ার পরিমাণ। গত ১২ ঘণ্টায় দক্ষিণবঙ্গে বৃষ্টির প্রকোপ কিছুটা কমেছে। কিন্তু ঝাড়খণ্ডে অতি বৃষ্টির জেরে ডুবতে বসেছে এ রাজ্যের একাধিক জেলা। জলাধারগুলি থেকে ক্রমাগত জল ছাড়ছে ডিভিসি।