কলকাতা – শহর জুড়ে ফের বাড়ছে ডেঙ্গির প্রকোপ। কলকাতা পুরসভার হিসেব অনুযায়ী, চলতি বছরে এখন পর্যন্ত ডেঙ্গিতে আক্রান্তের সংখ্যা ১,০১৭। যা গত বছরের তুলনায় প্রায় ৮৫ জন বেশি। এই বাড়তি সংক্রমণের প্রেক্ষিতে শুক্রবার সাংবাদিক বৈঠকে সচেতনতার বার্তা দিলেন পুরমন্ত্রী ও কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম। তাঁর কথায়, “শতকরা হিসেবে অনেকেই সচেতন হয়েছেন, কিন্তু সকলকে সচেতন হতে হবে। নিজের বাড়ির ছাদ ও আশপাশে জল জমতে দেবেন না, তাহলেই ডেঙ্গিকে দূর করা সম্ভব।”
মেয়র জানান, বিক্ষিপ্ত বৃষ্টির সময় বাড়ির ছাদ, টপ বা জমে থাকা জলেই মশার লার্ভা সবচেয়ে বেশি জন্ম নিচ্ছে। তিনি বলেন, “পুরসভা নিয়মিত ফগিং করছে, কিন্তু নাগরিকদের সহযোগিতা ছাড়া এই যুদ্ধে জয় আসবে না।” সম্প্রতি উত্তর কলকাতায় চার বছরের এক শিশুর মৃত্যু নিয়ে প্রশ্ন উঠলে ফিরহাদ জানান, “এই বিষয়ে আমি কিছু বলতে পারব না, স্বাস্থ্য দফতর থেকে এখনও কোনও রিপোর্ট পাইনি।”
ডেঙ্গির পাশাপাশি শহরের ঝুলন্ত তারের সমস্যাও এদিনের আলোচনায় উঠে আসে। ফিরহাদ বলেন, “কিছু কিছু রাস্তায় আমরা আন্ডারগ্রাউন্ড তারের ব্যবস্থা শুরু করেছি। পাইপ কেনা হয়েছে, সিভিল দফতর কাজ করছে। একবারে গোটা কলকাতা করা সম্ভব নয়, তবে প্রধান রাস্তাগুলিতে কাজ চলছে।”
পুজোর হোর্ডিং নিয়েও কড়া অবস্থান নিয়েছেন মেয়র। তিনি জানান, বিজ্ঞাপনী সংস্থার সুযোগ নেওয়া বন্ধে নিয়ম বদলের ভাবনাচিন্তা চলছে। তাঁর কথায়, “মুখ্যমন্ত্রী ক্লাবগুলোকে সুযোগ দিয়েছেন, কিন্তু এবার নিয়ম বদলাতে হবে। কোন হোর্ডিং কোন ক্লাবের, তা চিহ্নিত করতে হবে।”
এছাড়া শহরের রুফটপ রেস্তোরাঁগুলির নিরাপত্তা খতিয়ে দেখতে দমকল ও পুরসভার যৌথ অভিযানও শুরু হচ্ছে। মেয়র জানান, “তিন মাসের জন্য ৩০ জনকে নোটিস দেওয়া হয়েছে। নিয়ম না মানলে অনুমোদন বাতিল হবে।”
ফুটপাত ইস্যুতেও সরব হন ফিরহাদ হাকিম। বিশেষ করে গ্রেট ইস্টার্ন হোটেলের সামনের ফুটপাতের বিষয়ে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন তিনি।
সব মিলিয়ে, ডেঙ্গি মোকাবিলা থেকে শুরু করে শহরের তার, হোর্ডিং ও রেস্তোরাঁ নিয়ন্ত্রণ — একাধিক নাগরিক ইস্যুতে বার্তা দিলেন কলকাতার মেয়র, আর তার কেন্দ্রে থাকল মূল মন্ত্র— “নাগরিক সচেতনতাই কলকাতাকে বাঁচাবে।”



















